Environmental studies class12

 ১) সুস্থায়ী কৃষির কর্ম পরিকল্পনার উপর সংক্ষেপে লেখ।

উঃ সুস্থায়ী কৃষি কর্ম পরিকল্পনাঃ 

            সুস্থায়ী কৃষির কর্ম পরিকল্পনা গ্রহণের নানা উদ্দেশ্যগুলি নিম্নে আলোচনা করা হল- 

ক) বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে চাষবাসের মাধ্যমে গ্রামগুলিকে আর্থিকভাবে সমৃদ্ধ করতে হবে।

খ) দেশের প্রায় অর্ধেক অধিবাসী দারিদ্র সীমার নীচে রয়েছে। তাদের দারিদ্রতা দূর করা এবং কৃষির উন্নতির পথে বাধাগুলি  দূর করা।

গ) কৃষিজমিতে একাধিক ফসলের উৎপাদন করা। এছাড়া গ্রামের বেকার শ্রমিকরা কৃষিকাজে যাতে সুযোগ পায় তার ব্যবস্থা করা।

ঘ) দেশের সকল কৃষি অঞ্চলের জন্য সেচ, বিদ্যুৎ, রাস্তাঘাট ও বাজারের ব্যবস্থা করা।

সুবিধাঃ 

মোট উৎপাদন বৃদ্ধিঃ সুস্থায়ী কৃষির কর্ম পরিকল্পনার ফলে কৃষিজাত শস্যের উৎপাদন বহু ক্ষেত্রে বৃদ্ধি পেয়েছে। তৃতীয় পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনাকালে খাদ্যশস্যের মোট উৎপাদন ভারতবর্ষে যেখানে 8.2 কোটি টন ছিল, সেখানে ২০১২ থেকে ২০১৩ খ্রিস্টাব্দে তা বেড়ে ২৫.৪২ কোটি টন হয়েছে।

হেক্টর প্রতি ফলন বৃদ্ধিঃ উচ্চ ফলনশীল বীজ ব্যবহার, উপযুক্ত জলসেচ ও ব্যাপক পরিমাণে কীটনাশক ও রাসায়নিক সারের ব্যবহারের ফলে হেক্টর প্রতি ফলন বৃদ্ধি পেয়েছে।

গ্রামাঞ্চলে কৃষকদের সমৃদ্ধিঃ কৃষি জমি থেকে উৎপাদন বাড়ায় কৃষকদের আয় বৃদ্ধি পেতে থাকে। ফলে তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন ঘটে।

কর্মসংস্থান বৃদ্ধিঃ কৃষিতে সবুজ বিপ্লব ঘটার ফলে গ্রামের যুবক-যুবতীদের কাজের সুযোগ বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।


২) ফসলের প্রধান কয়েকটি রোগের রোগ সৃষ্টিকারী জীবের নাম নাম লেখ। তাদের লক্ষণ ও প্রতিকার আলোচনা কর।

উঃ ধানঃ ধানের ধসা বা ঝলসা রোগ সৃষ্টিকারী জীবাণু হলো জ্যান্থমোনাস ওরাইজি। 

লক্ষণ - পাতার ডগা থেকে কিনারা বরাবর পচন শুরু হয় এবং হলুদ হয়ে শুকোতে থাকে।

 প্রতিকারঃ আক্রান্ত গাছে 100 থেকে 150 ppm এগ্রিমাইসিন স্প্রে করতে হবে।

গমের ভূষা রোগঃ 


৩) পরিবেশের উপর কৃষি রাসায়নিকের প্রভাব ব্যাখ্যা কর।

উঃ কৃষিজমিতে ফসলের পাশাপাশি বেড়ে ওঠা আগাছা গুলিকে দমন‌ করার জন্য আগাছানাশক ব্যবহার করা হয়। বর্তমানে কৃষিক্ষেত্রে রাসায়নিক আগাছানাশকের ব্যবহারও ক্রশম বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগাছা নাশক ব্যবহারের ফলে নিচের ক্ষতিকারক প্রভাবগুলি লক্ষ্য করা যায়।

