নব্যধর্ম আন্দোলন উত্থানের কারণগুলি লেখ
প্রশ্নঃ নব্যধর্ম আন্দোলন উত্থানের কারণগুলি লেখ।
সূচনাঃ
খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকে বৈদিক ব্রাহ্মণ্যধর্মের বিরুদ্ধে বিভিন্ন আন্দোলন শুরু হয়।এই সময়ে বেশকিছু নতুন ধর্মমতের উৎপত্তি ঘটে। এই যুগে ভারতে প্রায় ৬৩টি নব্য ধর্মের উত্থান ঘটেছিল।
আধ্যাত্মিক চেতনাঃ
বৈদিক যুগের শেষ দিকে মানুষের মনে আধ্যাত্মিক চেতনা বৃদ্ধি পায়। নানা সন্ন্যাসী গােষ্ঠীর প্রভাবে মানুষ কুসংস্কার থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য উদগ্রীব হয়ে ওঠে।
কৃষকদের অবস্থাঃ
খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। কিন্তু বৈদিক যাগযজ্ঞে প্রচুর পরিমাণ গাে-বলি শুরু হয়। ফলে কৃষি-অর্থনীতি সমস্যার সম্মুখীন হয়। এই সময় গৌতম বুদ্ধ ও মহাবীর জীবে দয়া এবং অহিংসার বাণী প্রচার করলে কৃষকশ্রেণি তাদের প্রতি আকৃষ্ট হয় ।
ব্যবসায়ীদের উচ্চাকাঙ্ক্ষাঃ
এই সময় নদীতীরবর্তী অঞ্চলে নতুন নগর প্রতিষ্ঠিত হয়। ফলে ব্যাবসাবাণিজ্য বৃদ্ধি পায়। ফলে বৈশ্য শ্রেণির আর্থিক সমৃদ্ধি ঘটে এবং তারা সামাজিক মর্যাদালাভের জন্য ব্রাহ্মণ্যবাদের অবসান কামনা করে।
আচার-অনুষ্ঠানঃ
বৈদিক যুগে ব্রাম্মণ্যধর্ম ছিল অত্যন্ত ব্যয়বহুল । ধর্মের প্রধান অঙ্গ ছিল যজ্ঞ। যজ্ঞ পরিচালনার জন্য সাধারণ মানুষকে প্রচুর অর্থ ব্যয় করতে বাধ্য করা হত। তাই তারা নতুন ধর্মে আকৃষ্ট হয়।
গণরাজ্য প্রতিষ্ঠাঃ
খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতাব্দীতে ভারতীয় রাজনৈতিক ক্ষেত্রে বেশ কিছু গণরাজ্যের প্রতিষ্ঠা হয়। সেই গণরাজ্যগুলিতে মতপ্রকাশের অবাধ স্বাধীনতার সুযোগ দেওয়া হয়। তা থেকেই সমাজে নব্য ধর্ম আন্দোলনের রাজনৈতিক পটভূমি তৈরি করেছিল।
ব্রাহ্মণদের বিরুদ্ধে ক্ষোভঃ
বৈদিক সমাজে ব্রাহ্মণের স্থান ছিল সবার ওপরে। সমাজ ও রাষ্ট্রে তারা বহু সুযােগসুবিধার অধিকারী ছিল। অন্যান্য শ্রেণির মধ্যে ব্রাহ্মণদের এই একচেটিয়া আধিপত্যের বিরুদ্ধে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছিল।
ব্রাম্মণ-ক্ষত্রিয় দ্বন্দ্বঃ
যুদ্ধে অংশগ্রহণ, রাষ্ট্রের নিরাপত্তা রক্ষা ও প্রশাসন পরিচালনার মতাে দায়িত্ব পালন করা সত্ত্বেও সমাজ ব্রাম্মণদের তুলনায় ক্ষত্রিয়দের অধিকার কম ছিল। এর বহিঃপ্রকাশ ঘটে নব্য ধর্ম আন্দোলনের মধ্য দিয়ে।
Comments
Post a Comment
Haven't doubt please let me know.