পাড়াগাঁর দু প্রহর ভালোবাসি কবিতার প্রশ্ন উত্তর

    পাড়াগাঁর দু প্রহর ভালোবাসি 

            জীবনানন্দ দাশ 

A) নীচের প্রশ্নগুলোর একটি বাক্যে উত্তর দাও 


১) দু পহর শব্দের অর্থ কি ?

উঃ দুপুর বেলা 

২) "কেবল প্রান্তর জানে তাহা"- প্রান্তর কি জানে ?

উঃ কবির মনে কোন কাহিনী, কি স্বপ্ন ঘর বেঁধেছে তাহা কেবল প্রান্তর জানে। 

৩) তাহাদের কাছে যেন এ জনমে নয়- যেন ঢের যুগ ধরে কথা শিখিয়েছে এ হৃদয় কাদের কথা এখানে বলা হয়েছে ? 

উঃ জীবনানন্দ দাশ রচিত "পাড়াগাঁর দু প্রহর ভালোবাসি" কবিতায় তাহাদের কাছে বলতে প্রান্তর আর প্রান্তরের শঙ্খচিলের কথা বলা হয়েছে। 

৪) জলসিড়িটির পাশে ঘাসে - কি দেখা যায় ? 

উঃ জলসিঁড়ির পাশে থাকা বহুদিন ছন্দহীন বুনো চালতা গাছের ডালগুলি জলে তাদের ছায়া পড়েছে। আর নকশা পেড়ে শাড়িখানা মেয়েটির রৌদ্রের ভিতরে হলুদ পাতার মতো সরে সরে যায় তা কবি লক্ষ্য করেছেন। 

৫) জলে তার মুখখানা দেখা যায় - জলে কার মুখ দেখা যায় ?

উঃ বহুদিন ছন্দহীন বুনো চালতার মুখখানা দেখা যায় ।

৬) ডিঙিও ভাসিছে কার জলে - ডিঙিটি কেমন ?

উঃ ঝাঁঝড়া ফোঁপরা 

৭) ডিঙিটি কোথায় বাঁধা রয়েছে ?

উঃ হিজল গাছে 

৮) পাড়াগাঁয়ের দ্বিপ্রহরকে কবি ভালোবাসেন কেন ?

উঃ প্রকৃতি প্রেমিক কবি জীবনানন্দ দাশ রচিত পাড়াগাঁর দু-পহর ভালোবাসি কবিতায় গ্রাম বাংলার দুপুর বেলার প্রতি কবির ভালবাসা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। 

               কবি পাড়াগাঁর দুপুরের রোদে বেদনাময় এক স্বপ্নের আস্বাদ পেয়েছেন। গ্রামের চির পরিচিত মাঠ আর শঙ্খচিল যেন তার মনে বাসা বাঁধা গল্প কাহিনীর সন্ধান রাখে। কবির মন যেন এদেরই কাছে ঢের যুগ ধরে হৃদয়ের ভাষা শিখেছে। কবি মুগ্ধতার সঙ্গে গ্রাম বাংলার অতি তুচ্ছ শুকনো পাতা, শালিকের স্বর, ভাঙ্গা মঠ, গ্রাম্য মেয়ের নকশা পেড়ে শাড়ি পড়ে চলে যাওয়া প্রভৃতির লক্ষ্য করেছেন। মালিকহীন ভাঙাচোরা ডিঙিটি জলে ভাসতে থাকে। দুপুরবেলার সেই শান্ত স্নিগ্ধ, অপরূপ বিষণ্নতা কবিকে আকৃষ্ট করে। তাই কবি র পাড়াগাঁয়ের দ্বিপ্রহরকে ভালোবাসেন। 

২) "স্বপ্নে যে বেদনা আছে"- কবির স্বপ্নে কেন বেদনার অনুভূতি ? 

উঃ জীবনের ফেলে আসা দিনগুলির স্মৃতি কবির মনকে বিষণ্ণ করেছে। পাড়াগাঁয়ের দুপুরগুলি হারিয়ে যাওয়ায় সেগুলির স্মৃতি বেদনাময় স্বপ্নে পরিণত হয়েছে। সেই সব দুপুরের নানা গল্প কবির হৃদয়ে জমে আছে। পাড়াগাঁয়ের সেই মাঠ আর মাঠের শঙ্খচিল কবির স্মৃতি সঙ্গে মিশে আছে। শুকনো পাতা ঝরে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে মিলিয়ে গেছে শালিকের স্বর, দুপুরের রোদে নকশাপেড়ে শাড়ি পড়া মেয়েটি হলুদ পাতার মতো হারিয়ে গেছে। পুরনো একটি ডিঙি নৌকা নদীর তীরে হিজল গাছে বাধা অবস্থায় পড়ে আছে, হয়তো সেই ডিঙির মালিক কোনদিনও ফিরবে না। দুপুরের সেই স্মৃতি কবির মনে যে মধুর স্মৃতির জন্ম দিয়েছেতাতা যেন বেদনাময় স্বপ্নের অনুভূতি নিয়ে ফিরে এসেছে। 

৩) "কেঁদে কেঁদে ভাসিতেছে আকাশের তলে"- কবির এমন মনে হওয়ার কারণ কি বলে তোমার মনে হয় ?

উঃ প্রকৃতি প্রেমিক কবি জীবনানন্দ দাশ রচিত "পাড়াগাঁর দুপহর ভালোবাসি"কবিতা থেকে আলোচ্য উক্তিটি নেওয়া হয়েছে। এখানে হিজল গাছে বাঁধা নদীর জলে ভেসে থাকা মালিকহীন ঝাঁঝরা ফোঁপড়া, নৌকোটির কথা বলা হয়েছে। তার মালিকের কোন সন্ধান পাওয়া যায় না কবি মনে করেন সেই মালিক হয়তো আর কোনদিন তাকে নিয়ে যেতে ফিরে আসবেন না। এই বিষয়টি কবির মনে অসীম করুণার উদ্রেক ঘটায়। জরাজীর্ণ নৌকাটির এমন অবহেলায় অপেক্ষায় ও অনাদরে পড়ে থাকার কারণেই কবির মনে হয় সে যেন কেঁদে কেঁদে ভাসিতেছে আকাশের তলে। 

৪) প্রকৃতির কেমন ছবি কবিতাটিতে ফুটে উঠেছে তা আলোচনা কর।

উঃ প্রকৃতি প্রেমিক কবি জীবনানন্দ দাশ তার রূপসী বাংলা কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত কারাগার দুপহর ভালোবাসি কবিতায় পাড়া গায়ের এক শান্ত দুপুরের চিত্র অঙ্কন করেছেন। সেই রৌদ্রজ্জ্বল দুপুরের নির্জনতা কবি মনে যে বিষণ্ণতার সৃষ্টি করে তার আভাস আলোচ্য কবিতায় পাওয়া যায়। 

             গ্রামের নির্জন, শান্ত দুপুরটিকে কবি ভালোবাসেন। সেই দুপুরের রোদে তিনি যেন তার স্বপ্নের গন্ধ খুঁজে পান তার মনে যে গল্প কাহিনী স্বপ্ন ঘর বেধেছে তাকে বল পল্লী গ্রামের প্রান্তর আর সেই প্রান্তরের শঙ্খচিল জানে। 



Comments

Popular posts from this blog

কর্ভাস (Carvas)প্রফেসর শঙ্কুর ডায়রি

বায়ুমণ্ডলের উষ্ণতা তারতম্যের কারণগুলি আলোচনা কর।

আদর্শ ফুলের গঠন চিত্র ( দশম শ্রেণী)