উচ্চমাধ্যমিক সাহিত্যের ইতিহাসে 5 নম্বর প্রশ্ন সহ উত্তর
1) রামায়নে বর্ণিত কাহিনী অনুসারে দাবা খেলার স্রষ্টা কে? দাবা খেলায় পশ্চিমবঙ্গে সাফল্য বিচার করো।
উত্তর: সুপ্রাচীন মহাকাব্য রামায়ণে বর্ণিত কাহিনী অনুসারে বলা যায়, রাবণের স্ত্রী মন্দোদরী হলেন দাবা খেলার স্রষ্টা।
পশ্চিমবঙ্গে দাবা খেলার সূচনা হয় ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে। ১৮৫০ খ্রিস্টাব্দে John cochrane এর উদ্যোগে এই খেলার সূত্রপাত হয়েছিল। Calcutta chess club হল ভারতবর্ষের প্রাচীনতম দাবা খেলার ক্লাব। ১৯৫৯ সালে West Bengal chess association গড়ে ওঠে। এই রাজ্যে দাবার শ্রীবৃদ্ধি ঘটানোই ছিল এই অ্যাসোসিয়েশন এর মূল উদ্দেশ্য। ইহা all India chess federation স্বীকৃত। জাতীয় দাবা চ্যাম্পিয়নশিপ এদেরই উদ্যোগে শুরু হয়।
১৯৬১ সালে প্রথম রাজ্যে দাবা চ্যাম্পিয়নশিপ অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিজয়ী হন প্রাণকৃষ্ণ কুন্ডু। রাজ্যে দাবা খেলায় সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী 6 জন গ্র্যান্ডমাস্টার, 9 জন ইন্টারন্যাশনাল মাস্টার, দুজন মহিলা গ্র্যান্ড মাস্টার এবং একজন ইন্টারন্যাশনাল মাস্টার রয়েছেন। 1991 সালে দিব্যেন্দু বড়ুয়া আমাদের রাজ্য থেকে প্রথম গ্র্যান্ড মাস্টার হন। তিনি তিনবার জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ হয়েছেন।এছাড়া মাত্র 19 বছর বয়সে গ্র্যান্ডমাস্টার হয়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন সূর্য শেখর গাঙ্গুলী। তিনি 2009 সালে এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ এ জয়ী হয়েছেন। বিশ্বনাথন আনন্দের সহযোগী হিসাবে ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ প্রতিযোগিতায় তিনি কাজ করেছেন।রাজ্যে অন্যান্য দাবা খেলোয়াড়দের মধ্যে রয়েছেন নীলোৎপল দাস, দীপ সেনগুপ্ত ,সপ্তর্ষি রায় চৌধুরী প্রমূখ।
2) বাংলা অভিধানে পট শব্দের অর্থ কি? বাংলার লোকশিল্পে এর গুরুত্ব লেখ।
উত্তর: বাংলা অভিধানে পট শব্দের অর্থ হলো চিত্র।
বাংলা লোকশিল্পে একটি প্রাচীনতম মাধ্যম হলো পট। প্রাচীনকালে বৌদ্ধ ভিক্ষুরা বুদ্ধদেবের জীবনী ও নানা জাতকের গল্প নিয়ে পট প্রদর্শন করতেন। এই চিত্রের বেশিরভাগই ছিল পৌরাণিক কাহিনী অথবা লোকগাথা কেন্দ্রিক। আমাদের দেশে মূলত বেদে সম্প্রদায়ের লোকেরা গ্রামে গ্রামে ঘুরে এইসব পটের কাহিনী বর্ণনা করতেন। বিভিন্ন ধর্মীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠানে বাংলার মানুষের কাছে বিনোদনের অন্যতম উপাদান ছিলো এই সমস্ত পটের গান। রামায়ণ ,মহাভারত ,পুরান, সত্যপীর প্রভৃতি পথ অবলম্বন করে গায়েনরা গান গাইতেন।
ঊনিশ শতকে বাংলায় প্রসিদ্ধ পেল কালীঘাট পট। এতে প্রধানত হিন্দু দেব-দেবীদের ছবি চিত্রিত হতো। সমাজের বিভিন্ন বিষয়কে সমালোচনা করে কালীঘাটের পট কে একটি সামাজিক গুরুত্বপূর্ণ দলিলে পরিণত করতে পেরেছিল পট শিল্পীরা। সেই সময় এই পটশিল্প অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল। এক আনা মূল্যের বিনিময়ে কেনার জন্য মানুষ সেখানে ভিড় জমাতো। প্যারিসেও কালীঘাট পট বিক্রি হয়েছিল। সেখানে স্বয়ং পিকাসো এই পট কিনেছিলেন। এইভাবে বাংলার লোকশিল্প পটচিত্র এক গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব বিস্তার লাভ করেছিল।
Comments
Post a Comment
Haven't doubt please let me know.