বাংলা একাদশ শ্রেণীর( bengali class eleven)
নীলধ্বজের প্রতি জনা
মাইকেল মধুসূদন দত্ত
Short questions......
মান - ১
(১)পার্থ খান্ডব দহনে সফল হয়েছিল কেন?
উঃ কৃষ্ণ পার্থ কে খান্ডব দহনে সাহায্য করেছিল বলে।
(২)"তনয় তার জারজ অর্জুনে"- অর্জুনকে জারজ বলা হয়েছে কেন ?
উঃ জারজ শব্দের অর্থ যার জন্মের ঠিক নেই। কুন্তির প্রকৃত স্বামী হলো পান্ডুর। তিনি সন্তান উৎপাদনে অক্ষম ছিলেন। ইন্দ্রের ঔরসে অর্জুনের জন্ম হয়েছিল বলে অর্জুনকে জারজ বলা হয়েছে।
(৩)নীলধ্বজের প্রতি জনার সঙ্গে মহাভারতের কোন পর্বের সম্পর্ক আছে?
উঃ অশ্বমেধ পর্ব।
(৪)"ক্ষত্রিয় ধর্ম এই কী নৃমনি- কে কোন প্রসঙ্গে এ কথা বলেছেন ?
উঃ অর্জুনের হাতে নিলধজের পুত্র প্রবীরের মৃত্যু হয়েছে জেনেও নীলধ্বজ পুত্র হন্তার সঙ্গে মিত্রতা করছে। এই প্রসঙ্গে জনা আলোচ্য কথাটি বলেছেন।
(৫)চন্ডালের পদধূলি বলতে কার কথা বলা হয়েছে?
উঃ চন্ডাল শব্দের অর্থ নিম্ন শ্রেণীর হিন্দু সম্প্রদায় এখানে চন্ডাল বলতে অর্জুনের কথা বলা হয়েছে।
(৬)"কৌরব সরসে নলিনী"- কার কথা বলা হয়েছে ?
উঃ দ্রৌপদী কে। এর অর্থ হল কুরু বংশজাত পাণ্ডবদের কাছে দ্রৌপদী পদ্মফুল স্বরূপ।
(৭)"কুলটা যে নারী"- কুলটা কে ?
উঃ কুলটা শব্দের অর্থ বংশত্যাগিনী। এখানে উল্টা বলতে কুন্তিকে বোঝানো হয়েছে।
(৮)ভোজ বালা কুন্তিকে স্বৈরিনি বলা হয়েছে কেন ?
উঃ স্বৈরিনি শব্দের অর্থ অসতি। অর্থাৎ স্বামী থাকা সত্ত্বেও অন্য পুরুষে যিনি আসক্ত। কুন্তি বহু পুরুষের সন্তান গর্ভে ধারণ করেছিলেন বলে তাকে স্বৈরিনি বলেছেন।
(৯)"রাজ দলে তেই সে জিতল"- কারণ কি ?
উঃ ছদ্মবেশে অর্জুন স্বয়ংবর সভায় উপস্থিত ছিলেন।
(১০)"টূটকিরিটির গর্ভ আজি রনস্থলে"- কে কার সম্পর্কে একথা বলেছেন?
উঃ জনা তার স্বামী নীলধ্বজকে অর্জুনের সম্পর্কে কথাটি বলেছেন। কারণ তার প্রিয় পুত্র প্রবীরকে অর্জুন অন্যায় যুদ্ধে হত্যা করেছে। তাই পুত্রহন্তার প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে আলোচ্য কথাটি বলেছেন।
(১১)"কূলাচার্য তিনি কু কূলে"- কু কূলের কেন ?
উঃ পাণ্ডব বংশের বহু মানুষের নানা চারিত্রিক ত্রুটি ও ব্যভিচারের জন্য পাণ্ডব বংশ কে কু কূল বলেছেন।
(১২)"ছদ্মবেশে লক্ষ্য রাজে দলিল দূর মতি"- ছদ্মবেশে কে ছলনা করেছেন ?
উঃ অর্জুন।
(১৩)নীলধ্বজ কোথাকার রাজা ছিলেন?
