মাসি পিসি কবিতার প্রশ্ন উত্তর
মাসিপিসি
জয় গোস্বামী
অষ্টম শ্রেণির নবম পাঠ কবিতা মাসিপিসি থেকে অনুশীলনীর প্রশ্ন গুলি আলোচনা করা হলো।
১) নিচের প্রশ্নগুলির উত্তর দাও
১.১) জয় গোস্বামীর লেখা দুটি কবিতার বইয়ের নাম লেখ
উঃ প্রত্নজীব এবং বজ্রবিদ্যুৎ ভর্তি খাতা
১.২) জয় গোস্বামীর লেখা একটি উপন্যাসের নাম লেখ।
উঃ সেইসব শেয়ালেরা
২) নিচের প্রশ্নগুলির অতি সংক্ষেপে উত্তর দাও।
২.১) " অনেকগুলি পেট বাড়িতে"-- পেট এর আভিধানিক অর্থ কি? এখানে কি অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে?
উঃ জয় গোস্বামী রচিত "মাসিপিসি" কবিতা থেকে আলোচ্য অংশটি নেওয়া হয়েছে।
এখানে পেট শব্দটির আভিধানিক অর্থ হল, উদর। মাসিপিসি কবিতায় পেট শব্দটি সংসারের সদস্য অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে ।
২.২) "সাত জামেলা জোটায়"---- এখানে সাত শব্দটি ব্যবহারের কারণ কি?
উঃ জয় গোস্বামী রচিত "মাসিপিসি" কবিতার অন্তর্গত আলোচ্য অংশে সাত শব্দটির দ্বারা বহু অর্থে ব্যবহার হয়েছে। রেল বাজারের হোমগার্ডদের নানা ঝামেলার কথা বোঝাতেই সাত শব্দটি ব্যবহার করেছেন।
২.৩) মাহিনা শব্দটি কী অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে? শব্দটির অন্য অর্থ তোমার জানা আছে?
উঃ কবি জয় গোস্বামীর "মাসিপিসি" কবিতায় মাহিনা শব্দটি মাস অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে।
মাহিনা শব্দটি ফরাসি শব্দ মাহিয়ানা থেকে এসেছে। যার অর্থ মাসিক বেতন।গ্রাম্য উচ্চারণে শব্দটিকে মাহিনা বা মাইনে শব্দে পরিবর্তিত হতে দেখা যায়।
২.৪) কোন শব্দ থেকে এবং কি করে জষ্টি শব্দটি এসেছে?
উঃ জষ্টি শব্দটি জ্যৈষ্ঠ শব্দ থেকে এসেছে। এটি ধ্বনি পরিবর্তনের অভিশ্রুতি নিয়ম অনুসারে হয়েছে।
৩) নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর সংক্ষেপে লেখ।
৩.১) "শুকতারাটি ছাদের ধারে, চাঁদ থামে তালগাছে" এই পঙক্তিটির মাধ্যমে দিনের কোন সময়ের কথা বলা হয়েছে? তোমার উত্তরের পক্ষে যুক্তি দাও।
উঃ কবি জয় গোস্বামী রচিত মাসিপিসি কবিতা থেকে আলোচ্য অংশটি নেওয়া হয়েছে। এখানে রাতের শেষে ভোরের আলো ফোটার সময়ের কথা বলা হয়েছে।
ভোরের আকাশে শুকতারার আবির্ভাব ঘটে। অন্যদিকে চাঁদের তালগাছে থেমে যাওয়া মধ্য দিয়েও ভোরের ছবি ফুটে ওঠে। এই দুটি ঘটনার মধ্য দিয়ে কবি নিশ্চিতভাবে ভোরের কথাই বলতে চেয়েছেন।
৩.২)" দু-এক ফোঁটা শিশির তাকায় ঘাসের থেকে ঘাসে" এই পঙক্তিটিতে কোন ছবি ফুটে উঠেছে তা লেখ।
উঃ জয় গোস্বামী রচিত মাসিপিসি কবিতার অন্তর্গত আলোচ্য অংশে শীতের ভোরে শিশির ভেজা ঘাসের দৃশ্যের কথা বর্ণিত হয়েছে।
ঘাসের মাথায় এমন ভাবে শিশির জমেছে যেন মনে হচ্ছে একে অপরের দিকে তাকিয়ে আছে। ভোরের শিশির রোদ উঠলেই হারিয়ে যাবে। তখন মাসি পিসিরা চালের বস্তা নিয়ে অনেক দূরে চলে যাবে। রাত থাকতে ঘুম থেকে উঠে মাসিপিসিরা ঘরের সব কাজ সেরে বাইরের কাজে বেরিয়ে যায়। ঘাসের ওপরে জমে থাকা শিশির সেই ঘটনার সাক্ষী হয়ে থাকে।
৩.৩) "সাল মাহিনার হিসেব তো নাই"--- সাল মাহিনার হিসেব নেই কেন?
