Bengali project nature study for class 9 second summetive evaluation

Bengali project for class 10.

Second summetive evaluation Bengali project 

Front page : 


  প্রকৃতি পাঠ (nature study)

ভূমিকাঃ প্রকৃতি পাঠ আসলে বিজ্ঞান ধর্মী অনুসন্ধিৎসার চূড়ান্ত রূপ। প্রকৃতির রূপ-রস-গন্ধ অনুধাবন করে ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার সংমিশ্রণে প্রকৃতিকে বিচার বিশ্লেষণ করা বিভিন্ন বিষয়ের ক্ষেত্রে যথেষ্ট গুরুত্ব পায়। উনবিংশ শতকে পাশ্চাত্য দেশের শিক্ষাঙ্গনে প্রকৃতি পাঠ একটি আন্দোলন পরিণত হয়েছে। আনুষ্ঠানিকভাবে না হলেও আমাদের দেশে প্রকৃতি পাঠের প্রচলন ছিল পূর্ব থেকেই। রবীন্দ্রনাথের প্রকৃতির কোলে শিক্ষার আবেদন- এর উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তার রচিত সাহিত্যে যেভাবে প্রকৃতির রূপ নিখুঁতভাবে ফুটে উঠেছে তা নিবিড় প্রকৃতি পাঠ ছাড়া অন্য কিছু নয় - 

               আজই এ প্রভাতে রবির কর 

               কেমনে পশিল প্রাণের পর 

               কেমন পশিল গুহার আঁধারে 

                  প্রভাতে পাখির গান।

 প্রকৃতি পাঠে যেমন গাছপালা, আবহাওয়া, নদনদী, চন্দ্র- সূর্যের নানা কার্যকলাপ সমন্বিত বিভিন্ন ঘটনার অনুসন্ধান পর্যবেক্ষণ মূল্যায়ন করা হয় তেমনি সাহিত্যের ক্ষেত্রে মানব প্রকৃতি বিশ্লেষণ প্রকৃতি পাঠের অঙ্গ হিসাবে বিবেচিত হয়।

প্রকৃতি পাঠের গুরুত্বঃ মানব জীবন প্রকৃতি ছাড়া একেবারেই অচল। প্রকৃতির জল-বায়ু, আলো- মাটি, গাছপালা, জীব বৈচিত্র সবই মানুষের জীবন ধারণের অঙ্গ। তাই নিজের প্রকৃতিকে জানা, বোঝা, তাকে রক্ষা করা অতি প্রয়োজন। শিক্ষালয়ে পড়াশোনা কেবল পুথি নির্ভর না হয়ে যদি প্রকৃতির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে করা যায় তবে সেই শিক্ষা হয় পূর্ণ শিক্ষা।

            বিষয় ভেদে প্রকৃতি পাঠের অভিমুখ ভিন্ন ধরনের। ভূগোল বিষয়ে কিংবা বিজ্ঞান বিষয়ে প্রকৃতি পাঠ যেমন হবে বাংলা বিষয়ে সেভাবে সম্ভব নয়। সাহিত্যক্ষেত্রে প্রকৃতি পাঠের গুরুত্ব অনেক বেশি অনুভূতি নির্ভর। মানুষ বা জীবকুলের সঙ্গে প্রকৃতির অন্যান্য উপাদানগুলির আদান-প্রদান, ভালোবাসা, প্রতিশোধ, প্রতিহিংসার যে সম্পর্ক রয়েছে সেগুলিকে নিজে বাস্তব বুদ্ধির দ্বারা নতুন রূপে অনুসন্ধান বিচার-বিশ্লেষণ করাই হলো প্রকৃতি পাঠ। অর্থাৎ এই প্রকৃতি পাঠ শিক্ষার্থীকে শিক্ষার থেকে আরও বেশি সচেতন করে তুলবে।

