ক্রন্দনরতা জননীর পাশে

       ক্রন্দনরতা জননীর পাশে 

              মৃদুল দাশগুপ্ত 

                                           প্রতিটি প্রশ্নের মান - ১

১) মৃদুল দাশগুপ্তের একটি কাব্যগ্রন্থের নাম লেখ।

উঃ ধান ক্ষেত থেকে, এভাবে কাঁদে না।

২) যে মেয়ে নিখোঁজ, ছিন্নভিন্ন- নিখোঁজ মেয়েকে কোথায় খুঁজে পান ?

উঃ জঙ্গলে

৩) সে-ই কবিতায় জাগে -সে বলতে কাকে বোঝানো হয়েছে ?

উঃ কবির বিবেক 

৪) নাই যদি হয় ক্রোধ - কবির মতে কেন ক্রোধের জাগরণ ঘটা উচিত ?

উঃ নিহত ভাইয়ের শবদেহ দেখে

৫) কিসের মূল্যবোধ - একথা বলার কারণ কি ?

উঃ অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো 

৬) ক্রন্দনদাতা জননীর পাশে কবি দাঁড়াতে চান কেন ?

উঃ তার কাব্যসাধনা সার্থক হবে না।

৭) কবি বিবেককে কার সঙ্গে তুলনা করেছেন ?

উঃ বিস্মরণের আগের বারুদের সঙ্গে 

৮) আমি তা পারি না - কি পারেন না ?

উঃ ক) ক্রন্দনরতা জননীর পাশ থেকে কবি সরে থাকতে পারেন না। খ) নিহত ভাইয়ের শবদেহ দেখে চুপ থাকতে পারেন না।গ) ভগিনী তুলল নিখোঁজ মেয়ের ছিন্ন ভিন্ন শরীর দেখে বিচারের জন্য দৈবশক্তির উপর নির্ভর করতে পারেন না।

৯) "সেই কবিতায়"- জাগে সে বলতে কাকে বোঝানো হয়েছে  ?

উঃ সে বলবে প্রতিবাদ ও প্রতিকারের হাতিয়ারকে বোঝানো হয়েছে। 

১০) বিস্ফোরণের আগের বারুদ কিসের প্রতীক ?

উঃ বিস্ফোরণের আগের বারুদ কবি ও কবিতার মধ্যে সঞ্চারিত ক্রোধ, যা সোচ্চার প্রতিবাদে ফেটে পড়ার প্রতীক হিসাবে ব্যবহৃত হয়েছে।

১১) নাই যদি হয় ক্রোধ - তাহলে কি হবে ?

উঃ তাহলে কবির ভালোবাসা, সমাজ চেতনা ও মানসিক মূল্যবোধ ব্যর্থ হবে। 

১২) "ক্রন্দনরতা জননীর পাশে" কবিতাটি কোন কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে ?

উঃ ধানক্ষেত থেকে 

                                                      বড় প্রশ্ন ৫ নাম্বার 

১) ক্রন্দনরতা জননীর পাশে কবিতায় কবি জননীকে ক্রন্দনরতা বলেছেন কেন ? কবি এখানে নিজেকে কোন ভূমিকায় দেখতে চেয়েছেন ?

উঃ আধুনিক কবি মৃদুল দাশগুপ্ত রচিত"ক্রন্দনরতা জননীর পাশে"কবিতার বিপন্ন দেশমাতার বর্ণনা দিয়েছেন। সিঙ্গুরের জমি আন্দোলনের পটভূমিতে দেশের অস্থির ময় পরিস্থিতি দেখে তিনি দেশ মাতাকে ক্রন্দনদাতা বলেছেন।

