অষ্টম শ্রেণীর ইতিহাস দ্বিতীয় অধ্যায়
প্রশ্নঃ হায়দার আলী ও টিপু সুলতানের সঙ্গে ইংরেজদের সম্পর্ক আলোচনা কর।
অথবা
ইঙ্গ-মহীশূর যুদ্ধের বিবরণ দাও।
উঃ পূর্ব ভারতে আধিপত্য স্থাপনের পর থেকে ইংরেজ শক্তির দ্রুত বিস্তার ঘটতে থাকে। সেই সময় ভারতে মহীশূর ও মারাঠা রাজ্য দুটি ছিল ইংরেজদের সাম্রাজ্য বিস্তারের পথে প্রধান বাধা। সেই সময় মহীশূর রাজ্যে হায়দার আলী ক্ষমতা বৃদ্ধি ও রাজ্য বিস্তার করতে থাকলে ইংরেজদের অস্বস্তির কারণ হয়ে ওঠে।
প্রথম ইঙ্গ -মহীশূর যুদ্ধঃ
হায়দার যখন মারাঠাদের সঙ্গে যুদ্ধে ব্যস্ত সেই সময় ইংরেজরা হায়দ্রাবাদের নিজামের সঙ্গে মিলিত হয়ে মহীশূর রাজ্য আক্রমণ করে। ফলে প্রথম ইঙ্গ মহীশূর যুদ্ধের সূত্রপাত হয়। পরাজয়ের পর মাদ্রাজের সন্ধি অনুসারে এই যুদ্ধের অবসান হয়। কিন্তু এই সন্ধি বেশিদিন স্থায়ী হয়নি।
দ্বিতীয় ইঙ্গ মহীশূর যুদ্ধঃ
ইংরেজরা হায়দারের রাজ্যের অন্তর্গত ফরাসি উপনিবেশ আক্রমণ করায় হায়দার যুদ্ধ ঘোষণা করলে দ্বিতীয় ইঙ্গ মহীশূর যুদ্ধ শুরু হয়( ১৭৮০ - ৮৪ খ্রিস্টাব্দে)। এই যুদ্ধের সাফল্যের মুখে হায়দারের হঠাৎ মৃত্যু হয়। তখন হায়দারের পুত্র টিপু সুলতান যুদ্ধ চালিয়ে যান। ইংরেজরা এই যুদ্ধে পরাজিত হয়ে ম্যাঙ্গালোরের সন্ধি (১৭৮৪ খ্রি:) করতে বাধ্য হয়।
তৃতীয় ইঙ্গ মহীশূর যুদ্ধঃ
টিপুর ফরাসি প্রীতি ইংরেজদের ভয়ের কারণ হয়ে ওঠে। টিপু ইংরেজদের মিত্র ত্রিবাঙ্কুর রাজ্য আক্রমণ করলে তৃতীয় ইঙ্গ মহীশূর যুদ্ধের সূত্রপাত হয় (১৭৯০ খ্রিস্টাব্দ)। এই যুদ্ধে পরাস্ত হয়ে টিপু তৎকালীন গভর্নর জেনারেল কর্নওয়ালিসের সঙ্গে শ্রীরঙ্গপত্তমের সন্ধি (১৭৯২ খ্রি:) করতে বাধ্য হন। এই সন্ধি অনুসারে টিপু তার রাজ্যের কিছু অংশ ইংরেজ নিজাম ও মারাঠাদের ছেড়ে দেন।
চতুর্থ ইঙ্গ মহীশূর যুদ্ধঃ
শ্রীরঙ্গপত্তমের সন্ধির পর টিপু তার গৌরব পুনরুদ্ধারের জন্য ফ্রান্স, কাবুল প্রভৃতি দেশে সাহায্য চেয়ে দূত পাঠান। টিপুর কার্যকলাপে তৎকালীন ভারতের ইংরেজ গভর্নর জেনারেল লর্ড ওয়েলেসলি অসন্তুষ্ট হয়ে তার প্রতি অধীনতামূলক মিত্রতা নীতি গ্রহণের আহ্বান জানালেন। কিন্তু টিপু সুলতান ঘৃণাভাবে তা প্রত্যাখ্যান করায় টিপুর সঙ্গে ইংরেজদের আবার যুদ্ধ বাঁধে, যা চতুর্থ ইঙ্গ মহীশুর যুদ্ধ নামে (১৭৯১ খ্রি)। এই যুদ্ধ শেষ পর্যন্ত টিপু সুলতান মৃত্যুবরণ করেন। ফলে মহীশুরের অধিকাংশ এলাকা ইংরেজদের দখলে চলে আসে।
Comments
Post a Comment
Haven't doubt please let me know.