মূল্যায়ন পত্রঃ 

ক) শিক্ষক শিক্ষিকার তরফ থেকে নির্দেশঃ পথের দাবী পাঠ্যাংশের অন্যতম আকর্ষণীয় চরিত্র গিরিশ মহাপাত্র। পাঠ্যাংশ থেকে তার কার্যকলাপের একটি মুহূর্ত নির্বাচন করে ব্ল্যাকবোর্ডে লিখে দেওয়া হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা উদ্ধৃত অংশটি পাঠ করে গিরিশ মহাপাত্রের ব্যক্তিত্বের প্রকৃতি নিরূপনের চেষ্টা করবে।

শিক্ষার্থীর করণীয়ঃ 

প্রস্তাবনাঃ আমাদের বাংলা শিক্ষক /শিক্ষিকা দশম শ্রেণীর পাঠ্য "পথের দাবী" গদ্যাংশের নির্দিষ্ট একটি অংশ ব্ল্যাকবোর্ডে লিখে গিরিশ মহাপাত্রের ব্যক্তিত্বের প্রকৃতি নিরূপনের নির্দেশ দেন। ইতিমধ্যে "পথের দাবী" গদ্যাংশটি পাঠ করেছি, সমগ্র গদ্যাংশের বিষয়বস্তু উপলব্ধি করেছি। এবার নির্দিষ্ট অংশটি পড়ে শিক্ষক মহাশয়ের দেওয়া প্রশ্নগুলোর উত্তর লিখবো। ওই উত্তরের মধ্যে দিয়ে গিরিশ মহাপাত্রের চারিত্রিক প্রকৃতি আমাদের সামনে ফুটে উঠবে।

প্রদত্ত অনুচ্ছেদঃ তলোয়ার কর ঘাড় ফিরাইতে বুঝিল এই সেই গিরিশ মহাপাত্র সেই পাহাড়ে জামা সেই সবুজ রঙের ফুল মোজা সেই পাম সু এবং ছড়ি প্রভেদের মধ্যে এখন কেবল সেই বাঘ আঁকা রুমালখানি বুক পকেট ছাড়িয়া তাহার কন্ঠে জড়ানো মহাপাত্র সেই দিকেই আসিতেছিল। সম্মুখে আসিতেই অপূর্ব ডাকিয়া কহিল কিহে গিরিশ আমাকে চিনতে পারো কোথায় চলেচ? গিরিশব্যাস্তে একটা মস্ত নমস্কার করিয়া কহিল আগে চিনতে পারি বৈকি বাবুমশাই কোথায় আগমন হচ্ছেন?

      অপূর্ব সহাস্যে কহিল, আপাতত ভাবো যাচ্ছি, তুমি কোথায় ? গিরিশ কহিল আজ্ঞে এনাঞ্জাং থেকে দুজন বন্ধু নোক আসার কথা ছিল। আমাকে কিন্তু বাবু ঝুটমুট হয়রান করা।হাঁ কেউ কেউ আফিম, সিদ্ধি নুকিয়ে, কিন্তু আমি বাবু ভারি ধর্মভীরু মানুষ। কাজ কি বাপ জোচ্চুরিতে- কথায় বলে, পরধর্ম ভয়াবহ। লল্লাটের লেখা তো খন্ডাবে না।

নিম্নলিখিত প্রশ্নগুলির উত্তর দাওঃ 

ক) "আমি বাবু ধর্মভীরু মানুষ"- বক্তা কিভাবে তার ধর্ম রক্ষা করতে চান ?

খ) গিরিশ মহাপাত্র বিচিত্র সাজ-পোশাক পরে এসেছিল কেন ?

গ) উদ্ধৃত অংশে গিরিশ মহাপাত্রের চরিত্রের কোন কোন দিক প্রতিফলিত হয়েছে ?

উত্তরঃ 

ক) উক্তিটির বক্তা পথের দাবী গদ্যাংশের গিরিশ মহাপাত্র। গিরিশ মহাপাত্রের সাজ পোশাক ছিল বিচিত্র ধরনের। তার নেবুর তেল মাখা চুলের বিন্যাস ছিল ব্যতিক্রমী ।তার 

