প্রাচীন ভারতের চিকিৎসায় চরকসংহিতার অবদান আলোচনা করো।
৪) প্রাচীন ভারতের চিকিৎসায় চরকসংহিতার অবদান আলোচনা করো।
ভূমিকাঃ
"শরীরং ব্যাধিমন্দিরম"---মানুষের শরীর মাত্রই ব্যাধির আকর। তাই মানুষের স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য ভারতবর্ষে অতি প্রাচীনকাল থেকেই আয়ুর্বেদের ব্যাপক চর্চা ঘটেছিল। যে শাস্ত্র পাঠ করলে আয়ু বা জীবন সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য জানা যায় এবং বিভিন্ন রোগ মুক্তির উপায় যে গ্রন্থে বর্ণিত হয়েছে তাকে আয়ুর্বেদ শাস্ত্র বলে। চিকিৎসাশাস্ত্র হিসাবে চরক সংহিতা আজও সর্ববৃহৎ এবং সর্বোচ্চ সমন্বিত।
গ্রন্থবিভাগঃ
চরক সংহিতা গ্রন্থটিতে 8টি স্থান ও 120 অধ্যায় রয়েছে। স্থান গুলি হল-- সূত্রস্থান, নিদানস্থান, বিমান স্থান, শরীরস্থান, ইন্দ্রিয়স্থান, চিকিৎসাস্থান ও সিদ্ধিস্থান।
সূত্রস্থানঃ
ইহা চরকসংহিতার প্রথম ভাগ। এতে 30 টি অধ্যায় ও 1952 টি সূত্রে গাঁথা। এখানে আয়ুর্বেদের লক্ষণ ও প্রয়োজনীয় শারীরিক ও মানসিক দোষগুলির বিবরণ, খনিজ ও উদ্ভিজ্জ দ্রব্যগুলির রোগ নিরাময়ের জন্য প্রয়োগ প্রভৃতি বর্ণিত হয়েছে।
নিদানস্থানঃ
এতে 8 টি অধ্যায় ও 247 টি সূত্র আছে।রোগের ভেদ , পর্যায় ও রোগের লক্ষণ এখানে আলোচিত হয়েছে।
বিমানস্থানঃ
এখানে 8টি অধ্যায় ও 354 সূত্র আছে। বিভিন্ন রোগের মূলে কটু অম্লাদি রসের কার্যকারিতার কথা আলোচিত হয়েছে।
শরীরস্থানঃ
এখানে 8টি অধ্যায় ও 382টি সূত্র আছে। মানবদেহের অঙ্গ প্রত্যঙ্গের বিভিন্ন বিবরণ ও বৈশিষ্ট্য হল এর মূল প্রতিপাদ্য বিষয়। যেমন-ধাতু ভেদে পুরুষের ভেদ, শরীরের গঠন অনুসারে রোগ নির্ণয় ইত্যাদি।
ইন্দ্রিয়স্থানঃ
এখানে 12টি অধ্যায় ও 378 সূত্র আছে। রোগের উৎপত্তি কেন্দ্র গুলির ভূমিকা সম্পর্কে বিশদ আলোচনা করা হয়েছে।
চিকিৎসাস্থানঃ
এখানে 30টি অধ্যায় ও 490টি সূত্র আছে। চরকসংহিতার সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো এই ি নামক অংশটি। এখানে বিভিন্ন রোগের কারণ ও তার প্রতিকারের উপায় আলোচিত হয়েছে। সেই সঙ্গে বহু দুরারোগ্য রোগের চিকিৎসা পদ্ধতিও এখানে নির্দিষ্ট হয়েছে।
কল্পস্থানঃ
এখানে 12 টি অধ্যায় ও 378 সূত্র আছে। দ্রব্যগুন বিচার ও বিভিন্ন গাছ-গাছড়া থেকে ঔষধ প্রস্তুত প্রণালি বিবরণ এই গল্পের মূল বিষয়বস্তু।
সিদ্ধিস্থানঃ
এখানে 12 অধ্যায় ও 700 সূত্র আছে। সিদ্ধিস্থান নামক অংশে রোগের বিভিন্ন রোগ থেকে আরোগ্য লাভের উপায় ঔষুধ সেবন ও অসেবন বিচার প্রভৃতি আলোচিত হয়েছে ।
Comments
Post a Comment
Haven't doubt please let me know.