ক্রিমিয়ার যুদ্ধের সম্পর্কে আলোচনা কর
# ক্রিমিয়ার যুদ্ধের কারণ ও ফলাফল আলোচনা কর।
ভূমিকাঃ ১৮৫৪ খ্রীঃ ক্রিমিয়ার যুদ্ধ ছিল ইউরোপের জলবিভাজিকা। প্রাচ্য সমস্যাগুলির মধ্যে সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো এই ক্রিমিয়া যুদ্ধ। খ্রিস্টানদের পূর্ণভূমি জেরুজালেমের গটর গির্জার চাবির অধিকার কে কেন্দ্র করে এই যুদ্ধের সূচনা হয়েছিল। এই যুদ্ধের কারণগুলি আলোচনা করা হলো।
প্রত্যক্ষ কারণঃ ক্যাপিচুলেশন চুক্তি অনুসারে ফরাসি সম্রাট তৃতীয় নেপোলিয়ন জেরুজালেম দখল করে এবং তুরস্ক তা মেনে নেয়। কিন্তু রাশিয়া তার দুধ মেন। মারফত পূর্ব চুক্তির সূত্র ধরে গির্জা ও ওই অঞ্চলের ৭ মিলিয়ন তুর্কি অধিবাসীদের ওপর আধিপত্য স্থাপনের দাবি জানালে তুরস্ক তা প্রত্যাখ্যান করে। এর ফলস্বরূপ ১৮৫৪ খ্রিস্টাব্দে ক্রিমিয়ার যুদ্ধের অনুষ্ঠানিক সূত্রপাত ঘটে।
রুশ সম্প্রসারণ রোধঃ শুধুমাত্র গোটোর চাবিই ক্রিমিয়ার যুদ্ধের মত আন্তর্জাতিক ঘটনার একমাত্র কারণ নয়। এই ধর্মীয় কারণের অন্তরালে আসলে যে কারণ ছিল তা হল, রাশিয়ার ক্ষমতা বৃদ্ধি ও অগ্রগতি রোধ করা। কৃষ্ণ সাগর দিয়ে ভূমধ্যসাগর অঞ্চলে রুশ প্রাধান্য স্থাপনের চেষ্টা বন্ধ করতে ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স সর্বপ্রকার চেষ্টা চালায়। ইংল্যান্ড তার বাণিজ্যিক স্বার্থে, ফ্রান্স তাদের ব্যর্থ মস্কো অভিযানের প্রতিশোধ নিতে এবং অস্ট্রেলিয়া তার বাণিজ্যিক স্বার্থে রুশ অগ্রগতির বিরোধিতা করে। এর ফলে ক্রিমিয়ার যুদ্ধ অনিবার্য হয়ে ওঠে।
প্যারিসের শান্তি চুক্তিঃ ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দে প্যারিসের শান্তি চুক্তির অন্যতম প্রধান শর্ত গুলি হল- ক) রাশিয়া মোলদাভিয়া, ওয়ালাচিয়া ও সার্বিয়াকে তুরস্কের হাতে তুলে দেয়। পরে তৃতীয় নেপোলিয়ন মোলদাভিয়া, ওয়ালাচিয়াকে নিয়ে রোমানিয়া রাজ্য গঠন করেন।
খ) ইউরোপীয় শক্তিবর্গ তুরস্ককে সকল প্রকার সাহায্যের আশ্বাস দেয় । গ) কৃষ্ণসাগর নিরপেক্ষ অঞ্চল হিসাবে চিহ্নিত হয়। ঘ) তুমি কবে আন্তর্জাতিক আইনের মধ্যে আনা হয় এবং ইউরোপীয় শক্তি সংঘের অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
ফলাফলঃ প্রিমিয়ার যুদ্ধের ফলাফল ছিল সুদূরপ্রসারী।
প্রত্যক্ষ ফলাফলঃ দীর্ঘ দু'বছর ধরে চলতে থাকা এই যুদ্ধে প্রায় 5 লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়। রাজনৈতিক অর্থনৈতিক দিক থেকে কিছুদিন অচল অবস্থা হয়ে পড়ে। তৃতীয় নেপোলিয়ন এই যুদ্ধে যোগদান করে আন্তর্জাতিক মর্যাদা লাভ করে। রাজনৈতিক অর্থনৈতিক সাংস্কৃতিক দিক থেকে তুরস্কের ভাগ্যোদয় ঘটে।
পরোক্ষ ফলাফলঃ ক্রিমিনাল যুদ্ধের পরোক্ষ ফল ছিল অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এই যুদ্ধের ফলে ক্রিমিয়ার মাটি থেকে নতুন ঐক্যবদ্ধ ইতালি ও জার্মানির জন্ম হয়। প্রাশিয়া কোন প্রত্যাশা ছাড়াই অনেক পরে যুদ্ধে যোগ দিয়ে সবচেয়ে বেশি লাভজনক হয়েছিল। এই যুদ্ধের ফলে মেয়েটারনিকের মৃদু প্রভাব পুরোপুরি মুছে গিয়ে ইউরোপ তথা বিশ্বে নতুন প্রগতির সূচনা হয়। ভঙ্গাসাগর অঞ্চলে ব্রিটেনের বাণিজ্যিক ও সাম্রাজ্যবাদী স্বার্থ অক্কন্ন থাকে। এই যুদ্ধের ফলেই বলকান জাতীয়তাবাদ এর সূচনা হয়।
Comments
Post a Comment
Haven't doubt please let me know.