                শিল্পের জন্য চাষীদের হাত থেকে কৃতি জমি কেড়ে নেওয়া, উর্বর জমি কে এক ফসলি জমি বা অনাবাদি জমি হিসাবে চিহ্নিত করা-এসব ঘটনা কবিকে ক্ষুব্ধ ও ব্যথিত করে তুলেছে। আর এইসব রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে রক্তাক্ত ও লাঞ্ছিত হতে হয় সাধারণ মানুষকে। নিখোঁজ মেয়ের ছিন্নভিন্ন দেহ জঙ্গলে দেখে তার মনে হয় ঈশ্বরের কাছে প্রত্যাশা কে নিবেদন করার চেয়ে অনেক বেশি প্রয়োজন সম্মিলিত প্রতিবাদ। আর সেই জন্যই তিনি তার কবিতায় নিজের বিবেককে বারুদের মত জাগিয়ে বিস্ফোরণ ঘটানোর প্রত্যাশা খুঁজেছেন । ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, কবিতাটি মূলত একটি প্রতিবাদী মূলক কবিতা। কিন্তু এর পটভূমিকায় আছে স্বদেশ। সেই স্বদেশ মৃত্যু আর রক্তে লাঞ্ছিত এবং নিপীড়নের কান্নায় ভেজা। তাই স্বদেশের এই ভয়াবহ অবস্থার জন্যই কবি দেশমাতা অর্থাৎ জননীকে ক্রন্দনরতা বলেছেন।

                   আলোচ্য কবিতায় কবি অত্যাচারিত মানুষের সঙ্গে সহমর্মী হয়ে থাকতে চান। আর সেই জন্যই তিনি নিহত শহীদদের ভাই মনে করে তাদের মৃত্যুতে নিজের মনে ক্রোধের সঞ্চার করেছেন। তাই তিনি নিখোঁজ ছিন্নভিন্ন মেয়ের শরীর দেখে ঈশ্বরের ওপর ভরসা না করে নিজের বিবেককে জাগ্রত করেছেন বিস্ফোরণ ঘটানোর প্রত্যাশা নিয়ে।

২) "আমি তা পারি না"-কবি কি না পারার কথা বলেছেন ? কেন তিনি এ কথা বলেছেন ?

উঃ কবি মৃদুল দাশগুপ্ত "ক্রন্দনরতা জননীর পাশে" কবিতায় জননের অসহায়তার এক করুণ চিত্র বর্ণনা করেছেন। সন্তান তুল্য কবি সেই নিপীড়িতা জননীর পাশে না থেকে পারেন না। নিখোঁজ মেয়ের ছিন্নভিন্ন শরীর দেখে তিনি ঈশ্বরের ওপর বিচারের জন্য অপেক্ষায় থাকতে পারেন না। সেই অক্ষমতার কথাই আলোচ্য অংশে বলা হয়েছে। 
              মানুষ বিপদে পড়লে ঈশ্বরের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। এতে যেমন একদিকে ঈশ্বর নির্ভরতা প্রকাশ পায়, তেমনি অন্যদিকে আত্মশক্তির অভাব ও অসহায়তা প্রকাশিত হয়। কিন্তু মানুষের অধিকার বিপন্ন হলে, বেঁচে থাকার জন্য সুস্থ পরিবেশ বিঘ্ন হলে - তখন ঈশ্বরের কাছে ন্যায় বিচার চাওয়া মূর্খামী ছাড়া আর কিছুই নয়। বিধির হাতে নিজেকে সঁপে দেওয়ার অর্থ শোষকদের সুযোগ করে দেওয়া। নারী নির্যাতন, নারী নিধনের মতো জঘন্য অপরাধের শাস্তি হওয়া উচিত। বিধাতা পুরুষের বিচারের প্রত্যাশায় আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকা হলো দুর্বলদের  দৈবনির্ভরতার পরিচয়। তাই কবি এভাবে হাত পা গুটিয়ে থাকতে পারবেন না। তাই তিনি আলোচ্য প্রশ্নোদ্ধৃত উক্তিটি করেছেন।





,

Comments

Popular posts from this blog

কর্ভাস (Carvas)প্রফেসর শঙ্কুর ডায়রি

বায়ুমণ্ডলের উষ্ণতা তারতম্যের কারণগুলি আলোচনা কর।

আদর্শ ফুলের গঠন চিত্র ( দশম শ্রেণী)