গঙ্গা নদীর গতিপথ আলোচনা কর।

 প্রশ্নঃ গঙ্গা নদীর গতিপথ আলোচনা কর

উঃ ভারতবর্ষ হল একটি নদীমাতৃক দেশ। এখানে সর্বত্রই ছড়িয়ে রয়েছে ছোট বড়ো অসংখ্য নদী। এদের  মধ্যে ভারতের দীর্ঘতম ও প্রধান নদী হল গঙ্গা। এর গতিপথ সম্পর্কে নিম্নে আলোচনা করা হলো।


গঙ্গার উৎপত্তিঃ 
            গঙ্গা নদী কুমায়ুন হিমালয়ের গঙ্গোত্রী হিমবাহের গোমুখ গুহা থেকে উৎপন্ন হয়েছে । 

উচ্চগতিঃ 
          উৎপত্তিস্থানে এর নাম ভাগীরথী। প্রথমে পশ্চিমে এবং পরে দক্ষিণের সংকীর্ণ গিরিখাতের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হয়ে দেবপ্রয়াগের কাছে অলকানন্দর সঙ্গে মিলিত হয়েছে। এই দুই মিলিত স্রোত গঙ্গা নামে পরিচিত হয়েছে। গঙ্গোত্রী থেকে হরিদ্বার পর্যন্ত প্রায় 320 কিলোমিটার গঙ্গার উচ্চ বা পার্বত্য প্রবাহ। 

মধ্যগতিঃ
         গঙ্গা নদী দেবপ্রয়াগ থেকে প্রথমে পশ্চিমে এবং পরে দক্ষিণে প্রবাহিত হয়ে নাগটিব্বা ও শিবালিক পর্বত অতিক্রম করে  হরিদ্বারের কাছে সমভূমিতে অবতরণ করেছে।তারপর প্রথমে দক্ষিণে এবং পরে দক্ষিণ পূর্ব দিকে প্রবাহিত হয়েছে। উত্তরপ্রদেশ ও বিহার রাজ্যের মধ্যে অবস্থিত গঙ্গার মধ্যগতি।

গঙ্গার উপনদীঃ
        গঙ্গার মধ্য গতিতে  বহু উপনদী এসে মিশেছে। তাদের মধ্যে গোমতী, ঘর্ঘরা, গন্ডক, কোশী প্রভৃতি নদীগুলি হল গঙ্গার বাম তীরের উপনদী। গঙ্গার ডান তীরস্থ উপনদী গুলির মধ্যে যমুনা ও শোন উল্লেখযোগ্য। গঙ্গার উপনদী ও শাখা নদী গুলোর মধ্যে যমুনা শ্রেষ্ঠ। হরিদ্বার থেকে পশ্চিমবঙ্গের ধুলিয়ান পর্যন্ত গঙ্গার মধ্য গতি। 

গঙ্গার নিম্নগতিঃ 
           পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলায় গঙ্গার দ্বিধাবিভক্ত হয়ে ভাগীরথী (পশ্চিমবঙ্গে) ও পদ্মা (বাংলাদেশে) নামে যথাক্রমে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব দিকে প্রবাহিত হয়ে বঙ্গোপসাগরে পড়েছে। এখান থেকেই গঙ্গার নিম্নগতি ও বদ্বীপ প্রবাহের শুরু। ভাগীরথী ও পদ্মার মধ্যবর্তী সুন্দরবন বদ্বীপ পৃথিবীর সর্ববৃহৎ বদ্বীপ অবস্থিত। মুর্শিদাবাদ শহর থেকে হুগলি শহর পর্যন্ত গঙ্গার নাম ভাগীরথী এবং হুগলি শহর থেকে মোহনা পর্যন্ত গঙ্গার নাম হুগলি নদী। গঙ্গার নিম্ন প্রবাহে পূর্ব ও পশ্চিম থেকে বহু নদী এসে মিলিত হয়েছে, যেমন - দ্বারকা, ময়ূরাক্ষী, অজয়, দামোদর, রূপনারায়ণ, কংসাবতী, জলঙ্গী, মাথাভাঙ্গা প্রভৃতি। 











Comments

Popular posts from this blog

কর্ভাস (Carvas)প্রফেসর শঙ্কুর ডায়রি

বায়ুমণ্ডলের উষ্ণতা তারতম্যের কারণগুলি আলোচনা কর।

আদর্শ ফুলের গঠন চিত্র ( দশম শ্রেণী)