আকাশে সাতটি তারা -জীবনানন্দ দাশ class⁹ bengali
আকাশে সাতটি তারা
জীবনানন্দ দাশ
১) কামরাঙ্গা লাল মেঘ যেন মৃত মনিয়ার মত গঙ্গাসাগরের ঢেউয়ে ডুবে গেছে তাৎপর্য ব্যাখ্যা কর।
উঃ প্রকৃতি প্রেমিক কবি জীবনানন্দ দাশের "রূপসী বাংলা" কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত "আকাশে সাতটি তারা" কবিতা থেকে আলোচ্য অংশটি নেওয়া হয়েছে।
আকাশে সাতটি তারা কবিতাটিতে কবি দিনের একটি বিশেষ সময় সন্ধ্যাকে বেছে নিয়েছেন। কবির চোখে তার অতি প্রিয় রূপসী বাংলা সন্ধ্যার সময় যে রূপে ধরা দিয়েছে, তারই বর্ণনা প্রসঙ্গে আলোচ্য প্রসঙ্গটি এসেছে।
কবি বাংলার বুকে দিন শেষ হয়ে ধীরে ধীরে সন্ধ্যা নেমে আসাকে অপূর্ব ভাষায় বর্ণনা করেছেন। সূর্য অস্ত যাওয়ার পর তার শেষ আভাটুকু রাঙিয়ে দেয় আকাশের মেঘে। লাল টুকটুকে মেঘকে দেখে কবি পাকা কামরাঙ্গা ফলের কথা মনে করেছেন। সেই মেঘও যখন দিগন্ত রেখায় সাগরজলে বিলীন হয় কবির মনে হয় যেন এক মৃতমনিয়া পাখি জলে তার রক্তের রেসটুকু ছড়িয়ে দিয়ে ডুবে গেছে।
২) "আসিয়াছে শান্ত অনুগত বাংলার নীল সন্ধ্যা"- কবি বাংলার সন্ধ্যাকে যেভাবে বর্ণনা দিয়েছেন তা আলোচনা করো।
উঃ প্রকৃতিপ্রেমিক কবি জীবনানন্দ দাশের "আকাশে সাতটি তারা" কবিতা থেকে আলোচ্য প্রশ্নোদ্ধৃত অংশটি নেওয়া হয়েছে।
কবি গ্রাম বাংলার নির্জনতাকে অন্তরের অন্তঃকোন থেকে উপলব্ধি করেছেন। সেখানে শহরের মতো কোলাহল নেই। সেখানে বিরাজ করে শান্ত জীবনযাত্রা। সেই গ্রাম বাংলার বুকে সন্ধ্যা নেমে আসে শান্তভাবে। সেই সন্ধ্যাকালীন পরিস্থিতিতে গ্রামবাংলায় চাকচিক্য থাকেনা। সেখানে থাকে শুধু স্নিগ্ধতা। তাই সেই সন্ধ্যা অনুগত।
গ্রামবাংলায় সূর্য ডুবে গেলে যখন দিনের আলো ফিকে হয়ে আসে কবির মনে হয়, যেন এক কেশবতী কন্যা, সন্ধ্যার আকাশে উপস্থিত হয়েছে। তার ছড়িয়ে পড়া কালো চুলে ঘনিয়া আসে রাতের অন্ধকার। অতি ভাবনায় কবি পল্লী বাংলার সন্ধ্যাকে এক কাব্যরূপ দিয়েছেন। কবির চোখে মুখে তথা সারা শরীরকে যেন সেই কেশবতী কন্যার কেলদাম ছুঁয়ে যায় - "আমার চোখের 'পরে আমার মুখের পরে' চুল তার ভাসে।"বাংলার এই সান্ধ্যসৌন্দর্য পৃথিবীর অন্য কোথাও দেখা যায় না। নীল সন্ধ্যার এই সজীব রূপ- রস বঙ্গপ্রকৃতিকে মাতিয়ে রাখে। এভাবে আলোচ্য কবিতায় বাংলার সন্ধ্যাকালীন রূপের পরিচয় পাওয়া যায়।
Comments
Post a Comment
Haven't doubt please let me know.