History( class--viii) question and answer

 

অধ্যায় অনুসারে অষ্টম শ্রেণির ইতিহাসের প্রশ্ন-উত্তর বিষয়ে আলোচনা


         History( class--viii) question and answer 

    ১) আঞ্চলিক শক্তির উত্থান

 অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

১) ঔরঙ্গজেবের মৃত্যু হয় কত সালে?
উঃ ১৭০৭ খ্রীঃ
২) পলাশির যুদ্ধ কবে হয়েছিল?
উঃ ১৭৫৭ খ্রীঃ

৩) ব্রিটিশ শক্তির উত্থান কবে হয়েছিল?
উঃ 1757 খ্রিস্টাব্দে

৪) নাদির শাহ কতবার ভারত আক্রমণ করেছিলেন?
উঃ 17 বার

৫) বণিক রাজা নামে কারা পরিচিত ছিল?
উঃ মুর্শিদাবাদের রাজনীতি ও অর্থনীতিতে যেসকল বণিকদের প্রভাব ছিল,তারা বণিক রাজা নামে পরিচিত ছিল।এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো--উমিচাঁদ,জগৎ শেঠ,প্রমুখ।

৬) জগৎ শেঠ কার উপাধি?
উঃ। ফতেহ চাঁদ

৭) মুর্শিদকুলি খাঁ কবে মারা যান?
উঃ ১৭২৭ খ্রিস্টাব্দে

৮) মুর্শিদকুলি খাঁ এর সেনাপতির নাম কি?
উঃ আলিবর্দি খাঁ

৯) আলীবর্দী খাঁ কবে মারা যান?
উঃ 1756 খ্রিস্টাব্দের

১০) আলীবর্দী খাঁর দৌহিত্রের নাম কি?
উঃ সিরাজউদ্দৌলা

১১) বাংলায় বর্গী হানা বলতে কী বোঝো?
উঃ নবাব আলীবর্দীর সময়ে বাংলার এক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হল মারাঠা বর্গী আক্রমন। 1742 থেকে 1751 খ্রিস্টাব্দের মধ্যে মারাঠারা বাংলা ও ওড়িশার বিভিন্ন অঞ্চলে লুটতরাজ ও আক্রমণ চালিয়েছিল। সেই ঘটনাই বাংলায় বর্গী হানা নামে পরিচিত।

১২) চিল কুলিচ খান উপাধি কে কাকে দিয়েছিলেন?
উঃ সম্রাট ঔরঙ্গজেব মির কামারউদ্দিন খান সিদ্দিকীকে এই উপাধি দিয়েছিলেন।

১৩) নিজামুল আসফ ঝাঁ উপাধি কার?
উঃ মির কামারউদ্দিন খান সিদ্দিকী

১৪) হায়দ্রাবাদ রাজ্য কে কবে প্রতিষ্ঠা করেন?
উঃ মির কামারউদ্দিন খান সিদ্দিকী ১৭২৪ খ্রীঃ

১৫) স্বাধীন হায়দ্রাবাদ রাজ্য কবে আত্মপ্রকাশ করে?
উঃ ১৭৪০ খ্রীঃ

১৬) বক্সারের যুদ্ধ‌ কবে হয়েছিল?
উঃ ১৭৬৪ সালে

১৭) আলীবর্দী খাঁর সেনাপতির নাম কি?
উঃ মীরজাফর

১৮) কলকাতা জয়ের পর সিরাজ কলকাতার কি নাম রেখেছিলেন?
উঃ আলিনগর

১৯) অন্ধকূপ হত্যা কে অতিরঞ্জন বলে কে প্রমাণ করেছিলেন?
উঃ অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়ী

২০) আলিনগরের সন্ধি কবে কাদের মধ্যে হয়েছিল?
উঃ 1757 খ্রিস্টাব্দে সিরাজউদ্দৌলা ও ব্রিটিশদের সঙ্গে হয়েছিল।

২১) ইংরেজরা কবে, কার কাছ থেকে দেওয়ানি লাভ করেছিলেন?
উঃ 1765 খ্রিস্টাব্দের মুঘল সম্রাট দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ আলমের কাছ থেকে।

২২) ছিয়াত্তরের মন্বন্তর কবে হয়েছিল?
উঃ 1770 খ্রিস্টাব্দের (1176 বঙ্গাব্দ)

