বাড়ির কাছে আরশিনগর লালন ফকির
বাড়ির কাছে আরশিনগর লালন ফকির ছোট প্রশ্ন ও উত্তর এখানে আলোচনা করা হয়েছে।
১) লালন পড়শির দর্শন চান কেন?
উঃ যম যাতনা দূর করার জন্য
২) পড়শী প্রকৃতপক্ষে কেমন ?
উঃ পড়শী হলো নিরাকার । তাকে দেখা যায় না। তিনি দেহাতীত। তার হাত, পা, কাঁধ ও মাথা কিছুই নেই।
৩)" আমি একদিনও না দেখিলাম তারে"-- তারে না দেখার কারণ কি?
উঃ যাকে দেখার সে কোনদিনও প্রকাশ পায় না।
৪)" আমার যম যাতনা"-- যম যাতনা কি ?
উঃ পার্থিব দুঃখ-শোক বা বিষয় যন্ত্রণা
৫) পড়শীকে কেন দেখা যায় না ?
উঃ পড়শি নিরবয়ব, তিনি নিরাকার, তাই তাকে দেখা যায় না ।
৬) "বলব কি সেই পড়শীর কথা"-- এখানে কবির কোন মনোভাব প্রকাশ পেয়েছে ?
উঃ পড়শির সম্পর্কে কবির বর্ণনাতীত, অবাঙমনসগোচর মনোভাব প্রকাশ পেয়েছে।
৭) লালনের পড়শি কোথায় কিভাবে থাকে ?
উঃ লালনের পড়শি লালনের সঙ্গেই তার দেহের মধ্যে একাত্ম হয়ে থাকে। আসলে কবি পড়শি বলতে ঈশ্বরকেই বুঝিয়েছেন।
৮) লালনের গান গুলি কি নামে পরিচিত ?
উঃ বাউল সংগীত
৯) "আমি বাঞ্ছা করি দেখবো তারি"-- কে কাকে দেখার বাসনা প্রকাশ করেছেন ?
উঃ কবি সাধক লালন ফকির তার বাড়ির কাছে আরশিনগর পড়শীকে দেখার বাসনা প্রকাশ করেছেন।
১০) কার বাড়ির কাছে আরশিনগর ?
উঃ লালন ফকিরের অনুভূতি অনুযায়ী প্রতিটি মানুষের দেহের মধ্যেই আরশিনগর বিদ্যমান।
১১)" সে আর লালন একখানে রয়"-- সে আর লালন কোথায় থাকে ?
উঃ আরশিনগরে
১২) বাড়ির কাছে আরশিনগর কবিতায় কবির কোন মূল অভিপ্রায় ব্যক্ত হয়েছে ?
উঃ আত্মজিজ্ঞাসা, আত্মসন্ধান ও পরমপুরুষের অনুসন্ধানের দিকটি ব্যক্ত হয়েছে ।
১৩) "পড়শী বসত করে"---পড়শি কোথায় থাকে ?
উঃ আরশিনগরে
১৪) "পড়শী যদি আমায় ছুঁতো"---পড়শি শব্দের অর্থ কি?
উঃ প্রতিবেশি
১৫) "গ্রাম বেড়িয়ে অগাধ পানি"-- বেড়িয়ে কথার অর্থ কি ?
উঃ বেষ্টন করে
১৬) "গ্রাম বেড়িয়ে অগাধ পানি"-- অগাধ পানি কথার অর্থ কি ?
উঃ অতি গভীর জল। আলোচ্য অংশে মানুষের মধ্যে লোভ লালসা প্রভৃতিকে অগাধ পানি বলা হয়েছে। আধ্যাত্ম সাধনার পথ কষ্টকর ও যন্ত্রণাদায়ক বোঝাতে কবি কথাটি ব্যবহার করেছেন।
১৭) আরশিনগরের পড়শীকে কিভাবে পাওয়া যাবে ?
উঃ কঠোর তপস্যা ও আত্ম উপলব্ধির মাধ্যমে পাওয়া যাবে।
১৮) লালন ও পড়শীর মাঝে--------------- ফাঁক ।
উঃ লক্ষ যোজন (১ যোজন= ৪ ক্রোশ আর ১ ক্রোশ=২মাইল এর কিছু বেশি)
১৯) ক্ষণেক ভাসে নীরে--- কথার অর্থ কি ?
উঃ দেহের চেতনা প্রবাহে ভসে ।
২০) পড়শীর হস্তপদ স্কন্ধ মাথা না থাকায় তাকে কি বলে?
উঃ নিরাকার বা নীরবয়ব
নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর দাও
পূর্ণমান -৫
১) আমি একদিনও না দেখিলাম তারে - কে কাকে দেখেনি ? তার আক্ষেপের কারণ কি?
উঃ বাউল সাধক কবি লালন ফকির তার বাড়ির কাছে আরশিনগর কবিতায় বলেছেন যে, তার মনের মানুষ অর্থাৎ ঈশ্বরকে তিনি দেখেননি।
লালন ফকির ছিলেন একজন বাউল সাধক। বাউলদের সাধনাই হল দেহকেন্দ্রিক। দেহের মধ্যেই তারা ঈশ্বরের সন্ধান করেন। সেই ঈশ্বরকেই কবি মনের মানুষ বলেছেন। বাউলরা বিশ্বাস করেন যে, নিজেকে জানলে সবকিছুই জানা সম্ভব। কিন্তু সেই মনের মানুষের সন্ধান পাওয়া খুব সহজ নয়।কারণ মানুষের মনের মধ্যে আছে লোভ,লালসা ও বিষয় কামনা। এগুলাই মানুষকে ঈশ্বরের কাছে পৌঁছাতে বাধার সৃষ্টি করে। কিন্তু কবি সেই ঈশ্বরকে দেখার বাসনায় বলেছেন -
" আমি বাঞ্ছা করি দেখবো তারি
কেমনে সে গাঁয় যাই রে।"
যেহেতু মনের মধ্যেই ঈশ্বর অবস্থান করেন তবুও তাদের মধ্যে রয়েছে লক্ষ যোজন ফাঁক।কবি কোনো প্রকারেই সেই ঈশ্বরকে দেখতে পাচ্ছেন না। আসলে বাউলদের সন্ধানি হল সাধনা। সেই সাধনা প্রকৃতপক্ষে নিজের ভিতরে থাকা ঈশ্বরের সাধনা। সারাজীবন ধরে সাধনা করেও সাধক হয়তো সেই মনের মানুষের সান্নিধ্য লাভ করতে পারেন না। ঈশ্বরকে না দেখার কারণেই কবির মনে এরূপ আক্ষেপের সৃষ্টি হয়েছে।
Comments
Post a Comment
Haven't doubt please let me know.