হারিয়ে যাওয়া কালিকলম"গল্পে কালি কলমের প্রতি লেখকের ভালোবাসা কিভাবে ফুটে উঠেছে তা আলোচনা করো। ৫

 

১) হারিয়ে যাওয়া কালিকলম"গল্পে কালি কলমের প্রতি লেখকের ভালোবাসা কিভাবে ফুটে উঠেছে তা আলোচনা করো। ৫

উঃ শ্রীপান্থের লেখা হারিয়ে যাওয়া কালি কলম প্রবন্ধে দোয়াত ,কলম, কালি প্রভৃতি লেখার সরঞ্জামগুলিকে ঘিরে লেখকের মমতা ও ভালোবাসা যেভাবে ফুটে উঠেছে তা আলোচনা করা হলো।

           ছোটবেলায় লেখকরা নিজের বাড়িতে নিজের হাতে কালি কলম বানিয়ে নিতেন। সরু বাঁশের কঞ্চি কেটে কলম তৈরি করতেন। বাড়িতে রান্না করা কড়াই এর নিচে ভুসোকালি লাউ পাতা দিয়ে ঘষে তুলে পাথরের বাটিতে জল দিয়ে গুলে নিতেন। এইভাবে তারা কালি তৈরি করতেন।
    
         অবশেষে দেখা যায়, সেই কালি কলমের জায়গা করে নেয় ফাউন্টেন পেন। সেই পেনের প্রেমে পড়ে যান লেখক। এরপর বাজারে বলপয়েন্ট কলম আসলেও তার লেখকের মনে ধরেনি। যদিও সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে গিয়ে তার কাছেই লেখককে আত্মসমর্পণ করতে হল।যন্ত্রসভ্যতার হাত ধরে এর কম্পিউটার।দিন ফুরাল কলমের। এখন সবাই কম্পিউটারেই লেখে। কিন্তু লেখক এবং তার মতো কিছু মানুষ এখনও কলম ফেলে কম্পিউটারকে আপন করে নিতে পারেনি। এই যন্ত্রের দাপটে কালি, কলম হারিয়ে যাওয়ার যুগে লেখক বারবার তার ছেলেবেলার কলমের স্মৃতিকে আঁকড়ে ধরেছেন। এভাবেই "হারিয়ে যাওয়া কালি কলম" প্রবন্ধে লেখক কালি কলমের প্রতি স্মৃতিমেদুর ভালোবাসার প্রকাশ ঘটিয়েছেন।

২) ফাউন্টেন পেনের বাংলা নামকরণ কে করেছিলেন ? এর জন্ম বৃত্তান্ত সম্পর্কে লেখ।

উঃ ফাউন্টেন পেনের আদি নাম ছিল রিজার্ভার পেন। এর বাংলা নামকরণ করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। বাংলা নামকরণ করে এই পেনের নাম দিয়েছিলেন ঝরনা কলম।

প্রখ্যাত সাহিত্যের শ্রীপান্থ রচিত "হারিয়ে যাওয়া কালি কলম" প্রবন্ধে কালি কলমের প্রতি ভালোবাসার বর্ণনা দিয়েছেন। সেই সঙ্গে ফাউন্টেন পেনের জন্মবৃত্তান্তের বর্ণনাও দিয়েছেন। এই ফাউন্টেন পেনের জন্ম বৃত্তান্ত সম্পর্কে জানা যায় যে- 

     ফাউন্টেন পেনের আবিষ্কর্তা হলেন লুইস অ্যাডসন ওয়াটারম্যান। তৎকালীন অনেক ব্যবসায়ীর মত লুইস অ্যাডসন ওয়াটারম্যান দোয়াত, কলম নিয়ে কাজে বের হতেন। কোন একবার একজন সাইজের সঙ্গে তিনি চুক্তিপত্র সই করতে গিয়েছিলেন।দলিল কিছুটা লেখা হয়েছে,ঠিক সেই সময়েই দোয়াত হঠাৎ কাগজের ওপর ওপর হয়ে পড়ে গিয়েছিল। ফলে তিনি আবার কালির সন্ধানে বেরিয়েছিলেন। যখন কালি নিয়ে ফিরে আসলেন তখন শুনলেন যে, ইতিমধ্যেই আর একজন তৎপর ব্যবসায়ী সই -সাবুদ সাঙ্গ করে চুক্তিপত্র পাকা করে চলে গেছেন। তখন তিনি যথারীতি দুঃখিত হলেন এবং মনে মনে প্রতিজ্ঞা করলেন যে এর একটা বিহিত বের করতেই হবে।এরই ফলস্বরূপ জন্ম নিয়েছিল ফাউন্টেন পেন।

 ফাউন্টেন পেন কেনার অভিজ্ঞতাঃ  দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বেশ কয়েক বছর পর লেখক কলকাতার কলেজ স্ট্রিটের একটা নামী দোকানে ফাউন্টেন পেন কিনতে গিয়ে এক বিচিত্র অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছিলেন। 

             দোকানের সামনে গিয়ে তিনি ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গিয়েছিলেন। দোকানদার জানতে চান কি কলম ?- পার্কার,শএফআর্ড, ওয়াটারম্যান,সোয়ান,পাইলট সেই সঙ্গে কোনটার কী দাম তিনি আউড়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু লেখকের পকেটের অবস্থা দেখে দোকানদার বুঝতে পেরে যান । তাই তিনি সস্তার একটা জাপানি কলম নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। এই বলেই    নিব ঠিক আছে, দু এক ছাত্র লিখে দেখিয়ে দিলেন।


Comments

Popular posts from this blog

কর্ভাস (Carvas)প্রফেসর শঙ্কুর ডায়রি

বায়ুমণ্ডলের উষ্ণতা তারতম্যের কারণগুলি আলোচনা কর।

আদর্শ ফুলের গঠন চিত্র ( দশম শ্রেণী)