ক) কৃষি ক্ষেত্রে আগাছা নাশক প্রয়োগের ফলে অপকারী আগাছা গুলির সঙ্গে কিছু কিছু উপকারী আগাছাও ধ্বংস হয়ে থাকে।

খ) আগাছা নাশকের ক্ষেত্রে আগাছার সঙ্গে ফসল উদ্ভিদ কমবেশি ক্ষতি হয়ে যায়। 

গ) কৃষি জমিতে আগাছা নাশক প্রয়োগ করে জমির ph সহ অন্যান্য স্বাভাবিক উপাদানের পরিবর্তন ঘটিয়ে মাটির উর্বরতা হ্রাস করে থাকে।

পেস্টিসাইডের ক্ষতিকারক প্রভাবঃ 

ক) পরিবেশ দূষণ দিদিটি এবং অন্যান্য ক্লোরিন যুক্ত হাইড্রোকার্বন বাস্তুতন্ত্র ছড়িয়ে পড়ে এবং পরিবেশ দূষণ ঘটায়।

খ) জৈব বিবর্ধনঃ যে পদ্ধতিতে ক্ষতিকারক পেস্টিসাইড কোন প্রাণীদেহে সঞ্চারিত হয় এবং বিভিন্ন স্তরে এর ঘনত্বের পরিমাণ নিচে অবস্থিত ট্রাফিক স্তরের তুলনায় বেশি হয় তাকে জৈব বিবর্ধন বলে। জৈব বিবর্ধনের প্রত্যেক খাদ্যস্তরে পেস্টিসাইডের ঘনত্বের পরিমাণ পূর্ববর্তী স্তরের তুলনায় বেশি হয় খাদ্যশৃঙ্খলে

গ) পতঙ্গ শ্রেণীর খাদক ধ্বংসঃ DDT,এনড্রিন এবং অন্যান্য ক্লোরিন যুক্ত হাইড্রোকার্বনের ক্ষতিকারক প্রভাব থেকে পতঙ্গ শ্রেণীর বিভিন্ন খাদকের রক্ষা পায় না এইসব পেস্টিসাইড শুধু পেস্টকে হত্যা করেনা সঙ্গে তাদের খাদক জীবগুলিকে হত্যা করে থাকে।

জলাশয়ের উপর প্রভাবঃ বিভিন্ন ধরনের পেস্টিসাইড বৃষ্টির জলে ধুয়ে পুকুর বা নদীতে মেশে। এর ফলে জলের প্ল্যাঙ্কটন মারা যায়। ফলে জলাশয়ের প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হয়।

খাদ্য শৃঙ্খলের উপর প্রভাবঃ কৃষি ক্ষেত্রে বিভিন্ন কীটনাশক ব্যবহার করলে তার কুপ্রভাব উৎপাদক হয়ে প্রথম শ্রেণীর খাদক থেকে সর্বোচ্চ শ্রেণীর খাদক পর্যন্ত পৌঁছায় এর ফলে বাস্তুতন্ত্রে সকল খাদ্যস্তরের প্রাণীরাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

মানুষের শরীরে প্রভাবঃ কীটনাশক ব্যবহার করা ফল, সবজি দানাশস্য ইত্যাদি খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করলে মানুষের শরীরেও তার কুপ্রভাব পড়ে। পেস্টিসাইডের প্রভাবে মানুষের যকৃত ও স্নায়ুর রোগ হয়। দীর্ঘদিন ধরে পেস্টিসাইডযুক্ত খাদ্য গ্রহণ করলে ক্যান্সার সহ একাধিক জটিল রোগের সৃষ্টি হয়।



Comments

Popular posts from this blog

কর্ভাস (Carvas)প্রফেসর শঙ্কুর ডায়রি

বায়ুমণ্ডলের উষ্ণতা তারতম্যের কারণগুলি আলোচনা কর।

আদর্শ ফুলের গঠন চিত্র ( দশম শ্রেণী)