জীবন বিজ্ঞান class-8
১) জৈব সার কাকে বলে ?
উঃ মৃত উদ্ভিদ আর প্রাণীদের বর্জ্য পচিয়ে যে সার তৈরি হয় তাকে জৈব সার বলে।
চাষীরা খোলা জায়গায় একটা গর্ত খুঁড়ে সেখানে মৃত উদ্ভিদ আর প্রাণীদের বর্জ্য পদার্থ ফেলে রাখে। পচে যাওয়ার জন্য। ব্যাকটেরিয়া আর ছত্রাকের বিয়োজন ও রূপান্তর ক্রিয়ায় এইসব বর্জ্য পদার্থগুলো পচে গিয়ে তৈরি হয় জৈব সার।
২) অজৈব সার কাকে বলে ?
উঃ অজৈব সার হলো এক ধরনের রাসায়নিক পদার্থ।এতে থাকে নানা অজৈব লবণ, যা উদ্ভিদের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। সার কারখানায় তৈরি হয় এই অজৈব সার। অজৈব সার প্রধানত তিন রকমের মৌলের ঘাটতি পূরণ করে-- নাইট্রোজেন, ফসফরাস আর পটাশিয়াম।
৩) কয়েকটি অজৈব সারের নাম লেখ।
উঃ ইউরিয়া, অ্যামোনিয়াম সালফেট।
৪) অজৈব সার ব্যবহারের সমস্যা গুলি লেখ।
উঃ ক) অজৈব সারের অত্যাধিক ও অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহারের ফলে মাটিতে থাকা উপকারী ব্যাকটেরিয়ার কাজে বাধা সৃষ্টি করে, মাটির উর্বরাশক্তি ও উৎপাদন ক্ষমতাকে কমিয়ে দেয়।
খ) মাটির বৈশিষ্ট্য অনুসারে অজৈব সার ব্যবহার না করলে মাটির রসায়ন পাল্টে গিয়ে ভালোর চেয়ে ক্ষতি বেশি করে। যেমন- অ্যামোনিয়াম সালফেট।
গ) অজৈব সার ব্যবহার করা চাষের জমি থেকে নাইট্রোজেন বা ফসফরাসের যৌগ মিশ্রিত জল নদী বা পুকুরের জলে মিশে জল দূষণ ঘটায়।
৫) বর্তমানে অজৈব সারের পরিবর্তে জৈব সার ব্যবহার করা হচ্ছে কেন ?
উঃ ক) জৈব সার মাটির জল ধারণ ক্ষমতা বাড়ায়।
খ) জৈব সার ব্যবহার করলে মাটি রন্ধ্রযুক্ত হয়। ফলে মাটির মধ্য দিয়ে বিভিন্ন গ্যাসের আদান-প্রদান ভালো হয়।
গ) জৈব সার মাটিতে থাকা উপকারী জীবাণুদের সংখ্যা বাড়াতে সাহায্য করে।
ঘ) জৈব সার মাটির গঠন উন্নত করতে সাহায্য করে।
৬) বাইরে থেকে স্যার ব্যবহার না করে মাটি থেকে হারিয়ে যাওয়া উদ্ভিদের পুষ্টি উপাদান প্রাকৃতিক কি কি উপায়ে ফিরিয়ে আনা যায় ?
উঃ বাইরে থেকে স্যার ব্যবহার না করে মাটি থেকে হারিয়ে যাওয়া উদ্ভিদের পুষ্টি উপাদান প্রাকৃতিক নানা উপায়ে পুনরায় ফিরিয়ে আনা যায় সে পদ্ধতিগুলি হল-
ক) চাষের জমি অনাবাদি ফেলে রাখাঃ
দুটো ফসল চাষের মাঝের সময়টা যদি জমিতে কোন চাষ না করা যায় তবে প্রাকৃতিক উপায়ে এই মাটি তার হারানো উপাদান গুলো ফিরে পায়। কারণ এই সময়ে মাঠে জমা হওয়া মৃত উদ্ভিদ ,প্রাণী বা অন্যান্য জৈব বস্তু নানা রকম জীবাণুর ক্রিয়ায় পচে মাটিতে মিশে যায়। ফলে মাটি তার ফুরিয়ে যাওয়া উপাদান গুলো আবার ফিরে পায়।
খ) শস্যাবর্তন পদ্ধতিঃ
একই জমিতে ক্রমাগত একই উদ্ভিদের চাষ করে গেলে ওই উদ্ভিদের প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান গুলো মাটি থেকে ক্রমশ ফুরিয়ে যায়। তাই অনেক সময় দুটো চাষের মাঝে একবার শিম্বগোত্রীয় উদ্ভিদ, যেমন- মটর, বিন, ছোলা চাষ করা হয়। এই ধরনের উদ্ভিদের মূলে বাসা বাঁধে রাইজোবিয়াম নামে এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া। এই উদ্ভিদেরা বাতাস থেকে সরাসরি নাইট্রোজেন গ্রহণ করতে পারে না। এই ব্যাকটেরিয়া পরিবেশ থেকে নাইট্রোজেন গ্রহণ করে উদ্ভিদদের ব্যবহারযোগ্য নাইট্রোজেন যৌগে পরিবর্তিত করে উদ্ভিদের দেয়। এই নাইট্রোজেন যৌগ গুলো উদ্ভিদের ব্যবহারের পরে বাকিটা মাটিতে রয়ে যায়। তাই শিম্ব গোত্রীয় উদ্ভিদের ফসল তোলার পরেও মাটিতে যথেষ্ট নাইট্রোজেন থাকে। তাই এই ধরনের ফসল একবার চাষ করে মাঝে একবার সিংহগোত্রীয় উদ্ভিদের চাষ করলে মাটি আবার তার হারানো নাইট্রোজেন যৌগ ফিরে পায়। তাই একই ফসল বারবার চাষ না করে মাঝে একবার অন্য ধরনের ফসল চাষ করাই হলো শস্য আবর্তন পদ্ধতি।
গ) জলসেচ পদ্ধতি, আগাছা দমন পদ্ধতি, ক্ষতিকারক কিছু পতঙ্গ থেকে ফসলকে বাঁচানো প্রভৃতি।
৭) ফোয়ারা পদ্ধতি বলতে কী বোঝো?
