সমুদ্র স্রোতের প্রভাব আলোচনা কর।
1) সমুদ্রস্রোতের প্রভাব আলোচনা কর।
উঃ সারা পৃথিবীব্যাপী সমুদ্র স্রোত জলবায়ু, মাছআহরণ, জাহাজ চলাচল প্রভৃতির ওপর গভীর প্রভাব ফেলে।
A) জলবায়ুর ওপর প্রভাবঃ
ক) উষ্ণতার প্রভাবঃ শীতল অঞ্চলের উপর দিয়ে উষ্ণ স্রোত বয়ে গেলে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে উষ্ণতা বাড়ে। উত্তর আটলান্টিক ড্রিফটের কারণেই উত্তর-পশ্চিম ইউরোপের উষ্ণতা শীতকালে বেশি হয়। তাই নরওয়ের হ্যামারফেস্ট বন্দর দিয়ে সারা বছর জাহাজ চলাচল করে।
খ) বৃষ্টিপাতঃ সমুদ্র উষ্ণ স্রোতের উপর দিয়ে প্রবাহিত বায়ু বেশি জলীয় বাষ্প গ্রহণ করে বলে বৃষ্টির সম্ভাবনা বাড়ে। উত্তর আটলান্টিক স্রোতের প্রভাবে উত্তর-পশ্চিম ইউরোপে এই কারণে বেশি বৃষ্টিপাত হয়।
গ) তুষারপাতঃ শীতল স্রোত প্রবাহিত অঞ্চলে উষ্ণতা অনেকটা কমে গেলে তুষারপাত হয়। ল্যাব্রাডর স্রোতের প্রভাবে নিউফাউন্ডল্যান্ড অঞ্চলে তুষারপাত ঘটে।
ঘ) মরুভূমি সৃষ্টিঃ ক্রান্তীয় মন্ডলে উপকূলের পাশ দিয়ে শীতল স্রোত বয়ে গেলে বৃষ্টির সম্ভাবনা প্রায় থাকে না। দীর্ঘকাল ধরে বৃষ্টি না হওয়ার কারণে সংশ্লিষ্ট অঞ্চল মরুভূমিতে পরিণত হয়।
ঙ) কুয়াশা, ঝড়-ঝঞ্ঝাঃ যেখানে উষ্ণ ও শীতল স্রোত মিলিত হয় সেখানে বৈপরীত্য উষ্ণতার প্রভাবে পরিচালনজনিত কুয়াশা এবং ঝড় ও ঝঞ্ঝার উৎপত্তি ঘটে। নিউফাউন্ডল্যান্ড অঞ্চলে শীতল ল্যাব্রাডর ও উষ্ণ উপসাগরীয় স্রোতের মিলনে প্রায়ই ঘন কুয়াশার সৃষ্টি হয়।
B) জলবায়ু পরিবর্তনে প্রভাবঃ জলবায়ু পরিবর্তনে সমুদ্র স্রোতের গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। এল নিনো বছরে পেরু, ইকুয়েডর উপকূলে উত্তর দিক থেকে গরম জলের স্রোত এসে ঢোকে। ফলে পেরু, ইকুয়েডরে প্রবল বৃষ্টিপাত ঘটে। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ায় অনাবৃষ্টির দেখা যায়।
C) মগ্নচড়ার সৃষ্টিঃ যেখানে উষ্ণ ও শীতল সমুদ্রস্রোত মেশে সেখানে শীতল স্রোতে বয়ে আসা হিমশৈল গলে যায়। হিমশৈলের সঙ্গে থাকা পদার্থ গুলি ক্রমাগত অগভীর অঞ্চলে সঞ্চিত হয়ে মগ্ন চড়ার সৃষ্টি হয়। গ্র্যান্ড ব্যাংক হলো পৃথিবীর বৃহত্তম মগ্নচড়া।
Comments
Post a Comment
Haven't doubt please let me know.