২৩) দ্বৈত শাসন ব্যবস্থার প্রবর্তক কে?
উঃ লর্ড ক্লাইভ

২৪) অধীনতামূলক মিত্রতা নীতি কে চালু করেন?
উঃ লর্ড ওয়েলেসলি

২৫) স্বত্ববিলোপ নীতির প্রবর্তক কে?
উঃ লর্ড ডালহৌসি

২৬) কে স্বেচ্ছায় অধীনতামূলক মিত্রতা নীতি গ্রহণ করেছিলেন?
উঃ হায়দ্রাবাদের নিজাম

২৭) চতুর্থ ইঙ্গ-মহীশূর যুদ্ধ কবে কাদের মধ্যে হয়েছিল?
উঃ 1793 খ্রিস্টাব্দে লর্ড ওয়েলেসলি ও টিপু সুলতানের মধ্যে

২৮) শ্রীরঙ্গপত্তমের সন্ধি কাদের মধ্যে হয়েছিল?
উঃ 1799 খ্রিস্টাব্দে ইংরেজ ও টিপু সুলতানের মধ্যে

২৯) বন্দিবাসের যুদ্ধ কবে কাদের মধ্যে হয়েছিল?
উঃ 1760 খ্রিস্টাব্দে ইংরেজি ফরাসিদের মধ্যে

৩০) সলবাইয়ের সন্ধি কবে কাদের মধ্যে হয়েছিল?
উঃ 1782 খ্রিস্টাব্দে ইংরেজ ও মারাঠাদের মধ্যে

৩১) বেসিনের সন্ধি কবে কাদের মধ্যে হয়েছিল?
উঃ 1802 খ্রিস্টাব্দে ইংরেজ ও পেশোয়ার দ্বিতীয় বাজিরাও

৩২) লাহোরের চুক্তি কবে হয়েছিল?
উঃ 1846 খ্রিস্টাব্দে

৩৩) ঔরঙ্গজেবের শাসনকালে বাংলার নবাব কে ছিলেন?
উঃ মুর্শিদকুলি খাঁ

ব্যাখ্যামূলক প্রশ্নের উত্তর দাও

আঞ্চলিক শক্তির উত্থান (অষ্টম শ্রেণি) অধ্যায় 

১) ফারুকশিয়ারের ফরমান এর গুরুত্ব কি?

উঃ ফারুকশিয়ার ছিলেন একজন মুঘল সম্রাট।তিনি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে বাংলাদেশে বাণিজ্যিক অধিকার দেয়ার জন্য 1717 খ্রিস্টাব্দে একটি আদেশনামা জারি করেছিলেন সেটি ফারুকশিয়ারের ফরমান নামে পরিচিত ছিল।

ফরমানের গুরুত্ব ঃ
ক) ব্রিটিশ কোম্পানি বছরে মাত্র 3000 টাকার বিনিময়ে বাংলায় বাণিজ্য করতে পারবে।
খ) কোম্পানিকে কোন শুল্ক দিতে হবে না।
গ) কোম্পানির পণ্য কেউ চুরি করলে বাংলার নবাব তার শাস্তি দেবেন এবং কোম্পানিকে ক্ষতিপূরণ দেবেন।
ঘ) ইংরেজ কোম্পানি কলকাতার কাছাকাছি অঞ্চলে 38 টি গ্রামের জমিদারি কিনতে পারবে।
ঙ) কোম্পানির জাহাজের সঙ্গে অনুমতি পত্র থাকলেই সেই জাহাজ অবাধে বাণিজ্য করতে পারবে।
ছ) বাংলার নবাবের মুর্শিদাবাদ প্রয়োজনমতো কোম্পানি ব্যবহার করতে পারবে।

২) কে কিভাবে ও কবে হায়দ্রাবাদে আঞ্চলিক শাসন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন?

উঃ হায়দ্রাবাদে আঞ্চলিক শাসন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন মির কামার উদ্দিন খান সিদ্দিকী।
      হায়দ্রাবাদ ছিল মোঘল সাম্রাজ্যের অধীনে থাকা একটি রাজ্য ‌। এই রাজ্যের শাসক ছিলেন মুবারিচ খান। 1723 খ্রিস্টাব্দে মির কামার উদ্দিন খান সিদ্দিকী তাকে পরাজিত করেন। 1724 খ্রিস্টাব্দে তিনি দাক্ষিণাত্যের সুবাদার হয়ে হায়দ্রাবাদে নিজের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ‌‌।

৩) পলাশীর লুণ্ঠন কাকে বলে?