উঃ কবি জয় গোস্বামী মাসিপিসি কবিতায় লালগোলা বনগাঁ লোকালে বস্তাভর্তি চাল তুলতে আশা পরিশ্রমী মহিলাদের কথাই বলেছেন। সাল মাহিনার হিসাব না থাকার মধ্য দিয়ে কবি তাদের প্রতিদিনের কঠোর কাজের ধারাকে বোঝাতে চেয়েছেন। যাদের কোনো ছুটি বা বিশ্রাম নেই। প্রতিদিন একঘেয়েমি আর জীবনের জটিলতা ,যাদের কোনো আনন্দ নেই, যাদের কোনো অনুষ্ঠানের আরম্ভ নেই ,তাদের কাছে নতুন একটি দিনেরও কোন বিশেষ তাৎপর্য নেই। শ্রমজীবী লাঞ্ছিত এই নারীরা পরিবারের সব কাজ সেরে বারো মাস দিন রাত রোজগার করার জন্য বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়ে। তাদের কাছে সাল মাহিনার কোন হিসাব থাকে না।
৪) নিচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখ
৪.১)" শতবর্ষ এগিয়ে আসে---- শতবর্ষ যায়"-- এই পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে কবি কি বোঝাতে চেয়েছেন আলোচনা করো।
উঃ শতবর্ষ এগিয়ে আসা বা শতবর্ষ চলে যাওয়ার মধ্য দিয়ে কবি নানা সামাজিক অনুষ্ঠান বা উন্নয়নমূলক কাজের ধারার দিকটি কবিতায় তুলে ধরেছেন। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সমাজের নানা পরিবর্তনে সভ্যতার উন্নতি ঘটছে। কৃষি ক্ষেত্রে, শিল্পক্ষেত্রে, বাণিজ্য ক্ষেত্রে সর্বত্রই উন্নতি হলেও সমাজের সব অবস্থানের মানুষ সুফল লাভ করতে পারছে না। সেই উন্নতি-অগ্রগতির প্রভাব কেবল ধণী ও শিক্ষিত মানুষের জীবনকে প্রভাবিত করছে। পিছিয়ে পড়া মানুষের জীবনে উন্নতির কোন ছাপ পড়ে না । শ্রমজীবী মানুষের ছবি শতবর্ষ আসা বা চলে যাওয়ার হাওয়াতে বিশেষ বদলায় না। জীবন সংগ্রামে টিকে থাকার জন্য তাদের দিনরাত্রি কঠোর পরিশ্রম করতে হবে, এর কোন ব্যতিক্রম দেখা যায় না।
৪.২) মাসিপিসি কবিতায় এই মাসিপিসি কারা? তাদের জীবনের কোন ছবি এই কবিতায় তুমি খুঁজে পাও।
উঃ আধুনিক কবি জয় গোস্বামীর লেখা মাসিপিসি কবিতায় মাসি-পিসি হলেন, দরিদ্র শ্রমজীবী মহিলারা। যারা সংসার চালানোর তাগিদে রাত ভোর বিভিন্ন ট্রেনে আইনের চোখে ফাঁকি দিয়ে চালের বস্তা তুলে দেন।
আলোচ্য কবিতায় এই অসহায় কঠোর জীবনসংগ্রামী মাসিপিসিদের জীবনের ছবি আঁকা হয়েছে। রাতের অন্ধকার দূর হয়ে ভোরের আলো ফুটে ওঠার আগে তারা ঘুম থেকে উঠে পড়ে। শুকতারা যখন ছাদের ধারে এসে দাঁড়ায়, তাল গাছের আড়ালে যখন চাঁদ থেমে যায় তারা ছাড়া কাপড় কাচতে যায়। তারপরেই তারা কোলে কাঁখে পটলাপুঁটলিতে চালভর্তি করে স্টেশনের দিকে এগিয়ে যায় ।পরিবারের অনেক মানুষ তাদের রোজগারের উপরেই নির্ভরশীল। সামান্য রোজগারের তাগিদেই তাদের এত পরিশ্রম করতে হয়। রেলস্টেশনের হোমগার্ডের কবলে পড়ে নানা ঝামেলা তাদের পোহাতে হয়। কোন সামাজিক উৎসব অনুষ্ঠান তাদের জীবনে আলাদা আনন্দ নিয়ে আসতে পারে না। তারা যেন নিজেদের বেঁচে থাকার সামান্য তাগিদটুকু নিয়েই এই পৃথিবীতে বেঁচে থাকে ।
৫) নির্দেশ অনুযায়ী বাক্য পরিবর্তন কর
৫.১) ফুল ছুঁয়ে যায় চোখের পাতায় জল ছুঁয়ে যায় ঠোঁটে (জটিল বাক্য)
উঃ ফুল যেমন ছুঁয়ে যায় চোখের পাতায় তেমনি জল জমে যায় ঠোঁটে।
৫.২) ঘুমপাড়ানি মাসি পিসি রাত থাকতে উঠে ( জটিল বাক্য)
উঃ যখন রাত থাকে তখন ঘুমপাড়ানি মাসিপিসি ওঠে
৫ .৩) অনেকগুলো পেট বাড়িতে এক মুঠো রোজগার (যৌগিক বাক্য)
উঃ অনেকগুলো পেট বাড়িতে কিন্তু এক মুঠো রোজগার
৬) নিচের প্রশ্নগুলির উত্তর দাও
৬.১) মাসিপিসি কবিতাটি কার লেখা ?
উঃ জয় গোস্বামী
৬.২) অনেকগুলো পেট বাড়িতে--- এখানে পেট শব্দটি কী অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে?
উঃ বাড়ির সদস্য বা লোকজন বোঝাতে ব্যবহৃত হয়েছেক
৬.৩) কখনঘুম পাড়ানি মাসিপিসিদের ঘুম ভাঙ্গে?
উঃ রাত শেষ না হতেই ঘুমপাড়ানি মাসি পিসি ঘুম ভেঙে যায়
Comments
Post a Comment
Haven't doubt please let me know.