Life science class9জীববিদ্যা ও মানব কল্যাণ

 জীববিদ্যা ও মানব কল্যাণ             

          অধ্যায় - ৪ 

biology and human welfare 

          chapter 4 

             class 9


১) অনাক্রম্যতা বা ইমিউনিটি কাকে বলে ?

উঃ রোগ সৃষ্টিকারী জীবাণু ভাইরাস ইত্যাদি বিজাতীয় পদার্থের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলা কে ইমিউনিটি বা অনাক্রম্যতা বলে।

২) অনাক্রম্য বিদ্যার জনক কে ?

উঃ এডওয়ার্ড জেনার 

৩) ইন্টারফেরন অনাক্রম্যতা বলতে কী বোঝো ?

উঃ যে অনাক্রম্যতায় ভাইরাস আক্রান্ত কোষ থেকে ইন্টারফেরন মিশ্রিত হয়ে ভাইরাসের বিভাজনকে রোধ করে তাকে ইন্টারফেরণ অনাক্রমতা বলে।

৪) আন্টিজেন কাকে বলে ? অ্যান্টিজেনের প্রকারভেদ গুলি লেখ।

উঃ যেসব বি জাতীয় জীবাণু দেহে প্রবেশ করলে আন্টি বডি সৃষ্টি হয় তাদের অ্যান্টিজেন বলে।

 যেমনঃ প্রোটিন, বৃহৎ আকার পলিস্যাকারাইড, বৃহদাকার নিউক্লিও প্রোটিন ইত্যাদি। 

            অ্যান্টিজেন দুরকমের হয়ে থাকে যথা এক্সোজেনাস এবং এন্ডোজেনাস।

 এক্সোজেনাস অ্যান্টিজেনঃ যেসব অ্যান্টিজেন প্রাণীদেহের বাইরে উৎপন্ন হয় তাকে এক্সোজেনাস এন্টিজেন বলে। 

যেমনঃ পরাগরেণু, দূষক পদার্থ, ভেষজ পদার্থ ইত্যাদি। 

এন্ডোজেনাস এন্টিজেন ঃ যেসব এন্টিজেন প্রাণীদেহের ভিতরে উৎপন্ন হয় তাদের এন্ডোজেনাস এন্টিজেন বলে।

 যেমনঃ রোহিত কণিকায় অবস্থিত কার্ডিওলিপিন এন্টিজেন।

 ৫) এন্টিবডি কাকে বলে? অ্যান্টিবডি কয় প্রকার কি কি?

উঃ দেহের মধ্যে বাইরে থেকে অ্যান্টিজেন প্রবেশ করলে তাদের বাধা দেওয়ার জন্য যেসব প্রোটিনের আবির্ভাব ঘটে তাদের অ্যান্টিবডি বলে। 

         দেহে পাঁচ রকমের অ্যান্টিবডি দেখা যায় এগুলি হল- IgG,IgA,IgM,IgD,IgE.

১) IgG - এই প্রকার অ্যান্টিবডি, রক্তেই বেশি থাকে তবে লসিকা ও অন্তরেও পাওয়া যায়। এরা ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস ধ্বংস করতে সক্ষম হয়।

২) IgA - এই প্রকার এন্টিবডি মনোমার ও ডাইমার হিসেবে থাকে স্তনগ্রন্থি ক্ষরিত কোলেস্টেরামে এই প্রকার এন্টিবডি পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকে।

৩) এরা সবচেয়ে বড় আকারের এন্টিবডি। রক্তে এরা পেনটামার হিসাবে থাকে। এরা লসিকা এবং B- লিম্ফোসাইটের উপরিতলে অবস্থান করে। 

৪) এই প্রকার এন্টিবডি রক্তে দুই শতাংশ থাকে রক্তে এর পরিমাণ নগণ্য এক পারসেন্ট। এরা মনোমার অবস্থায় মাস্ট কোচ ও দেশোফিল শ্বেত কণিকার পর্দায় অবস্থান করে।

৬) অ্যান্টিজেন ও অ্যান্টিবডির মধ্যে পার্থক্য লেখ।

উঃ ক) অ্যান্টিজেন হলো দেহে অনুপ্রবিষ্টকারী বহিরাগত বস্তু আর এন্টিবডি হলো অ্যান্টিজেনের উপস্থিতিতে উৎপন্ন এন্টিজেন প্রতিরোধী বস্তু। 

খ) এন্ডিজেন সাধারণত লোহিত কণিকার কোষ পর্দার উপরিতলে অবস্থান করে আর এন্টিবডি  সাধারণত প্লাজমা থাকে।

গ) এন্টিজেনের প্রভাবে অ্যান্টিবডির সৃষ্টি হয় কিন্তু এন্টিবডির প্রভাবে অ্যান্টিজেন সৃষ্টি হয় না।

ঘ) অ্যান্টিজেন অনাক্রমতন্ত্রকে উদ্দীপ্ত করে আর অ্যান্টিবডি দেহ প্রতিরক্ষায় অংশগ্রহণ করে।

৭) অ্যাগ্লুটিনোজেন কী ?

উঃ লোহিত রক্ত কণিকায় অবস্থিত অ্যান্টিজেনকে অ্যাগ্লুটিনোজেন বলে। 

৮) ভ্যাকসিন বা টিকা কি ?

