আফ্রিকা কবিতার প্রশ্ন উত্তর

 

                   আফ্রিকা

                            রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

১) প্রদোষ কাল শব্দের অর্থ কি?
উঃ সন্ধ্যা

২) কে সুন্দরের আরাধনা করছিল?
উঃ কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

৩) হায় ছায়াবৃতা"--কাকে ছায়াবৃতা বলা হয়েছে?
উঃ আফ্রিকাকে

৪) স্রষ্টা নতুন সৃষ্টিকে বারবার বিধ্বস্ত করেছিল কেন?
উঃ নিজের প্রতি অসন্তোষে

৫) অপরিচিত ছিল তোমার ------------।
উঃ মানবরূপ

৬) ধূলি কি রূপ নিয়েছিল?
উঃ রক্ত ও অশ্রুতে মিশে আফ্রিকার ধুলো পঙ্কিল রূপ নিয়েছিল।

৭) হিংস্র প্রলাপের মধ্যে সভ্যতার শেষ পুণ্যবানি কি ছিল?
উঃ ক্ষমা করো

৮) আসন্ন সন্ধ্যার শেষ রশ্মিপাতে কে এসে দাঁড়াবে?
উঃ যুগান্তরের কবি

৯) আফ্রিকাকে কোথা থেকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছিল?
উঃ প্রাচী ধরিত্রীর বুক থেকে

১০) কবির সংগীতে একই বেজে উঠেছিল?
উঃ সুন্দরের আরাধনা

৮) শিশুরা কোথায় খেলা করছিল? 
উঃ মায়ের কোলে 

৯) ধূলি কিরূপ আশ্রয় নিয়েছিল?
উঃ  রক্ত ও অশ্রুতে মিশে পঙ্কিল রূপ নিয়েছিল। 

১০) পায়ে কাঁটা মারা---------তলায়।
উঃ  জুতোর 

১১) গর্বে যারা অন্ধ তোমার------------।
উঃ সূর্য হারা অরন্যের চেয়ে 

১২) কে তোমার চির চিহ্ন দিয়ে গেল? 
উঃ তোমার অপমানিত ইতিহাস 

১৩) হায় ছায়াবৃতা------------ঘোমটার নিচে। 
উঃ কালো 

১৪) অপরিচিত ছিল তোমার--কি অপরিচিত ছিল?
উঃ  মানব রূপ 

১৫) আফ্রিকাকে কোথা থেকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছিল?
উঃ প্রাচী ধরিত্রীর বুক থেকে 

১৬) সমুদ্র পাড়ে সেই মুহূর্তে কি হচ্ছিল?
উঃ  পাড়ায় পাড়ায় মন্দিরে পূজোর ঘন্টা বাজছিলো অর্থাৎ চেতনাতীত মনে মন্ত্র জেগে উঠেছিল ।

১৭) চেতনাতীত মনে কে মন্ত্র জাগাচ্ছিল? 
উঃ সৃষ্টির প্রথম পর্বে প্রকৃতি তার দৃষ্টি অতীত যাদু-মন্ত্র জায়গা ছিল। 

১৮) এল ওরা লোহার হাতকড়ি নিয়ে-- কারা এসেছিল?
উঃ এখানে ইউরোপীয় নানা সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলোর কথা বলা হয়েছে। যেমন, ফ্রান্স, বেলজিয়াম, ব্রিটেন ,ইতালি, জার্মানি প্রভৃতি।

১৯)  কি নগ্ন করল আপন নির্লজ্জ অমানুষতা?
উঃ  সভ্যের বর্বর লোভ

২০)  কে সুন্দরের আরাধনা করছিল?
উঃ  কবি 

২১) হিংস্র প্রলাপের মধ্যে যুগান্তের কবির কথা কি হয়ে থাকবে? 
উঃ সভ্যতার শেষ পূণ্য বাণী 

২২) সভ্যের লোভ কেমন? 
উঃ বর্বর 

২৩) আজ যখন পশ্চিম দিগন্তে---- পশ্চিম দিগন্তে কি ঘটেছিল? 
উঃ পশ্চিম দিগন্তে অর্থাৎ পাশ্চাত্য দেশ গুলিতে ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ে মানুষের মধ্যে কার পাশবিক শক্তি বেরিয়ে এসে অশুভ ধ্বনিতে দিনের অন্তিমকাল ঘোষণা করেছিল।

ব্যাখ্যামূলক প্রশ্নের উত্তর দাও।

Madhyamic Bengali question and answer,Africa written by Rabindranath Tagore

১) কৃপণ আলোর অন্তঃপুরে, আফ্রিকাকে কে কিভাবে  বেঁধেছিল?

উঃ আলোচ্য অংশটি কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত আফ্রিকা কবিতায় আফ্রিকা মহাদেশকে বনস্পতি কৃপণ আলোয় বেঁধে রেখেছিল।
         আফ্রিকা মহাদেশ নিরক্ষীয় অঞ্চলে অবস্থিত। সেই জন্যই সেখানকার বিস্তীর্ণ অঞ্চল চিরহরিৎ অরণ্য পরিপূর্ণ। শুধু তাই নয় নানা প্রকার লতা ও আগাছা তেও এই অঞ্চল পরিপূর্ণ সেই নিবিড় অরণ্য ভেদ করে সূর্যের আলো প্রবেশ করতে পারে না এভাবেই প্রকৃতি যেন নিবিড় নিশ্চিদ্র পাহারায় আফ্রিকাকে বেঁধে রেখেছিল।

২) আফ্রিকা কবিতায় আফ্রিকা কিভাবে শঙ্কাকে হার মানাতে চাই ছিল, তা কবিতা অনুসরণে লেখ।

