ছোটদের পথের পাঁচালী অষ্টম শ্রেণী

   দ্বিতীয় পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়ন

               ছোটদের পথের পাঁচালী 

            বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় 

নবম থেকে অষ্টাদশ পরিচ্ছেদ 


কয়েকটি বাক্যে উত্তর দাও 

১) অপুর প্রথম গ্রামের বাইরে যাওয়ার অভিজ্ঞতা নিজের ভাষায় লেখ। মান- ৩ 

উঃ হরিহর শিষ্যর বাড়ি যাওয়ার সময় অপুকে সঙ্গে নিয়ে যান। সেটাই অপুর জীবনের প্রথম গ্রামের বাইরে যাওয়া। নানা উৎসাহ উদ্দীপনায় অপু ছটফট করতে থাকে। জীবনে সে কখনো রেললাইন দেখেনি। এবার সেই রেললাইন দেখে অপু বিস্মিত হয়ে বাবাকে বারবার প্রশ্ন করতে থাকে। নতুন জায়গায় গিয়ে অপুর সঙ্গে বিভিন্ন মানুষের আলাপ হয়। তাদের আদর ও যত্নে অপুর শিশু হৃদয় ভালোলাগায় পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে। সেখানে এক রাতে অপু নিমন্ত্রণ খেতে গেলে বিভিন্ন সুখাদ্যের স্বাদ ও গন্ধে তার নিজের দিদির কথা মনে পড়ে। অপু জীবনে প্রথম গরিব ও বড়লোকের তফাৎ বুঝতে শেখে। 

২) দুর্গা ও অপুর দোকান তৈরির উপকরণ কি ছিল ?

উঃ দুর্গা ও অপু প্রথমে ইট দিয়ে একটা দোকান ঘর বেঁধে উপকরন জোগাড় করে । দুর্গা বনজঙ্গলের উৎপন্ন দ্রব্যের খবর বেশি রাখত। তাই দুজনে মিলে নোনা পাতার পান, মেটে আলু ফলের আলু, রাধালতা ফুলের মাছ, তেলাকুচার পটল, চিচ্চিরের বরবটি, মাটির ঢেলার সৈন্ধব লবণ আরও অনেক বস্তু সংগ্রহ করে এনেছিল।                     তাছাড়া বাঁশতলার উঁচু ঢিবি থেকে সাদা বালি এনেছিল চিনির জন্য। এরপর তারা পথের ধারে বনের বড় বড় লতার ঘন সবুজ আড়ালে টুকটুকে রাঙা বড় বড় সুগোল মাকাল ফল পেড়ে এনেছিল।

৩) অপু অমলাদের বাড়িতে কি কি খেলনা দেখেছিল তার বর্ণনা দাও?

উঃ

৪) অপুর-কড়ি খেলতে যাওয়া ঘটনা বর্ণনা কর।

উঃ একদিন অপু জেলেপাড়ায় কড়ি খেলতে গিয়েছিল। জেলে পাড়ার ছেলেরা ছিল খুব উগ্র স্বভাবের। কেউ জিতলে তারা সেখান থেকে কড়ি নিয়ে বাড়ি ফিরতে দেয় না। ব্রাহ্মণ পাড়ার ছেলে পটুকে তাদের হাতে মার খেতে দেখে অপু প্রতিবাদ করে। তাই সে নিজেও মার খায়। তারপর সে সেখান থেকে বিষন্ন মনে বাড়ি ফিরে আসে।

৫) শূন্যে ওড়ার ক্ষমতা অর্জনের জন্য অপু কি করেছিল ?

