সপ্তম শ্রেণীর বাংলা ব্যাকরণ
নানারকম শব্দ
ব্যাকরনের প্রশ্ন ও উত্তর
১) শব্দ কাকে বলে ?
উঃ কতগুলো বর্ণ বা বর্ণ সমষ্টি পাশাপাশি বসে যদি একটি নির্দিষ্ট অর্থ প্রকাশ করে তাকে শব্দ বলে। যেমন- বাড়ি ,পাখি, গায়ক ইত্যাদি ।
২) পদ কাকে বলে?
উঃ বাক্যে ব্যবহৃত বিভক্তিযুক্ত শব্দকে পদ বলে ।
৩) যৌগিক শব্দ কাকে বলে?
উঃ যে শব্দের অর্থ প্রকৃতি প্রত্যয়ের সম্মিলিত অর্থ থেকেই পাওয়া যায় তাকে যৌগিক শব্দ বলে। যেমন - গায়ক, পঙ্কজ, স্মরণীয় ইত্যাদি।
৪) রূঢ় শব্দ কাকে বলে ?
উঃ যে শব্দের প্রচলিত অর্থের সঙ্গে ব্যুৎপত্তিগত অর্থ বা প্রকৃতি প্রত্যয়জাত অর্থের কোন সম্পর্ক থাকে না তাকে রূঢ় শব্দ বলে। যেমন - হরিণ, মন্ডপ, প্রবীণ ইত্যাদি।
৫) যোগরূঢ় শব্দ কাকে বলে ?
উঃ যে শব্দের প্রচলিত অর্থের সঙ্গে ব্যুৎপত্তিগত অর্থ থাকলেও অন্য অর্থগুলির থেকে একটি অর্থই বিশেষ হয়ে যায় তাকে যোগরূঢ় শব্দ বলে। যেমন পঙ্কজ, বাঁশি ইত্যাদি ।
৬) অর্থগতভাবে শব্দকে কয় ভাগে ভাগ করা যায় কি কি?
উঃ তিন ভাগে ভাগ করা যায়, ক)যৌগিক শব্দ খ) রুঢ় শব্দ গ) যোগরূঢ় শব্দ
৭) গঠনগতভাবে শব্দকে কয় ভাগে ভাগ করা যায় কি কি?
উঃ দুই ভাগে ভাগ করা যায়,ক) মৌলিক শব্দ এবং খ) সাধিত শব্দ
শব্দদ্বৈত ও ধ্বন্যাত্মক শব্দ
১) শব্দদ্বৈত কাকে বলে?
উঃ একটি বিশেষ শব্দের দুবার ব্যবহারের মধ্য দিয়ে অর্থের এবং ভাবের বৈচিত্র সৃষ্টি হলে শব্দের এই প্রয়োগকে শব্দদ্বৈত বলে। যেমন - ঘন্টায় ঘন্টায় ওষুধ খেতে হয়।
২) ধন্যাত্মক শব্দ কাকে বলে?
উঃ যেসব শব্দের মাধ্যমে কোন বাস্তব ধ্বনি বা কোন অনুভূতিগ্রাহ্য অবস্থার দ্যোতনা ফুটে ওঠে তাকে ধন্যাত্মক শব্দ বলে ।যেমন - ঢং ঢং করে ঘন্টা বাজছে।
৩) ধন্যাত্মক শব্দকে কয় ভাগে ভাগ করা যায় কি কি?
উঃ দুই ভাগে ভাগ করা যায়,ক) ধ্বনি প্রকাশক ধন্যাত্মক শব্দ এবং খ) ভাব প্রকাশক ধন্যাত্মক শব্দ।
৪) নিচের বাক্যগুলি কোন অর্থে শব্দদ্বৈত প্রকাশ করেছে তা লেখ ।
৪.১) ঘন্টায় ঘন্টায় ওষুধ খেতে হয়।
উঃ নিয়মিত অর্থে
৪.২) মিনিটে মিনিটে গোল দিল জার্মানি ।
উঃ দ্রুত অর্থে
৪.৩) লাখ লাখ টাকা খরচ হয়ে গেল।
উঃ বহুলতা বোঝাতে
৪.৪) আকাশের টুকরো টুকরো মেঘ ছড়িয়েছে।
উঃ বহুলতা অর্থে
৪.৫) গলায় গলায় ভাব।
উঃ গভীরতা অর্থে
৪.৬) হাতে হাতে কাজটা এগিয়ে দাও
উঃ সাহায্য অর্থে
৪.৭) বাচ্চারা চোর চোর খেলছে।
উঃ অনুকরণ অর্থে
৪.৮) বাড়িটার অবস্থা পড়ো পড়ো।
উঃ আসন্ন অর্থে
৪.৯) তখন থেকে যাই যাই করছো ।
উঃ আসন্ন অর্থে
৪.১০) এখানকার বাড়িঘর দেখলে মনে হয় পাড়াটা প্রাচীন ।
উঃ সমার্থক শব্দদ্বৈত
৪.১১) মাঠে ময়দানে এখন শুধুই বিশ্বকাপ ফুটবলের আমেজ ।
উঃ সমার্থক শব্দদ্বৈত