উঃ কোন রোগ প্রতিরোধের উদ্দেশ্যে কোন রোগজীবাণু থেকে প্রস্তুত যে উপাদান মানুষের শরীরে প্রবেশ করলে ওই রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ জন্মায় তাকে ভ্যাকসিন বা টিকা বলে।

৯) টিকাকরণ বা ভ্যাকসিনেশন বলতে কী বোঝো?

উঃ অনাক্রম্যতা অর্জনের জন্য দেহের মধ্যে টিকা বা ভ্যাকসিন দেওয়ার পদ্ধতিকে টিকাকরণ বা ভ্যাকসিনেশন বলে। 

১০) বসন্ত রোগের টিকা কে আবিষ্কার করেন ?

উঃ ডাক্তার এডওয়ার্ড জেনার। 

১১) BCG এর পুরো কথা কি ?

উঃ ব্যাসিলাস কালটিমিটি গুরেইন। 

১২) টিকাকরণের গুরুত্ব গুলি লেখ।

উঃ টীকাকরণের ফলে দেহে অ্যান্টিবডির সৃষ্টি হয়। ফলে রোগ আক্রমণ প্রতিরোধ করে। টিকার মাধ্যমে ভ্যাকসিন দেহের মধ্যে প্রবিষ্ট হয় এবং ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার প্রজনন ক্ষমতাকে হ্রাস করে। টিকাকরণের মাধ্যমে দেহে কৃত্রিম অনাক্রমতা সৃষ্টি করা হয়। 

১৩) রোগ বা ডিজিস বলতে কী বোঝো? 

উঃ দেহের গঠনগত ও কার্যগত অস্বাভাবিকতা যা কিছু চিহ্ন বা লক্ষণ দ্বারা প্রকাশিত হয় তাকে রোগ বা ডিজিজ বলে। 

১৪) একটি প্রোটোজয়া ঘটিত রোগের নাম লেখ।

উঃ ডায়রিয়া। 

১৫) ম্যালেরিয়া রোগের বাহক কে ?

উঃ স্ত্রী এনোফিলিস মশা। 

১৬) ম্যালেরিয়া রোগের বাহক আদ্যপ্রাণীর নাম কি?

উঃ প্লাসমোডিয়াম ভাইভ্যাক্স। 

১৭) ব্যাকটেরিয়া ঘটিত দুটি রোগের নাম লেখ ।

উঃ ডিপথেরিয়া, নিউমোনিয়া। 

১৮) যক্ষারোগ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়ার নাম কি?

উঃ মাইকোব্যাকটেরিয়াম টিউবারকিউলোসিস। 

১৯) যক্ষারোগের জীবাণু কে আবিষ্কার করেন ?

উঃ রবার্ট কখ। 

২০) ডেঙ্গুজ্বর বহনকারী প্রাণীর নাম কি ?

উঃ এডিস মশা। 

২১) AIDS এর পুরো কথা কি ?

উঃ এক্যুইরেড ইমিউন ডেফিসিয়েন্সি সিনড্রোম। 

২২) HIV পুরোকথা কি ?

উঃ হিউম্যান ইমিউন ডেফিসিয়েন্সি ভাইরাস।

২৩) ধৌতকরণ বলতে কী বোঝো ?

উঃ যে উপায়ে ডিটারজেন্ট সাবান, পেস্ট, অ্যান্টিসেপটিক লোশনের সাহায্যে হাত -পা, মুখ, দেহ, পোষাক- পরিচ্ছদ পরিস্কার করে জীবাণুমুক্ত করা হয় তাকে ধৌত করণ বলে।

২৪) মানব কল্যাণে জীবাণুদের ভূমিকা উল্লেখ কর।

উঃ জীবাণু যে আমাদের কেবল ক্ষতি করে তাই নয়, অনেক জীবাণু আছে যারা নানা ভাবে আমাদের উপকার সাধন করে। তাই মানব কল্যাণে জীবাণুদের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য।

 ক) খাদ্য সামগ্রী উৎপাদনেঃ

             নানা রকম খাদ্য সামগ্রী উৎপাদনে দুধ, পনির, মাখন, ঘোল, ইডলি, কিমচি ইত্যাদি উৎপাদনের জন্য বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়াদের কাজে লাগানো হয়।

খ) মদ্যশিল্পেঃ

             বিভিন্ন ফলের রস, খেজুরের রস ইত্যাদি গেঁজিয়ে মদ উৎপাদন করা হয়। সেই রসকে গেঁজানো জন্য ক্লসট্রিডিয়াম, লিউকনস্টক, সারসিনা ইত্যাদি প্রজাতির জীবাণু ব্যবহার করা হয়।

গ) ওষুধ উৎপাদনেঃ

               নানা প্রকার এন্টিবায়োটিক ঔষধ উৎপাদনে স্ট্রেপটোমাইসিন, এরিথ্রোমাইসিন, অ্যাজিথ্রোমাইসিন, টেরামাইসিন ইত্যাদি নানা জীবাণুদের ব্যবহার করা হয়।



.

Comments

Popular posts from this blog

কর্ভাস (Carvas)প্রফেসর শঙ্কুর ডায়রি

বায়ুমণ্ডলের উষ্ণতা তারতম্যের কারণগুলি আলোচনা কর।

আদর্শ ফুলের গঠন চিত্র ( দশম শ্রেণী)