উঃ 1757 খ্রিস্টাব্দে পলাশীর যুদ্ধের পরে রবার্ট ক্লাইভ মীরজাফরকে বাংলার সিংহাসনে বসান। তার বিনিময়ে মীর জাফরের সঙ্গে কতগুলি চুক্তি হয়। সেই চুক্তি অনুসারে ব্রিটিশ কোম্পানি বাংলায় অবাধে বাণিজ্য চালু করেন। ফলে কলকাতার উপরে নবাবের যাবতীয় অধিকার হারিয়ে যায়।
               নবাব মীর জাফর কে সাহায্য করার বিনিময়ে ব্রিটিশ কোম্পানির অবাধে সম্পদ অধিকার করতে থাকে। পলাশীর যুদ্ধের পর সিরাজের কলকাতা আক্রমণের অজুহাতে এক কোটি 77 লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ নেয়। তার উপরে ক্লাইভ সহ কোম্পানির উচ্চ পদাধিকারীরা মীরজাফরের থেকে প্রচুর সম্পদ ব্যক্তিগতভাবে পেয়েছিলেন। সব মিলিয়ে প্রায় তিন কোটি টাকার সম্পদ কম্পানি মীরজাফর এর কাছ থেকে আদায় করেছিলেন। কোম্পানির তরফ এ এই অর্থ আত্মসাৎকে পলাশীর লুণ্ঠন বলা হয়।

৫) পলাশীর যুদ্ধের কারণগুলি লেখ।

উঃ 1757 খ্রিস্টাব্দে 23 জুন পলাশীর প্রান্তরে বাংলার নবাব সিরাজউদ্দৌলার ও ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির মধ্যে যে যুদ্ধ হয়েছিল তা পলাশীর যুদ্ধ নামে পরিচিত। এই যুদ্ধের পিছনে ছিল একাধিক কারণ 

ইংরেজ কোম্পানির ষড়যন্ত্র ঃ  
               সিরাজ উদ্দোল্লা যখন বাংলার নবাব হন তখন তার আত্মীয় স্বজনেরা তার বিরোধিতা করেছিলেন। সেই সুযোগে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি সিরাজ বিরোধী ঘষেটি বেগম ও শওকত জং এর সঙ্গে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। সিরাজ এই কথা জানতে পেরে ইংরেজ কোম্পানিকে উচিত শিক্ষা দিতে চেয়ে ছিলেন।

দস্তকের অপব্যবহারঃ
              মুঘল সম্রাট ফারুকশিয়ারের ফরমান অনুযায়ী ইংরেজ কোম্পানি বিনাশুল্কে বাণিজ্যের জন্য ছাড়পত্র পেয়েছিল। কিন্তু কোম্পানির কর্মচারীরা এই সুযোগ নেওয়ার ফলে সিরাজ কোম্পানির উপর ক্ষুব্ধ হন।

নবাবের দুতকে অপমানঃ
             নবাবের সঙ্গে ইংরেজ কোম্পানি দুর্গ নির্মাণ সংক্রান্ত মীমাংসার জন্য সিরাজ দূত হিসাবে নারায়ন দাসকে কলকাতায় পাঠান। কিন্তু ইংরেজরা তাকে অপমান করলে সিরাজ ইংরেজদের প্রতি ক্ষুব্ধ হয়।

আলিনগরের সন্ধি ভঙ্গ ঃঃ 
            এই সকল নানা কারণে সিরাজ কলকাতা আক্রমণ করেন এবং দখল করেন। কলকাতার নাম রাখেন আলিনগর আর যাতে যুদ্ধ না হয় সেই জন্য তিনি ইংরেজদের সঙ্গে আলিনগরের সন্ধি স্থাপন করেছিলেন। এই সন্ধির শর্ত অনুসারে ঠিক হয় যে সিরাজ ফরাসিদের সাহায্য করবেন না কিন্তু চন্দননগরে ফরাসিরা আশ্রয় লাভ করে। ইংরেজরা এই সন্দীপ ভঙ্গের অপরাধে নবাবের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে।

৬) ছিয়াত্তরের মন্বন্তরের তিনটি কারণ লেখ।

উঃ 1764 খ্রিস্টাব্দে বাংলাদেশ এক দুর্ভিক্ষ হয়েছিল ইহা ইতিহাসে ছিয়াত্তরের মন্বন্তর নামে পরিচিত। এর পিছনে ছিল একাধিক কারণ, তাদের মধ্যে তিনটি কারণ হল-