খ) পথের দাবী গল্পে গিরিশ মহাপাত্রের সাজ পোশাক ছিল বিচিত্র ধরনের তার লেবুর তেল মাখা চুলের বিন্যাস ছিল ব্যতিক্রমী তার গায়ে ছিল জাপানের সিল্কের রামধনু রঙের চুড়িদার পাঞ্জাবি আর পরনে বিলাতি মিলের কালো মকমল পাড়ের সূক্ষ শাড়ি রুমাল তার গলায় জড়ানো ছিল পায়ে সবুজ রঙের ফুল মজা বার্নিশ করা পাম সু আর হাতে ছিল হরিণের সিং এর হাতল দেয়া একটা বেতের ছড়ি তার এই বিচিত্র ধরনের কারণ হলো ছদ্মবেশ ধারণ। শিক্ষিত সংস্কৃতিবান পুরুষ যে কোন মতেই গিরিশ মহাপাত্রের মতো নিরীহ ফুলবাবু স্বভাবের হতে পারে না সেটা প্রমাণ করতেই অর্থাৎ পুলিশের চোখে ধুলো দিতেই গিরিশ মহাপাত্র এরকম অদ্ভুত ধরনের সাজ পোশাক পড়েছিল।

গ) উদ্ধৃত অংশে গিরিশ মহাপাত্রের চরিত্রের যেসব দিকগুলি ফুটে উঠেছে তা হল -

১) সংস্কৃতিবানঃ অপূর্ব সঙ্গে দেখা হওয়ায় সে যখন গিরিশ মহাপাত্রকে কিছু প্রশ্ন করে তখন গিরিশ মহাপাত্র তাকে প্রথমে নমস্কার জানিয়ে সৌজন্য বিনিময় করে। তারপর অপূর্বর প্রশ্নের উত্তর দেয়।

ধর্মভীরু মানুষঃ গিরিশ নেশাদ্রব্য পাচারের মতো অসৎ কাজে যুক্ত হয়ে নিজের নীতিবোধ বিসর্জন দিতে চায় না। সে নিজেই জানান-" আমি বাবু ভারী ধর্মভীরু মানুষ"।

বন্ধু বৎসলঃ অপূর্বর প্রশ্নের উত্তরে গিরিশ জানায়,এনাঞ্জাং থেকে আরও দুজন বন্ধু নোক আসবে। তাদের অভ্যর্থনা জানাতেই সে স্টেশনে এসেছে

অদৃষ্টে বিশ্বাসীঃ অপূর্বর সঙ্গে কথা প্রসঙ্গে পুলিশের হাতে হয়রানি হওয়ার কারণ হিসেবে গিরিশ অদৃষ্টকেই দায়ী করেছে।লল্লাটের লেখা তো আর খণ্ডাবে না।

           আলোচ্য বৈশিষ্ট্য গুলির নিরিখে বলা যায়, গিরিশ মহাপাত্র যে আসলে পলিটিক্যাল সাসপেক্ট সব্যসাচী মল্লিক তার আভাস পাওয়া যায়। সব্যসাচী মল্লিক তার ছদ্মরূপের মধ্যে যে বৈশিষ্ট্য ফুটিয়ে তুলতে চেয়েছেন সেগুলি আমাদের সামনে স্পষ্ট ফুটে উঠেছে। বস্তুত এর মধ্য দিয়ে সব্যসাচী মল্লিকের উপস্থিত বুদ্ধি, ছদ্মবেশ ধারণের নিপুনতা এবং দুর্জয় সাহসই ধরা পড়েছে।

মূল্যায়নঃ গিরিশ মহাপাত্র একটি ব্যতিক্রমী চরিত্র। "পথের দাবী" গদ্যাংশে এই চরিত্রটি সম্পর্কে একটা ধারণা জন্মায়। কিন্তু প্রকৃতি পাঠের এই বিষয়টি শিক্ষক নির্দেশিত পথে সম্পন্ন করলে চরিত্রটির আরও বেশ কিছু দিক খুঁজে পাওয়া যায়। ফলে আরও গ্রহণযোগ্য হয়ে ওঠে।

Comments

Popular posts from this blog

কর্ভাস (Carvas)প্রফেসর শঙ্কুর ডায়রি

বায়ুমণ্ডলের উষ্ণতা তারতম্যের কারণগুলি আলোচনা কর।

আদর্শ ফুলের গঠন চিত্র ( দশম শ্রেণী)