বাংলা ভাষাতত্ত্ব

 ১) আধুনিক বিশ্বে ভাষাবিজ্ঞানের ধারাগুলির সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।

উঃ আধুনিক বিশ্বে ভাষার উদ্দেশ্য, রীতিনীতিকে বোঝানোর জন্য তিনটি ধারা লক্ষ্য করা যায় -

১) বর্ণনামূলক ভাষাবিজ্ঞানঃ 

ক) এই প্রকার ভাষা বিজ্ঞানের ধারায় কোন একটি ভাষার গঠনগত দিক আলোচনা করা হয়।

খ) এই ভাষার আলোচনা একটিমাত্র কালের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে। তাই একে এককালিক ভাষাবিজ্ঞানও বলে। 

গ) এই পদ্ধতিতে ভাষায় ব্যবহৃত ধ্বনি, শব্দ,বাক্য বা বাক্যাংশ বিশ্লেষণের সময় তার অতীতকালের রূপ নির্ণয় করা হয় না। কেবলমাত্র গঠনগত দিকই আলোচিত হয়।

২) ঐতিহাসিক ভাষাবিজ্ঞানঃ 

ক) ভাষাবিজ্ঞানের এই প্রকার ধারায় কোন ভাষার উৎস, ইতিহাস ও তার ক্রমবিবর্তনের রূপরেখা আলোচিত হয়।

খ) এই প্রকার ধারায় ভাষার আলোচনা একটিমাত্র কালের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না। তাই একে কালক্রমিক ভাষাবিজ্ঞান বলে। 

গ) এই পদ্ধতিতে ভাষার ইতিহাস রচনার জন্য লিখিত তথ্য, প্রমাণ, প্রাচীন পুঁথি প্রভৃতির সাহায্য নেওয়া হয়।

৩) তুলনামূলক ভাষাবিজ্ঞানঃ 

ক) তুলনামূলক ভাষাবিজ্ঞানেও ভাষায় ব্যবহৃত ধ্বনির  উৎস, ইতিহাস ও ক্রমবিকাশের রূপরেখা আলোচিত হয়।

খ) এই প্রকার ধারায় ভাষার রূপগত বৈপরীত্য, ধ্বনিগত এক্য ও বিন্যাসগত সাদৃশ্যের দ্বারা একাধিক ভাষার সঙ্গে তুলনা করা হয়।

গ) এই পদ্ধতিতে কোনো ভাষার ভাষাগত দিক বিশ্লেষণ করা হয়। বর্তমানে ইহা comparative linguistics নামে পরিচিত।  

২) বাক্য কাকে বলে ?  বাক্যের গঠনগত শ্রেনীবিভাগ আলোচনা কর।

উঃ আকাঙ্ক্ষা,আসত্তি ও যোগ্যতা সমন্বিত শব্দ পাশাপাশি বসে মনের ভাব সম্পূর্ণরূপে প্রকাশ করলে তাকে বাক্য বলে।

         গঠনগত দিক অনুসারে বাক্য তিন প্রকার। তথা - ক) সরল বাক্য খ) জটিল বাক্য ও গ) যৌগিক বাক্য।

ক) সরল বাক্যঃ 

   যে বাক্যে একটি কর্তা ও একটি সমাপিকা ক্রিয়া থাকে তাকে সরল বাক্য বলে।

যেমনঃ গরু ঘাস খায়। 

জটিল বাক্যঃ 

        একটি প্রধান বাক্যের সঙ্গে যখন একাধিক অপ্রধান অংশ যুক্ত থাকে তখন তাকে জটিল বাক্য বলে। যেমন- যখন সন্ধ্যা হয় তখন পাখিরা বাসায় ফেরে। এই বাক্যে যখন ,তখন হলো অপ্রধান অংশ।

যৌগিক বাক্যঃ

               একাধিক বাক্য যখন সংযোজক অব্যয় দ্বারা যুক্ত হয়ে একটি বাক্যে পরিণত হয় তখন তাকে যৌগিক বাক্য বলে।

যেমন - সন্ধ্যা হয় এবং পাখিরা বাসায় ফেরে।

৩) প্রত্যয় কাকে বলে? এর শ্রেণীবিভাগ আলোচনা কর

উঃ এক বা একাধিক বর্ণ বা বর্ণ সমষ্টি শব্দ বা ধাতুর সাথে যুক্ত হয়ে নতুন শব্দ গঠন করে তাকে প্রত্যয় বলে।

          প্রত্যয় দুই প্রকারের-১)কৃৎ প্রত্যয় ও ২) তদ্ধিত প্রত্যয়। 

কৃৎ প্রত্যয়ঃ যে সকল প্রত্যয় ধাতুর পরে যুক্ত হয়ে নতুন শব্দ গঠন করে তাকে কৃৎ প্রত্যয় বলে। যেমন কৃ + তব্য = কর্তব্য। এখানে কৃ ধাতুর সঙ্গে তব্য প্রত্যয় যুক্ত হয়েছে তাই ইহা কৃৎ প্রত্যয়ের উদাহরণ।

তদ্ধিত প্রত্যয়ঃ যে সকল প্রত্যয় শব্দের পরে যুক্ত হয়ে নতুন শব্দ গঠন করে তাকে তদ্ধিত প্রত্যয় বলে। 

যেমন - রাম + আয়ণ = রামায়ণ। এখানে রাম শব্দের সাথে আয়ন প্রত্যয় যুক্ত হওয়ায় বলে ইহা তদ্ধিত প্রত্যয়ের উদাহরণ।



Comments

Popular posts from this blog

কর্ভাস (Carvas)প্রফেসর শঙ্কুর ডায়রি

বায়ুমণ্ডলের উষ্ণতা তারতম্যের কারণগুলি আলোচনা কর।

আদর্শ ফুলের গঠন চিত্র ( দশম শ্রেণী)