উত্তর আমেরিকা অষ্টম শ্রেণী
উত্তর আমেরিকা
অষ্টম শ্রেণী
প্রশ্ন ও উত্তর সম্পর্কে বিশদ বিবরণ।
১) পৃথিবীর বিখ্যাত গিরিখাত এর নাম কি ?
উঃ গ্রান্ড ক্যানিয়ন
২) পৃথিবীর বিখ্যাত জলপ্রপাতের নাম কি ?
উঃ নায়াগ্রা জলপ্রপাত
৩) পৃথিবীর বৃহত্তম সুপেয় জলের হ্রদের নাম কি ?
উঃ সুপিরিয়র
৪) পৃথিবীর বৃহত্তম ব-দ্বীপের নাম কি ?
উঃ গ্রিনল্যান্ড
৫) পৃথিবীর ব্যস্ততম বিমানবন্দরের নাম কি ?
উঃ আটলান্টা
৬) পৃথিবীর তৃতীয় বৃহত্তম মহাদেশটির নাম কি ?
উঃ উত্তর আমেরিকা
৭) উত্তর আমেরিকা মহাদেশটি কে কবে আবিষ্কার করেন ?
উঃ ১৫০১ খ্রিঃ আমেরিকাগো ভেসপুচি নামে এক পর্তুগিজ নাবিক।
৮) উত্তর আমেরিকা মহাদেশ এশিয়া মহাদেশ থেকে কি দ্বারা পৃথক করে রেখেছে ?
উঃ বেরিং প্রণালী
৯) উত্তর আমেরিকা মহাদেশ কি দ্বারা দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশ থেকে পৃথক হয়েছে ?
উঃ পানামা খাল
১০) উত্তর আমেরিকা মহাদেশের প্রধান নদীর নাম কি?
উঃ মিসিসিপি মিসৌরি
১১) উত্তর আমেরিকা মহাদেশের উচ্চতম শৃঙ্গের নাম কি ?
উঃ ম্যাককিনলে
১২) উত্তর আমেরিকা মহাদেশের কয়েকটি বিখ্যাত শহরের নাম লেখ।
উঃ নিউ ইয়র্ক, শিকাগো, ওয়াশিংটন ডিসি
১৩) যোজক কী ?
উঃ দুটি মহাদেশকে একসঙ্গে যুক্ত করে যে সংকীর্ণ ভূখণ্ড তা হল যোজক। ১৯১৪ সালে পানামা যোজক থেকে কেটে পানামা খাল তৈরি করা হয়।।
১৪) কর্ডিলেরা শব্দের অর্থ কি?
উঃ শৃংখল
১৫) মৃত্যু উপত্যকা বলতে কী বোঝো ?
উঃ উত্তর আমেরিকার পশ্চিমের পার্বত্য অঞ্চলের ক্যালিফর্নিয়ার দক্ষিণ-পূর্ব অংশের উপত্যকা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৯০ মিটার নিচু। তাই এই অঞ্চলে প্রাপ্ত সামান্য জলের লবনতা এত বেশি যে, এখানে কোনো জীব বেঁচে থাকতে পারে না। তাই এই গভীর উপত্যকা মৃত্যু উপত্যকা নামে পরিচিত।
১৬) পঞ্চহ্রদ কি ?
উঃ হিমবাহের ক্ষয়কার্যের ফলে উত্তর আমেরিকা মহাদেশে পাঁচটি বৃহৎ হ্রদের সৃষ্টি হয়েছে। যেমন- সুপিরিয়র, মিচিগান ,হূরন , ইরি ও অন্টারিও। এই পাঁচটি হ্রদকে একত্রে পঞ্চহ্রদ বলা হয়।
১৭) ভূমিরূপের বৈচিত্র অনুসারে উত্তর আমেরিকা মহাদেশের সমভূমি অঞ্চলকে কয়টি ভাগে ভাগ করা যায় কি কি ?
উঃ ভূমিরূপের বৈচিত্র অনুসারে উত্তর আমেরিকার বিশাল সমভূমি অঞ্চলকে চারটি ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন -
ক) সেন্ট লরেন্স নদীর অববাহিকার সমভূমি,
খ) হ্রদ অঞ্চলের সমভূমি,
গ) প্রেইরি সমভূমি
ঘ) মিসিসিপি মিসৌরির অববাহিকার সমভূমি।
১৮) মিসিসিপি মিসৌরীর ব-দ্বীপ কিসের মত দেখতে ?