উঃ মাহেশ্বরী পুরী।
(১৪)"অলির সখি, রবির অধীনী, সমিরন প্রিয়া"- কে কার সম্পর্কে এই বিশেষণ ব্যবহার করেছেন ?
উঃ জনা দ্রৌপদীর সম্পর্কে আলোচ্য কথাগুলি বলেছেন।
(১৫)"কোথা পদ্মালয়া ইন্দিরা" -ইন্দিরা কে ?
উঃ লক্ষ্মী।
(১৬)মাহেশ্বর কথার অর্থ কি ?
উঃ মহা ধনুধ্বর।
(১৭)কুন্তির সম্পর্কে কি কি কুমন্তব্য করা হয়েছে ?
উঃ কুলটা, স্বৈরিনী, বেশ্যা প্রভৃতি।
(১৮)"বিধাতার বিধি এ জগতে "- বিধাতার বিধি কে ?
উঃ জন্ম ও মৃত্যুই হলো বিধাতার বিধি।
(১৯)কৃতান্ত নগর বলতে কী বোঝায় ?।
উঃ যমালয়।
(২০)"শাশুড়ি যোগ্য বধূ"- যোগ্য বধূটি কে ?
উঃ দ্রৌপদী।
(২১)কুলাচার্য কে ?
উঃ ব্যাসদেব।
(২২)পুত্রহা রিপু কে ?
উঃ অর্জুন।
(২৩)"নাশিল বর্বর তারে"- কোন বর্বর কাকে নাশ করেছিল ?
উঃ অর্জুন জনার পুত্র প্রবীর কে।
(২৪)ফাল্গুনী কে ?
উঃ অর্জুন।
(২৫) বীরাঙ্গনা কাব্যের মধ্যে পূর্ণ পত্রের সংখ্যা কয়টি ?
উঃ ১১ টি।
(২৬) বীরাঙ্গনা কাব্যটি কি জাতির কাব্য ?
উঃ পত্রকাব্য।
(২৭) "কিন্তু বৃথা এ গঞ্জনা"- কে কাকে গঞ্জনা দেওয়া কে বৃথা বলেছেন?
উঃ জনা তার স্বামী নিলধজকে গঞ্জনা দেওয়া বৃথা বলেছেন।
(২৮) "সেবীছো যতনে তুমি অতিথি রতনে"- অতিথি রতন কে?
উঃ অর্জুন।
(২৯) জনা কিভাবে প্রাণের জ্বালা ভুলতে চান?
উঃ জাহ্নবীর জলে আত্ম বিসর্জন দিয়ে।
(৩০)জনার ক্ষোভের কারণ কি?
উঃ পুত্রহত্যার প্রতিশোধ না নিয়ে তার স্বামী সেই পুত্র হন্তাহাকেই নরনারায়ন জ্ঞানে পূজা করছে ।এটাই ছিল জনার ক্ষোভ।
(৩১) "ছদ্মবেশে লক্ষ্মীরাজে দলিল দূর মতি"- ছদ্মবেশে কে ছলনা করেছিল?
উঃ অর্জুন।
(৩২) "কুলাচার্য তিনি কু কুলের"- কুলাচার্য কে?
