সিরাজদ্দৌলা ও অভিষেক প্রশ্ন ও উত্তর
সিরাজদ্দৌলা
শচীন্দ্র নাথ সেনগুপ্ত
1 "জাতির সৌভাগ্য -সূর্য আজ অস্তাচলগামী"-- এখানে কোন জাতের কথা বলা হয়েছে ? এরূপ বলার কারণ কি ?
উঃ নাট্যকার শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত রচিত সিরাজউদ্দৌলা নাটকের অন্তর্গত আলোচ্য অংশে জাতি বলতে সমগ্র বাঙালি জাতির কথাই বলা হয়েছে।
মাত্র পনেরো মাস রাজত্ব সামলেই সিরাজ বুঝতে পারেন এক রাজনৈতিক চক্রান্তে বেশ কছু বিশ্বাসঘাতকে তার চারপাশ ভরে গিয়েছে। বাংলার নবাবের বিরুদ্ধে এক গভীর ষড়যন্ত্র চলছে, যার একদিকে ছিল ঘষেটি বেগম এবং অন্যদিকে ছিল মীরজাফর, রায়দুর্লভ ও জগৎশেঠের দল । অল্প দিনের মধ্যেই তিনি মানুষের নির্মমতার পরিচয় পেয়েছেন, দেশ ও জাতির অনিশ্চয়তা অনুভব করেছেন। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ক্রমশ সৈন্য সমাবেশ করেছে এবং তারা উদ্ধত হয়ে নবাবকে অস্বীকার করে নিজেদের শক্তি প্রদর্শন করেছে । সিরাজ বুঝেছে তার বিশ্বাসঘাতক সভা- পরিষদের সাহায্যেই জাতির স্বাধীনতার সূর্য অস্ত যেতে বসেছে । তবুও তিনি তাদের শাস্তি না দিয়ে একত্রিত হয়ে কোম্পানির শক্তিকে পরাস্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন । জাতির স্বাধীনতাকে তিনি সূর্যের মতো প্রদীপ্ত দেখতে চেয়েছেন । জাতির স্বাধীনতাকেই নবাব জাতির সৌভাগ্য বলে বিবেচনা করেছেন।
২) "জানো এর শাস্তি কি?"--- এর বলতে কোন কাজের কথা বলা হয়েছে ? তার শাস্তি সম্পর্কে কী ধার্য করা হয়েছিল ?
উঃ আলোচ্য অংশটি শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত রচিত সিরাজউদ্দৌলা নাটক থেকে নেওয়া হয়েছে । এখানে সিরাজদৌলা ওয়াটসকে উদ্দেশ্য করে কথাটি বলেছেন।কারন কোম্পানির প্রতিনিধি হয়ে ওয়াটস সিরাজের রাজদরবারে থেকে আলিনগরের সন্ধির শর্ত ভঙ্গ করেছিলেন।
ইংরেজদের বাণিজ্যিক প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল ফরাসীরা। তাই বাংলার মাটি থেকে তাদেরকে উৎখাত করার অভিপ্রায় ছিল ওয়াটসের । এই জন্য তিনি অ্যাডমিরাল ওয়াটসনকে পত্র লিখেন। নবাবের উপর ভরসা না রেখে তিনি ফরাসিদের ঘাঁটি চন্দননগর আক্রমণের সুপারিশ করেন। তার ভিত্তিতেই অ্যাডমিরাল তাদের ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা সম্পর্কে একটি পত্রে লিখে জানান । ওই চিঠিতে বলা হয় যে-- কলকাতায় অধিক সৈন্য সমাবেশ করে বাংলার বুকে এমন আগুন ইংরেজরা জ্বালাবেন গঙ্গার জল দিয়ে নেভানো যাবে না ।
এছাড়া তিনি বাংলার রাজদরবারে থেকে তার সভাসদদের তারই বিরুদ্ধে উত্তেজিত করেছে।এই অভদ্রতার ঔদ্ধত্যের উপযুক্ত শিক্ষা দেওয়ার জন্য নবাব তাকে বন্দী করার জন্য দরবার কক্ষে উপস্থিত করেছেন। তাকে বন্দি করে তোপের মুখে উড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখালেও বাস্তবে সিরাজদৌলা কোন রকম শাস্তি মূলক ব্যবস্থা নেননি । তিনি তার দরবার থেকে বিতাড়িত করেই ক্ষান্ত হয়েছিলেন।
৩) "সাজিছে রাবণরাজ।"--- রাবণ রাজা সাজছেন কেন ? তার এই সাজের বর্ণনা দাও।
উঃ মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত অভিষেক কবিতার অন্তর্গত আলোচ্য অংশটি । এখানে দেখা যায়, প্রিয় পুত্র বীরবাহুর মৃত্যু সংবাদ শুনে রাবণ রাজ প্রথমে শোকে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছিলেন। তারপর তিনি শোকাশ্রুকে প্রতিশোধের অগ্নিতে পরিণত করেছিলেন। প্রিয় পুত্রের মৃত্যুর প্রতিশোধের জন্য যুদ্ধ সজ্জায় সজ্জিত হয়ে ছিলেন। পুত্র হত্যাকারীকে উচিত শিক্ষা দেওয়ার জন্যই তিনি এ রূপ ধারণ করেছিলেন।
রাবনের রণসজ্জা কালে রণ দামামা বেজে উঠেছিল। হাতি, অশ্ব,রথ এবং পদাতিক এই চতুরঙ্গ বাহিনীর হুংকারে চারিদিক কম্পিত হয়ে উঠেছিল। সোনার আভা প্রতিফলিত করে স্বর্ণালঙ্কার কৌশিক ধ্বজা আকাশে উড়ছিল। সব মিলিয়ে আসন্ন মহাসংগ্রাম এর সংকেত প্রকাশিত হয়েছিল।
Comments
Post a Comment
Haven't doubt please let me know.