উঃ পাখির পায়ের মতো
১৯) ভূ প্রকৃতির তারতম্য অনুসারে উত্তর আমেরিকা মহাদেশকে কয় ভাগে ভাগ করা যায় ও কি কি? যে কোন একটি ভাগের বর্ণনা দাও।
উঃ ভূ প্রকৃতির তারতম্যের ভিত্তিতে উত্তর আমেরিকা মহাদেশকে তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-১) পশ্চিমের পার্বত্য অঞ্চল ২) মধ্যভাগের সমভূমি অঞ্চল এবং ৩) পূর্ব দিকের উচ্চভূমি।
পশ্চিমের পার্বত্য অঞ্চলঃ
এই অঞ্চলটি উত্তর আমেরিকা মহাদেশের পশ্চিম প্রান্তে প্রশান্ত মহাসাগরের উপকূল বরাবর উত্তরে বেরিং প্রণালী থেকে শুরু করে দক্ষিণে পানামা খাল পর্যন্ত বিস্তৃত। এই পার্বত্য অঞ্চলটি হিমালয় পার্বত্য অঞ্চলের মতোই নবীন ভঙ্গিল পর্বত। প্রশান্ত মহাসাগরীয় পাত এবং উত্তর আমেরিকা মহাদেশীয় পাতের অভিসারী সীমানা বরাবর সংঘর্ষের ফলে এই নবীন ভঙ্গিল পর্বতের সৃষ্টি হয়েছে। এখানকার প্রধান প্রধান পর্বতশ্রেণী গুলি হল আলাস্কারেঞ্জ, কোস্ট রেঞ্জ, ব্রুকস রেঞ্জ। এর মধ্যে আলাস্কা রেঞ্জের মাউন্ট ম্যানকিনলে এই পার্বত্য অঞ্চলের উচ্চতম শৃঙ্গ। এখানে যে সমস্ত নদীগুলি প্রবাহিত হয়েছে সেগুলি হল, ইউকোন, কলরাডো, কলম্বিয়া ইত্যাদি।এই নদীগুলি গিরিখাত সৃষ্টি করে পশ্চিম দিকে প্রবাহিত হয়ে প্রশান্ত মহাসাগরে মিলিত হয়েছে।
২০) পঞ্চ হ্রদ বলতে কী বোঝো ?
উঃ উত্তর আমেরিকা মহাদেশের মধ্যভাগের সমভূমি অঞ্চলে অবস্থিত সুপিরিয়র, মিচিগান, হুরন, ইরি ও অন্টারিও এই পাঁচটি হ্রদকে একত্রে পঞ্চহ্রদ বলা হয়।
২১) ভূমিরূপের বৈচিত্র অনুসারে উত্তর আমেরিকা মহাদেশের মধ্যভাগের সমভূমি অঞ্চল কে কয়টি ভাগে ভাগ করা যায় কি কি?