উঃ বেদব্যাস।
(৩৩) 'নীলধ্বজের প্রতি জনা' কবিতা অবলম্বনে জনার মাতৃত্ববোধের পরিচয় দাও।
উঃ কবিবর মাইকেল মধুসূদন দত্তের এক যুগান্তকারী সৃষ্টি বীরাঙ্গনা নামক পত্র কাব্যটি। সেই বীরাঙ্গনা কাব্যের অন্তর্গত 'নীলধ্বজের প্রতি জনা' কবিতায় জনার মাতৃত্ববোধের যে পরিচয় পাওয়া যায় তা আলোচনা করা হলো।
মাহেশ্বরী পুরীর যুবরাজ প্রবীর অশ্বমেধ যজ্ঞের অশ্ব ধরলে অর্জুন তাকে হত্যা করে। প্রিয় পুত্রের নিধন বার্তা শুনে জনার অন্তরে মাতৃত্ববোধের যে প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছিল তাহাই এই কবিতার মূল বিষয়বস্তু। একদিকে যেমন রাজ মাতা পুত্র শোকে পাথর হয়ে পড়েছেন অন্যদিকে পুত্র হন্তার বিরুদ্ধে তিনি ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন। তিনি প্রত্যাশা করেছিলেন যে পুত্রের মৃত্যুর পর নীলধ্বজ তার ক্ষত্রিয় ধর্ম রক্ষা করবেন।
"ক্ষত্রধর্ম ক্ষত্রকর্ম সাধ ভুজবলে"
কিন্তু তা না করে অর্জুনের মনোরঞ্জনের জন্য রাজসভায় নর্তকিকে নাচতে দেখা যায়। গায়ককে গান করতে শোনা যায়। আর বিনা ধ্বনিও শোনা যায়। তিনি প্রতিশোধ গ্রহণের বদলে পুত্র হত্যাকারীর সেবা করেন। নীলধ্বজের এই আচরণ তিনি মেনে নিতে পারেন না। তাই তিনি প্রশ্ন করেছেন --
" হতজ্ঞান আজি কি হে পুত্রের বিহনে,
মাহেশ্বরী পরিস্বর নীলধ্বজ রথী"?
অর্থাৎ নীলধ্বজের এই আচরণে ক্ষত্রিয় ধর্ম লাঞ্ছিত হয়েছে। তাই জনা কিছুতেই এইসব মেনে নিতে পারছেন না। কৃষ্ণ ভক্তির কারণে অর্জুনের সঙ্গে নীলধ্বজের যে সক্ষতা গড়ে উঠেছিল তার কাছে রাজমাতা জনার আর্তির পরাজয় ঘটেছে। তাই জনার কাছ থেকে ক্ষোভ ও অভিমানই নীলধ্বজের একমাত্র প্রাপ্য হয়ে উঠেছে। আর এর মধ্য দিয়েই জনার মাতৃত্ববোধ যথার্থ স্বার্থক হয়ে উঠেছে।
(৩৪) "মহারথী প্রথা কি হে এই মহারথী"- কে কার প্রতি এই উক্তিটি করেছেন? কোন প্রসঙ্গে বক্তার মন্তব্যটি করেছেন? এই মন্তব্যের উদ্দেশ্য কি ছিল?
উঃ কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত 'নীলধ্বজের প্রতি জনা' নামক পত্র কবিতায় মাহেশ্বরী পুরীর রানি জনা রাজা নীলধ্বজকে উদ্দেশ্য করে আলোচ্য উক্তিটি করেছেন।
অশ্বমেধ যজ্ঞের অশ্ব ধরার জন্য নীলধ্বজের পুত্র প্রবীরকে অর্জুন হত্যা করেছেন। তাই রাজমাতা পুত্রহন্তার প্রতিশোধ নিতে চেয়েছেন। কিন্তু কবিতায় দেখা যায় নীলধ্বজ সেই পুত্র হত্যাকারীর সাথেই বন্ধুত্ব স্থাপন করেছেন। তখনই জনা ক্ষুব্ধ হয়ে নীলধ্বজকে একের পর এক প্রশ্ন করেছেন। আর সেই প্রসঙ্গেই আলোচ্য প্রসঙ্গটি এসেছে।
অর্জুন কতৃক প্রবীরের মৃত্যু হওয়ায় জনা প্রত্যাশা করেছিলেন রাজা নীলধ্বজ অর্জুনের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ গ্রহণে তৎপর হয়ে উঠবেন। কিন্তু তা হয়নি। অর্জুনের যে বীরত্বপূর্ণ ভাবমূর্তির জন্য নীলধ্বজ যুদ্ধ থেকে বিরত হয়েছেন তা মিথ্যা ধারণা। একথা প্রমাণ করতে এবং পুনরায় ক্ষত্রিয় ধর্মে ফিরে এনে যুদ্ধক্ষেত্রের প্রবৃত্ত করার জন্য জনা বারবার মহারথী প্রথা লঙ্ঘনের কথা নীলধ্বজের সামনে তুলে ধরেছেন।
Comments
Post a Comment
Haven't doubt please let me know.