ক) অনাবৃষ্টিঃ
           বাংলার চাষবাস ছিল প্রকৃতি নির্ভর। অতি অল্প বৃষ্টিপাত হওয়ার কারণে ধান নষ্ট হয়ে যায়। তার পরের বছর অনাবৃষ্টি হওয়ায় চাষবাস একদম বন্ধ হয়ে যায়।সদস্য সত্য খ্রিস্টাব্দে কম বৃষ্টিপাত এর জন্য স্বল্প খরচে হলেও কোম্পানি এবং অসাধু ব্যবসায়ীরা খাদ্য মজুদ করে। এর ফলে খাদ্য সংকট দেখা দেয়।

খ) চড়াসুদে রাজস্ব আদায়ঃ
              মুঘল নবাবী আমলে ভূমি রাজস্ব হাঁটছিল উৎপাদনের ১/৩ অংশ। দেওয়ানি লাভের পর কোম্পানি নানারকম অত্যাচার চালিয়ে রাজস্ব আদায় করতে থাকে।ফলে অন্যান্য বছরের তুলনায় দুর্ভিক্ষের বছরের বেশি রাজস্ব আদায় হয়।

গ) রোগ ব্যাধি ঃ
              খাদ্য সংকট ক্ষুধার জ্বালায় মানুষ গাছের পাতা মরা পশুর মাংস এমনকি মানুষের মাংস খেয়েও ক্ষুধা নিবারণ করতে থাকে। পুকুরের জল দূষিত হয়ে যায়। ফলে কলেরা গুটিবসন্ত নানাপ্রকার মহামারীর রূপ ধারণ করে।

৭) ব্রিটিশ প্রেসিডেন্সি ব্যবস্থা কি? রেসিডেন্স দের কাজ কি?

উঃ রেসিডেন্স বলতে বোঝায় প্রতিনিধি। ব্রিটিশ রেসিডেন্ট বা প্রতিনিধিরা যে স্থানে থাকতেন সেই স্থান বা বাসভবনকে বলা হতো রেসিডেন্সি। কোম্পানির রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান পরিণত হলেনানা দেশের শাসকদের সঙ্গে কোম্পানির সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ফলে কোম্পানি সেইসব শাসকদের দরবারে একজন করে প্রতিনিধি রাখতেন।কোম্পানির স্বার্থ রক্ষার জন্য গড়ে তোলা এই ব্যবস্থা রেসিডেন্সি ব্যবস্থা নামে পরিচিত।

 রেসিডেন্সদের কাজঃ
              দেশীয় নানা রাজ্যগুলিতে কোম্পানি ও ইংরেজদের সঙ্গে নবাবদের কাজ কর্মের ওপর নজরদারি চালাতে এই রেসিডেন্সরা। ফলে স্বাধীনভাবে নবাবদের পক্ষে সম্ভব ছিল না।
              লর্ড ওয়েলেসলি অধীনতামূলক মিত্রতা নীতি চালু করলে রেসিডেন্সি ব্যবস্থার প্রসার ঘটে। এইসব রেসিডেন্স রা দেশীয় শাসকদের আর্থিক ও সামরিক শক্তি সম্বন্ধে কোম্পানিকে তথ্য সরবরাহ করতো। প্রতিবেশী শাসক বা বিদেশী শক্তির ব্যাপারে খোঁজখবর নিত। কোন রাজ্য সরকারি ভাবে দখল করা উচিত কিনা সে সম্পর্কে কোম্পানিকে পরামর্শ দিত এই রেসিডেন্টরা।

৮) অন্ধকূপ হত্যা বলতে কি বোঝ?

উঃ ইংরেজ কর্মচারী হলওয়েলের বিবরণ থেকে জানা যায় যে,নবাবের ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গ দখল এরপর নবাব বাহিনীর হাতে কোম্পানির 146 জন কর্মচারী বন্দি হয়েছিল। ওই রাত্রিতেই 18 ফুট লম্বা এবং 14 ফুট 10 ইঞ্চি চওড়া একটি ঘরে তাদের রাখা হয়েছিল। পরের দিন সকালে তাদের মধ্যে 123 জন মারা যায়, এই ঘটনা ইতিহাসে অন্ধকূপ হত্যা নামে পরিচিত।


Comments

Popular posts from this blog

কর্ভাস (Carvas)প্রফেসর শঙ্কুর ডায়রি

বায়ুমণ্ডলের উষ্ণতা তারতম্যের কারণগুলি আলোচনা কর।

আদর্শ ফুলের গঠন চিত্র ( দশম শ্রেণী)