আর্যভট্ট ও বরাহমিহিরের অবদান আলোচনা কর।

 

সংস্কৃত সাহিত্যের ইতিহাস

সংস্কৃত সাহিত্যের ইতিহাস দ্বাদশ শ্রেণীর 5 নম্বর প্রশ্ন ও উত্তর আলোচনা

History literature of Sanskrit class 12 broad question and answer


১) জ্যোতির্বিজ্ঞানী হিসাবে আর্যভট্টের অবদান আলোচনা করো।

অথবা

আর্যভট্ট সম্পর্কে একটি নাতিদীর্ঘ প্রবন্ধ রচনা করো।

ভূমিকাঃ

     ভারতীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানের ইতিহাসে আর্যভট্ট একজন উজ্জ্বলতম জ্যোতিষ্ক। আর্যভট্টের অবদান ভারতীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানকে বিশ্বের দরবারে গৌরবের আসনে অধিষ্ঠিত করেছে। তাকে প্রাচীন ভারতীয় জ্যোতির্বিদ্যার প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা বলা হয়। তিনি ছিলেন ভারতের প্রথম জ্যোতির্বিজ্ঞানী।

লেখক পরিচিতিঃ 

           অলবিরুনির বিবরণ অনুসারে জানা যায়, আর্যভট্ট পাটলিপুত্রের অন্তর্গত কুসুমপুরের অধিবাসী ছিলেন। জ্যোতির্বিদ সমাজে তিনি বৃদ্ধ আর্যভট্ট এবং সর্ব সিদ্ধান্তগুরু নামেও পরিচিত ছিলেন। আনুমানিক 476 খ্রিস্টাব্দে তার আবির্ভাব হয়েছিল।

গ্রন্থসমূহঃ 

     তিনি তিনটি গ্রন্থ রচনা করেছিলেন। গ্রন্থগুলি হল--১) আর্যভট্টীয় ২) আর্যাষ্টশতক এবং ৩) দশগীতিকা সূত্র 

গ্রন্থের বিষয়বস্তুঃ 

আর্যভট্ট সিদ্ধান্ত জ্যোতিষ বা গণিত বিষয়ক দুটি গ্রন্থ রচনা করেছিলেন। প্রথমটি হলো আর্যভট্টীয় এবং দ্বিতীয় গ্রন্থটি হল, প্রথম গ্রন্থের পরিমার্জিত রুপ,যা আর্যসিদ্ধান্ত নামে প্রসিদ্ধ। দ্বিতীয় গ্রন্থটি আবার দুটি অংশে বিভক্ত----প্রথম অংশটি গীতিকা ছন্দযুক্ত । এতে দশটি শ্লোক আছে। তাই এর নাম দশগীতিকা সূত্র। আর গ্রন্থের দ্বিতীয় অংশটি আর্যা ছন্দের 108 টি শ্লোক আছে। তাই ইহা আর্যাষ্টশতক নামে পরিচিত। এই আর্যাষ্টশতক আবার তিনটি ভাগে বিভক্ত গণিতপাদ,কালক্রিয়াপাদ ও গোলপাদ। 

উপসংহারঃ

     জ্যোতির্বিজ্ঞানী আর্যভট্ট জ্যোতির্বিজ্ঞান সংক্রান্ত অজস্র সিদ্ধান্ত ও তথ্য প্রদান করেছেন। এছাড়াও বর্গমূল ঘনমূল, সমান্তর শ্রেণীর যোগফল, বৃত্তের পরিধির সঙ্গে তার ব্যাসের অনুপাত ত্রিকোণমিতির মান প্রভৃতি আবিষ্কারের জন্য চিরদিন তিনি স্মরণীয় হয়ে আছেন, থাকবেন। তিনি ভারতীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানকে বিশ্বের দরবারে গৌরবের আসনে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। 


২) ভারতীয়  জ্যোতির্বিজ্ঞানের ইতিহাসে বরাহমিহিরের স্থান লেখ।

উঃ ভূমিকাঃ ভারতীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানের ইতিহাসে বরাহমিহির বিশিষ্ট স্থান অধিকার করে আছেন। তারই হাত ধরে প্রাচীন ভারতের ফলিত জ্যোতিষ শাস্ত্রের সমৃদ্ধি ঘটেছিল। তাকেই ভারতবর্ষের জ্যোতির্বিজ্ঞানের জনক বলা হয়। 
খ) কবি পরিচয়ঃ ভারতীয় সংস্কৃতির সুবর্ণ যুগে মগধের এক ব্রাহ্মণ পরিবারে বরাহমিহির জন্ম গ্রহণ করেছিলেন তার পিতার নাম আদিত্য দাস। তিনি 505 থেকে 587 খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত বর্তমান ছিলেন।
গ) রচনাবলীঃ বরাহমিহির অনেক গ্রন্থ রচনা করেছিলেন, তার মধ্যে পঞ্চসিদ্ধান্তিকা ও বৃহৎ সংহিতাই প্রধান। তিনি জ্যোতিষশাস্ত্রের ওপর আরও যেসব বই লিখেছিলেন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো বৃহজ্জাতক, লঘুজাতক প্রভৃতি।
ঘ) পঞ্চসিদ্ধান্তিকাঃ 
               বরাহমিহির রচিত পঞ্চসিদ্ধান্তিকা হল একটি জ্যোতির্বিজ্ঞান বিষয়ক গ্রন্থ। গ্রন্থটি রচিত হয়েছিল ৫৭৫ খ্রিস্টাব্দে। ইহা কোন মৌলিক গ্রন্থ নয়। ইহা একটি সংকলন গ্রন্থ। এই গ্রন্থের মধ্যে গ্রীক, মিশর ও ভারতীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানের সারাংশ লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। সমগ্র গ্রন্থটি কয়েকটি অংশে বিভক্ত। এই অংশগুলি সিদ্ধান্ত নামে পরিচিত। এই পাঁচটি সিদ্ধান্ত হল সূর্যসিদ্ধান্ত, রোমক সিদ্ধান্ত, পৌলিশ সিদ্ধান্ত,বাশিষ্ঠ সিদ্ধান্ত এবং পৈতামহ সিদ্ধান্ত ।
বৃহৎ সংহিতাঃ 
          বৃহৎসংহিতা হলো একটি মৌলিক জ্যোতিশাস্ত্র বিষয়ক গ্রন্থ। ইহা একটি ফলিত জ্যোতিষ শাস্ত্র। গ্রন্থটি পদ্যাকারে রচিত। এই গ্রন্থে মোট ১০৬ টি অধ্যায় আছে। বিষয়বৈচিত্রে গ্রন্থটি বিশ্বকোষ চরিত্রের। গ্রহণের গতি, আবহবিদ্যা, বৃষ্টিপাত ,শস্য উৎপাদন, ভৌগোলিক বৃত্তান্ত, জাতকের জীবন লক্ষণ, প্রতিমা লক্ষণ, বিবাহ লগ্নাদি নির্ণয়, ধর্মানুষ্ঠান প্রভৃতি বিষয়ে উপদেশ আলোচিত হয়েছে। এছাড়া পশু পাখির ডাকের মধ্যে নিহিত ভবিষ্যৎ সংকেতের কথা এবং নানা পাথরের লক্ষণ ও পরীক্ষার কথা এখানে বলা হয়েছে।

Comments

Popular posts from this blog

কর্ভাস (Carvas)প্রফেসর শঙ্কুর ডায়রি

বায়ুমণ্ডলের উষ্ণতা তারতম্যের কারণগুলি আলোচনা কর।

আদর্শ ফুলের গঠন চিত্র ( দশম শ্রেণী)