প্রাচীন ভারতের গণিতচর্চা বিষয়ে আলোচনা করো।
৩) প্রাচীন ভারতের গণিতচর্চা বিষয়ে আলোচনা করো।
ভূমিকাঃ
গণিত শব্দের অর্থ হলো সংখ্যা বা অংক গণনার পদ্ধতি। গণ শব্দের অর্থ হলো সমষ্টি সুতরাং ব্যষ্টি বা সমষ্টির দ্বারা নির্ণয় পদ্ধতির নাম হল গণিত। গণিত শাস্ত্রের উৎপত্তি নিয়ে পণ্ডিতগণ নানা মতামত ব্যক্ত করেছেন। কেউ বলেছেন ব্যাবিলন কেউ কেউ বলেছেন ভারতবর্ষেই গণিত এর উৎপত্তি হয়েছে।
শ্রেণীবিভাগঃ
গণিতের দুটি শাখা বিদ্যমান। একটি সংখ্যা গণিত অন্যটি আকৃতি গণিত। সংখ্যাগুণিতের পাটিগণিত ও বীজগণিত অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন আর আকৃতি গণিত জ্যামিতি অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
পাটিগণিতঃ
প্রাচীনকালে জ্যোতির্বিদেরা কোন ফলকে ধূলিস্তর তৈরি করে তাতে আঁকাআঁকি করে গণিত বিষয়ের সমাধান করতন। এগুলি ধূলিকর্ম নামে পরিচিত ।পদ্ধতিগতভাবে পাটিগণিত রচিত হয় প্রথম আর্য ভট্টের সময় থেকে। ভারতীয় পাটিগণিতের কুড়িটি পরিকর্ম ও আটটি ব্যবহারের কথা উল্লেখিত হয়েছে। কুড়িটি পরিকর্ম হল- সংকলিত, ব্যবকলিত, গুন, ভাগ, বর্গ, বর্গমূল, ঘণ ও ঘনমূল প্রভৃতি এবং আটটি ব্যবহার হলো মিশ্রক,শ্রেড়ী,ক্ষেত্র,রাত,চিতি,ক্রাকশিক,রাশি ও ছায়া।
বীজগণিতঃ
ভারতবর্ষে বীজগণিত আলোচনার সূত্রপাত হয় খ্রিস্টপূর্ব 2000 শতকের দিকে। শূল্বসূত্রে বীজগণিত বিষয় উল্লেখ আছে। এর প্রথম আচার্য হলেন পৃথুদক স্বামী। তবে ব্রহ্মগুপ্ত এই গণিতকে কুট্টক বলেছেন। বীজগণিতে গণিতবিদগণ আনন্দ দান করেন।
জ্যামিতিঃ
বৈদিককাল থেকে জ্যামিতির ব্যবহার দেখা যায়। যজ্ঞের বেদি তৈরিতে জ্যামিতির প্রয়োগ করা হতো। কাত্যায়ন মৈত্রায়ণী শূল্বসূত্রে জ্যামিতি প্রয়োগ করেছেন ।সরলরেখাকে ভাগ করা, ত্রিভুজকে ভাগ করা, সরলরেখা দ্বারা বর্গক্ষেত্র আঁকা, বর্গক্ষেত্রকে বৃত্ত করা ইত্যাদি জ্যামিতিক বিষয় শূল্বসূত্রে আছে।
গণিত শাস্ত্রের বিখ্যাত গ্রন্থঃ
প্রথম আর্যভট্টের আর্যভট্টীয়, ব্রহ্মগুপ্তের ব্রহ্মস্ফুটসিদ্ধান্ত, দ্বিতীয় ভাস্করাচার্যের সিদ্ধান্তশিরোমণি আর লীলাবতী, দ্বিতীয় আর্যভট্টের আর্যসিদ্ধান্ত হল গণিত শাস্ত্রের বিখ্যাত গ্রন্থ।
Comments
Post a Comment
Haven't doubt please let me know.