উঃ চাষের জমিতে ফসলের উপর ফোয়ারার মতো জল ফেলার পদ্ধতিকে ফোয়ারা পদ্ধতি বলে।
৮) ড্রিপ পদ্ধতি বলতে কী বোঝো?
উঃ পাইপের সাহায্যে উদ্ভিদের মূলের ঠিক কাছে ফোঁটা ফোঁটা জল ঝরে পড়ার পদ্ধতিকে বলা হয় ড্রিপ পদ্ধতি।
৯) কয়েকটি আগাছা নাশকের নাম লেখ।
উঃ 2,4-D, ড্যালাপন, পিক্লোরাম ইত্যাদি।
১০) কয়েকটি আগাছার নাম লেখ।
উঃ পার্থেনিয়াম, এমারান্থাস, চেনোপডিয়াম, ঘাস ইত্যাদি।
১১) পেস্ট কাদের বলে ?
উঃ যে সকল পতঙ্গ ফসল খেয়ে ফসলকে নষ্ট করে তাদেরকে পেস্ট বা ফসল ধ্বংসকারী প্রাণী বলে।
যেমন- পঙ্গপাল, উই, গোবরে পোকা ইত্যাদি।
১২) ফসল ধ্বংসকারী প্রাণীদের দমনের উপায় গুলি লেখ।
উঃ ফসল ধ্বংসকারী প্রাণীদের দমনের দুটি উপায় আছে রাসায়নিক উপায় এবং জৈবিক উপায়।
১৩) DDT-র পুরো কথা কী ?
উঃ ডাইক্লোরো ডাই- ফিনাইল ট্রাইক্লোরো ইথেন।
১৪) BHC- র পুরো কথাটি কি?
উঃ বেনজিন হেক্সাক্লোরাইড।
১৫) ইঁদুর জাতীয় প্রাণীদের দমন করার জন্য কি ব্যবহার করা হয়?
উঃ জিঙ্ক ফসফাইড ও ওয়ারফেরিন।
১৬) বীজ সংরক্ষণ বলতে কী বোঝো ?
উঃ পরের মরশুমে চাষের জন্য চাষিরা বীজ সংরক্ষণ করে। এছাড়াও হারিয়ে যেতে বসা বিভিন্ন শস্যের বীজও নানাভাবে সংরক্ষণ করাকে বীজ সংরক্ষণ বলে।
১৭) ভারতের অন্যতম প্রধান খাদ্যশস্যের নাম কি?
উঃ ধান
১৮) ভারতের কোথায় কোথায় ধান চাষ হয় ?
উঃ ভারতের প্রায় সব রাজ্যেই কম বেশি ধান চাষ হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গ, অন্ধ্রপ্রদেশ, পাঞ্জাব, উত্তরপ্রদেশ ,ওড়িশা আর তামিলনাড়ুতে ধানের উৎপাদন বেশি হয়।
১৯) চালের পুষ্টি মূল্য কি তা লেখ।
উঃ ধান থেকে চাল পাওয়া যায় ।এই চালে ৭৯.১% কার্বোহাইড্রেট, ৬% প্রোটিন আর ০.৪ % বিভিন্ন মৌল থাকে।
২০) জাতিগত বৈশিষ্ট্য আর চাষ করার পদ্ধতি অনুসারে ধান কে কয় ভাগে ভাগ করা যায় কি কি?
উঃ জাতিগত বৈশিষ্ট্য আর চাষ করার পদ্ধতি অনুসারে ধানকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়। এরা হলো--
ক) আউস- শরৎকালীন ধান
খ) আমন- শীতকালীন ধান
গ) বোরো- গ্রীষ্মকালীন ধান
২১) উৎপাদন ক্ষমতা অনুসারে ধানকে কয় ভাগে ভাগ করা যায় কি কি ?
উঃ দুই ভাগে ভাগ করা যায়। অপেক্ষাকৃত কম ফলনশীল দেশি প্রকারের ধান আর উচ্চ ফলনশীল প্রকারের ধান।
২২) জাতের ভিত্তিতে ধান কত প্রকার কি কি?
উঃ জাতের ভিত্তিতে ধান ৩ প্রকার--
ক) জলদি জাত- রত্না ধানের জাত 95 থেকে ১১৫ দিনের মধ্যে পাকে।
খ) মাঝারি জাত-- জয়া, জয়ন্তী 116 থেকে 135 দিনের মধ্যে পাকে।
গ)নাবি জাত --স্বর্ণ মাশরী, পঙ্কজ ১৪০ থেকে ১৫০ দিন সময় লাগে।
২৩) ভিটামিন- এ এর চাহিদা মেটাতে কৃষি বিজ্ঞানীরা কোন ধানের চাষ করেন?
উঃ গোল্ডেন রাইস
Comments
Post a Comment
Haven't doubt please let me know.