উঃ একদিন কৌতুহলী বালক অপু দুপুরবেলা ঘরের দরজা বন্ধ করে "সর্ব দর্শন সংগ্রহ" নামের বইটি লুকিয়ে পড়তে থাকে। বইটি পড়ে সে জানতে পারে শকুনের ডিমের মধ্যে পারদ পুরে কয়েকদিন রোদে রেখে সেই ডিম মুখের ভিতর পুড়ে মানুষ ইচ্ছা করলে উড়তে পারে। তখন অপুর শূন্যে উড়তে ইচ্ছা হয়। সতু, নিলু, কালু, পটল ও দিদি দুর্গার কাছে শকুনের বাসার খোঁজ করেও সে কোন সন্ধান পায় না। অনেক খোঁজাখুঁজির পর হিরু নাপিতের কাঁঠালতলার এক রাখাল অপুকে শকুনের ডিমের খোঁজ দেয়। অপু শকুনের ডিম পাওয়ার জন্য এতই ব্যাকুল হয়ে ওঠে যে,কড়ি ও দুটো পয়সার বিনিময়ে শকুনের ডিম সংগ্রহ করতে রাজি হয়। 

৬) দুর্গা ও অপুর চড়ুইভাতের বর্ণনা দাও।

উঃ একদিন অপু ও দুর্গা, নীলমণি রায়ের জঙ্গলে ভরা ভিটের একধার পরিষ্কার করে সত্তিকারের চড়ুইভাতির আয়োজন করে। তাদের আয়োজন ছিল খুবই সামান্য। বাড়ি থেকে চুরি করে আনা তেল, চাল, বনের মেটে আলু ইত্যাদি ছিল তাদের ভোজনের উপকরণ। অপু মহাউৎসাহে দিদির সঙ্গে কাজে লেগে যায়। তাদের সঙ্গী ছিল পাশের পাড়ার দরিদ্র ব্রাহ্মণ কালিনাথ চক্রবর্তীর মেয়ে বিনি। তাদের উপকরণের মধ্যে লবণ আনতে ভুলে গিয়েছিল তবুও সত্যিকারের ভাত, মেটে আলু ভাতে, বেগুন ভাজা দিয়ে চড়ুইভাতির আনন্দে লবণের অভাব বোধ হয় না।

৭) দুর্গাকে কে চোর অপবাদ দিয়েছিল ?

উঃ ভুবন মুখুজ্জ্যের বাড়িতে রানু দিদির বিয়ে শেষ হলে সেখানে টুনির মায়ের সোনার সিঁদুরকৌটো চুরি হয়ে গেলে সেজোঠাকুরন দুর্গাকে সন্দেহ করেছিলেন। সরাসরি তিনি দুর্গাকে সিঁদুরকৌটো ফেরত দিতে বলেন ও অপমান করতে থাকেন।

৮) "বাঁকা কঞ্চি অপুর জীবনে এক অদ্ভুত জিনিস"-উক্তিটির তাৎপর্য লেখ।

উঃ বাঁকা কঞ্চি পেলে অপু সারাদিন বাঁশ বাগানের পথে, নদীর ধারে ঘুরে বেড়ায়। বাঁকা কঞ্চি হাতে কখনো সে হয়ে ওঠে দোকানী, কখনো সেনাপতি, কখনো রাজপুত্র। আবার কখনো সে নিজেকে মহাভারতের অর্জুন বলে মনে করে। সেসব কল্পনা করে সে অপমানে বিড়বিড় করে বেড়ায়। কঞ্চি হালকা ও বাঁকা হলেই তার এই আনন্দপূর্ণ হয়। তাকে এরকম আপন মনে বকবক করতে দেখলে অন্যরা পাগল ভাববে বলে কঞ্চি নিয়ে অপু মানুষজন থেকে আড়ালে, নদীর ধারে, বাঁশবনে, তেতুল তলায় ঘুরে বেড়ায়। এইভাবেই বাঁকা কঞ্চির সাথে কল্পনা প্রবণ অপুর এক গভীর সম্পর্ক করে উঠেছিল। 


Comments

Popular posts from this blog

কর্ভাস (Carvas)প্রফেসর শঙ্কুর ডায়রি

বায়ুমণ্ডলের উষ্ণতা তারতম্যের কারণগুলি আলোচনা কর।

আদর্শ ফুলের গঠন চিত্র ( দশম শ্রেণী)