৪.১২) জীবনটা হেসে খেলে কেটে গেল।
উঃ প্রায় সমার্থক শব্দদ্বৈত
৪.১৩) আজ রাতে খাওয়ায় ভালো মন্দ জুটবে মনে হচ্ছে।
উঃ বিপরীতার্থক শব্দদ্বৈত
৪.১৪) তোর সঙ্গে তো বিখ্যাত লোকেদের আলাপ সালাপ আছে।
উঃ অনুকার শব্দদ্বৈত
৫) নিচের বাক্যগুলিতে শব্দদ্বৈত গুলির প্রয়োগ বৈশিষ্ট্য দেখাও।
৫.১) আজ মুখোমুখি যুদ্ধ।
উঃ শীঘ্র অর্থে শব্দদ্বৈত
৫.২) ঠেলাঠেলির মধ্যে না যাওয়াই ভালো।
উঃ বহুলতা অর্থে শব্দদ্বৈত
৫.৩) চা- টা খেয়েই বেরিয়ে পড়তে হবে।
উঃ অনুকার শব্দদ্বৈত
৫.৪) ধরো ধরো পড়ে যাবে যে।
উঃ দ্রুত অর্থে শব্দদ্বৈত
৫.৫) শীত যায় যায় এমন সময়ের ঘটনা।
উঃ আসন্ন অর্থে শব্দদ্বৈত
৫.৬) দেখতে দেখতে বিকেল হয়ে এলো।
উঃ আসন্ন অর্থে শব্দদ্বৈত
৫.৭) মুখে মুখে ছড়াটা শিখে নিয়েছে।
উঃ বহুলতা অর্থে শব্দদ্বৈত
৫.৮) কেঁদে কেঁদে আর ঘুরে বেড়িও না।
উঃ নিয়মিত অর্থে শব্দদ্বৈত
৫.৯) টাকা টাকা করেই জীবনটা কাটালো
উঃ বহুলতা অর্থে শব্দদ্বৈত
৫.১০) বাগানে এখন রাশি রাশি ফুল।
উঃ বহুলতা অর্থে শব্দদ্বৈত
৫.১১) এসো তোমার কথাই হচ্ছিল ।
উঃ দ্রুত অর্থে শব্দদ্বৈত
৫.১২ চলাফেরা দিন দিন কষ্টকর হয়ে উঠেছে।
উঃ নিয়মিত অর্থে শব্দদ্বৈত
৬) নিচের বাক্যগুলিতে ধন্যাত্মক শব্দের প্রয়োগ বৈশিষ্ট্য নির্দেশ কর ।
৬.১) তার পরনে সেদিন ধবধবে সাদা কাপড়।
উঃ ভাবপ্রকাশক ধনাত্মক শব্দ
৬.২) আমি একদম পছন্দ করি না।
উঃ ভাবপ্রকাশক ধনাত্মক শব্দ
৬.৩) ঘড়ঘড় শব্দটা হয়েই চলেছে।
উঃ ধ্বনি প্রকাশক ধনাত্মক শব্দ
৬.৪) শুধু অন্ন বস্ত্রের কথা ভাবলে চলে না।
উঃ ভাবপ্রকাশক ধন্যাত্মক শব্দ
৬.৫) ঘুটঘুটে অন্ধকারে একলা হেঁটে চলেছি।
উঃ ভাবপ্রকাশক ধন্যাত্মক শব্দ
৬.৬) ঝমঝম করে বৃষ্টি এলো।
উঃ ধ্বনি প্রকাশক ধন্যাত্মক শব্দ
৬.৭) তরতর করে নৌকো এগিয়ে চলল ।
উঃ ধ্বনি প্রকাশক ধন্যাত্মক শব্দ
৮.৮) চারিদিক জলে থই থই করছে।
উঃ ভাবপ্রকাশক ধনাত্মক শব্দ
৮.৯) দেখে গা রি রি করে জ্বলে উঠলো
উঃ ভাবপ্রকাশক ধন্যাত্মক শব্দ
৮.১০) তারারা আকাশে জ্বলজ্বল করছে।
উঃ ভাবপ্রকাশক ধনাত্মক শব্দ।
৯) কিছু ধনাত্মক শব্দের উদাহরণ দাও।
ক) বৃষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর ।
খ) সবাই হো হো করে হাসছে ।
গ) দুম করে একটা শব্দ হলো ।
ঘ) ঝিরঝির করে বাতাস বইছে ।
ঙ) রাতে দরজায় কে যেন খটখট করে শব্দ করল।
চ) টুংটাং করে পিয়ানো বাজছে।
১০) ভাবপ্রকাশক ধনাত্মক শব্দের কিছু উদাহরণ দাও।
ক) আচমকা তোমার ছায়া দেখে বুকটা ধড়াস করে উঠলো।
খ) মাথাটা কেমন ঝিমঝিম করছে।
গ) রসগোল্লার রস লেগে হাতটা চটচট করছে।
ঘ) অত বড়ো মাঠটা খাঁ খাঁ করছে।
Comments
Post a Comment
Haven't doubt please let me know.