 উঃ  আফ্রিকা কবিতায় দেখা যায় দুর্গম, দুর্ভেদ্য আফ্রিকা মহাদেশ নিজেকে উপরে তুলে তাঁর বিভীষিকার প্রচণ্ড মহিমায় বিধ্বংসী তাণ্ডবলীলা আর প্রচন্ড শব্দ শঙ্কাকে  হার মানাতে চাইছিল--------
              "আপনাকে উগ্র করে বিভীষিকার প্রচণ্ড মহিমায়
               তাণ্ডবের দুন্দুভিনিনাদে।"

৩) গর্বে যারা অন্ধ তোমার সূর্য হারা অরন্যের চেয়ে--কাদের কথা বলা হয়েছে? তাদের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও

উঃ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত আফ্রিকা কবিতায় সারাবিশ্বের সাম্রাজ্যবাদী শক্তি যারা অত্যাচার ও শোষণ বঞ্চনার কাহিনীকে রূপ দিয়েছে এখানে তাদের কথাই বলা হয়েছে।
      অন্ধকারে আচ্ছন্ন দুর্গম আফ্রিকা মহাদেশ দীর্ঘকাল থেকে ইউরোপীয় শক্তির নজরের বাইরে ছিল। কিন্তু ঊনবিংশ শতাব্দীতে তারা আফ্রিকায় উপনিবেশ স্থাপন শুরু করে। এই শতাব্দীর শেষ দিকে আফ্রিকা ইউরোপের বিভিন্ন দেশের উপনিবেশ পরিণত হয়। ফলে তারা নির্লজ্জভাবে তারা আফ্রিকাকে শোষণ করতে থাকে এবং তাদের অধিকার হরণ করতে থাকে। একদিকে যেমন আফ্রিকা নানা প্রাকৃতিক সম্পদ লুঠ হতে থাকে অন্যদিকে মানবিক লাঞ্ছনাও ঘটতে থাকে।


৪) উদ্ভ্রান্ত সেই আদিম যুগে উদ্ভ্রান্ত আদিম যুগে কি ঘটেছিল কবিতা অনুসরণে লেখ।

উঃ আলোচ্য অংশটি বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত আফ্রিকা কবিতার থেকে নেওয়া হয়েছে। এখানে তিনি উপেক্ষার অন্ধকারে ডুবে থাকা আফ্রিকার প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ ঘটিয়েছেন। উদ্ভ্রান্ত আদিম যুগে আফ্রিকাকে কিভাবে অন্যান্য মহাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করেছিল, তা কবিতা অনুসরণে আলোচনা করা হল
             সৃষ্টির প্রথম দিকে আফ্রিকা নিবিড় অরণ্য পরিপূর্ণ ছিল। সূর্যের আলো অরন্যের পাতা ভেদ করে মাটিতে আসতে পারত না। তাই একে বলা হতো অন্ধকারাচ্ছন্ন মহাদেশ । আদিমকাল থেকে স্রষ্ঠা বাকি পৃথিবী থেকে আফ্রিকাকে বিচ্ছিন্ন করে তুলেছিল। স্রষ্টা নিজের প্রতি অসন্তোষে নতুন সৃষ্টিকে বারবার বিধ্বস্ত করছিলেন, তা আমরা কবিতা থেকেই জানতে পারি--
         "রুদ্র সমুদ্রের বাহু
          প্রাচী ধরিত্রীর বুক এর থেকে
          ছিনিয়ে নিয়ে গেলো তোমাকে, আফ্রিকা।"

৫) এল ওরা লোহার হাতকড়ি নিয়ে এলো তারা কিভাবে অত্যাচার করেছিল আফ্রিকা কবিতা লেখ।

উঃ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত আফ্রিকা কবিতার অন্তর্গত আলোচ্য অংশে ওরা বলতে ফ্রান্স বেলজিয়াম ব্রিটেনের ইতালি জার্মানি প্রকৃতি সাম্রাজ্যবাদী ইউরোপীয় শক্তির কথা বলা হয়েছে।
           অরণ্য ও আদিমতার অন্ধকারে নিমজ্জিত ছিল এই আফ্রিকা মহাদেশ। ক্রমশ যতদিন যেতে থাকে ইউরোপীয় নানা শক্তিগুলি সেখানে উপনিবেশ স্থাপন করতে শুরু করে। উনিশ শতকের শেষের দিকে প্রায় গোটা আফ্রিকা ইউরোপের উপনিবেশে পরিণত হয়। ফলে সেই আফ্রিকাকে লুট করে সেখানকার আদিম জনজতিদের ওপর চালাতে থাকে অকথ্য অত্যাচার। সেই আফ্রিকানদের যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠানো হতো,
 তাদেরকে নিয়ে পশুর মতো কেনাবেচা চলত। ফলে একদিকে দাসব্যবস্থা এবং অন্যদিকে ঔপনিবেশিকতা আফ্রিকাকে সামগ্রিকভাবে গ্রাস করে। এই ভাবেই রক্ত আর চোখের জলে ভিজে যায় আফ্রিকার মাটি। এককথায় সভ্যের বর্বরলোভ আফ্রিকায় তৈরি করে এক নির্লজ্জ অমানবিকতার ইতিহাস----
                  "সভ্যের বর্বর লোভ
                   নগ্ন করল আপন নির্লজ্জ ও অমানুষতা " 



।।           

Comments

Popular posts from this blog

কর্ভাস (Carvas)প্রফেসর শঙ্কুর ডায়রি

বায়ুমণ্ডলের উষ্ণতা তারতম্যের কারণগুলি আলোচনা কর।

আদর্শ ফুলের গঠন চিত্র ( দশম শ্রেণী)