উঃ ভূমিরূপের বৈচিত্র অনুসারে মধ্যভাগের সমভূমি অঞ্চলকে চারটি ভাগে ভাগ করা যায়। যথা - ১) সেন্ট লরেন্স নদীর অববাহিকার সমভূমি ২) হ্রদ অঞ্চলের সমভূমি ৩) প্রেইরী সমভূমি ও ৪) মিসিসিপি মিসৌরী অববাহিকার সমভূমি।
২২) উত্তর আমেরিকা মহাদেশের প্রধান নদ নদী গুলির পরিচয় দাও।
উঃ উত্তর আমেরিকার প্রধান নদনদী গুলি হল- সেন্ট লরেন্স, মিসিসিপি মিসৌরি, কলরাডো, ম্যাকেনজি, কলম্বিয়া ইত্যাদি।
সেন্ট লরেন্সঃ
এই নদীর দৈর্ঘ্য ১১২০ কিলোমিটার। নদীটি অন্টারিও হ্রদ থেকে উৎপত্তি লাভ করে আটলান্টিক মহাসাগরে মিলিত হয়েছে। এই নদীর দুটি উপনদী হল আটোয়া এবং সেন্ট মুরশি। নায়াগ্রা জলপ্রপাত এই নদীর উপরেই সৃষ্টি হয়েছে।
মিসিসিপি মিসৌরিঃ
এই নদীটি সুপেরিয়র হ্রদের পশ্চিমের পর্বত থেকে উৎপত্তি লাভ করেছে। ইহা মেক্সিকো উপসাগরে মিলিত হয়েছে। এর কয়েকটি উপনদী হল মিসৌরি, আরকানসাস, রেড ইত্যাদি। এই নদীটি উত্তর আমেরিকার দীর্ঘতম নদী।
কলোরাডোঃ
এই নদীটির দৈর্ঘ্য ২৩০০ কিলোমিটার। ইহা রকি পার্বত্য অঞ্চল থেকে উৎপত্তি লাভ করে ক্যালিফর্নিয়া উপসাগরে মিশেছে।এই নদীর উপরেই সেচ ও জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য বাঁধ ও জলধারা নির্মাণ করা হয়েছে। গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন এই নদীর অববাহিকায় দেখা যায়।
২৩) উত্তর আমেরিকা মহাদেশের জলবায়ুর বৈচিত্রের কারণগুলি লেখ।
উঃ উত্তর আমেরিকা মহাদেশের জলবায়ুর বৈচিত্রের কারণ হলো- অক্ষাংশগত অবস্থান, সমুদ্রস্রোত, বায়ুপ্রবাহ, পর্বতের অবস্থান, অক্ষাংশ গত অবস্থান।
অক্ষাংশগত অবস্থান ঃঃ
উত্তর আমেরিকার বেশিরভাগ অংশ ৩০ ডিগ্রি থেকে ৬০ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশের মধ্যে অবস্থিত। তাই মহাদেশটির অধিকাংশই স্থান নাতিশীতোষ্ণ জলবায়ুর অন্তর্গত। দক্ষিণে মেক্সিকোর উপর দিয়ে কর্কটক্রান্তি রেখা বিস্তৃত হওয়ায় মেক্সিকো মধ্য আমেরিকা ও ক্যারাবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের বিভিন্ন স্থানে ক্রান্তীয় জলবায়ু বিরাজ করেছে।
সমুদ্র স্রোতঃ
উত্তর আমেরিকা মহাদেশে শীতল ল্যাব্রাডর স্রোতের প্রভাবে এর উত্তর-পূর্ব উপকূল ভাগ বছরের বেশিরভাগ সময় বরফ দিয়ে ঢাকা থাকে। আবার শীতল ক্যালিফোর্নিয়া স্রোতের প্রভাবে মহাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে ক্যালিফোর্নিয়া উপকূল ভাগ বেশ ঠান্ডা থাকে। মহাদেশের দক্ষিণ পূর্বে প্রবাহিত উষ্ণ উপসাগরীয় স্রোতের প্রভাবে এই অঞ্চলের উপকূল ভাগের জলবায়ু উষ্ণ থাকে।
বায়ু প্রবাহঃ
বসন্তের শুরুতে রকি পর্বতের পূর্ব ঢাল বরাবর চিনুক নামে এক উষ্ণ স্থানীয় বায়ু প্রবাহিত হয়। এই বায়ুর জলীয় বাষ্প ধারণের ক্ষমতা বেড়ে যাওয়ায় ওই অঞ্চলের বৃষ্টিপাত কম হয়। পর্বতের অবস্থান উত্তর আমেরিকা মহাদেশের পূর্ব দিকে এপারেশিয়ান পর্ব ত অঞ্চল এবং পশ্চিম দিকে উত্তর দক্ষিনে বিস্তৃত হওয়ায় মধ্যভাগে সমুদ্রের প্রভাব খুব কম হয়। এছাড়া মহাদেশের উত্তর দিক থেকে হিম শীতল মেরুবায়ু প্রবেশ করে বিনা বাধায় বহুদূর পর্যন্ত প্রবাহিত হয়।
এইসব কারণের জন্যই উত্তর আমেরিকা মহাদেশে জলবায়ুর বৈচিত্র লক্ষ্য করা যায়।
Comments
Post a Comment
Haven't doubt please let me know.