ওশিয়ানিয়া মহাদেশ প্রশ্ন ও উত্তর
ওশিয়ানিয়া
ওশিয়ানিয়া মহাদেশ
অষ্টম শ্রেণী
অষ্টম শ্রেণীর ভূগোল ওশিয়ানিয়া মহাদেশ থেকে প্রশ্ন ও উত্তর
১) পৃথিবীর দীর্ঘতম প্রবাল প্রাচীর এর নাম কি ?
উঃ গ্রেট বেরিয়ার রিফ
২) পৃথিবীর গভীরতম স্থানের নাম কি ?
উঃ মারিয়ানা খাত।
৩) আয়তনের বিচারে পৃথিবীর ক্ষুদ্রতম মহাদেশটির নাম কি ?
উঃ ওশিয়ানিয়া মহাদেশ।
৪) ওশিয়ানিয়া মহাদেশ কতগুলি দ্বীপ নিয়ে গড়ে উঠেছে?
উঃ প্রায় দশ হাজারেরও বেশি
৫) কোন পাখি উড়তে পারেনা কিন্তু উটের মত দৌড়ায়?
উঃ এমু
৬) কোন পাখির ডানা নেই ?
উঃ কিউই
৭) ইউক্যালিপ্টাস এর জন্ম কোন মহাদেশে ?
উঃ ওশিয়ানিয়া মহাদেশ
৮) ওশিয়ানিয়া মহাদেশের দীর্ঘতম নদীর নাম কি ?
উঃ অস্ট্রেলিয়ার মারে ডার্লিং নদী
৯) কোন পর্যটক সর্বপ্রথম পৃথিবীর পরিক্রম করেন ?
উঃ ফার্দনান্দ ম্যাগেলান
১০) প্লায়া কি ?
উঃ মরুভূমির মধ্যে মাঝে মাঝে লবণাক্ত জলের হ্রদকে প্লায়া বলে।
১১) নিউজিল্যান্ডের সর্বোচ্চ শৃঙ্গের নাম কি ?
উঃ মাউন্ট কুক
১২) ওশিয়ানিয়া মহাদেশের সর্বোচ্চ শৃঙ্গের নাম কি ?
উঃ মাউন্ট উইলহেলম
১৩) নিউজিল্যান্ডের বৃহত্তম হিমবাহের নাম কি ?
উঃ তাউপো
১৪) মারে ডার্লিং নদীর অববাহিকায় ছোট ছোট ঘাসের তৃণভূমি কি নামে পরিচিত ?
উঃ ডাউন্স
১৫) জাকোস কাকে বলে?
উঃ মারে ডার্লিং নদীর অববাহিকায় পশু খামারে যারা শ্রমিকের কাজ করে তাদের জ্যাকস বলে।
১৬) রুপোর শহর বলে কাকে ?
উঃ ব্রোকেনহিল
১৭) ওশিয়ানিয়া মহাদেশের কোথায় আর্টেজীয় কূপ দেখা যায়?
উঃ কার্পেন্টারিয়া নিম্নভূমি অঞ্চলে।
১৮) পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গের নাম কি ?
উঃ মাউন্ট এভারেস্ট
১৮) ওশিয়ানিয়া মহাদেশের কয়েকটি অন্তর্বাহিনী নদীর নাম লেখ।
উঃ হান্টার, কুপার, আয়ার, ব্রিসবেন ইত্যাদি।
১৯) নিউজিল্যান্ডের দীর্ঘতম নদীর নাম কি?
উঃ ওয়াইটাকি ক্লাথা।
নিজের প্রশ্নগুলো র উত্তর দাও।
১) ওশিয়ানিয়া মহাদেশের আঞ্চলিক বিভাগগুলি লেখ।
উঃ ওশিয়ানিয়া মহাদেশের মোট চারটি আঞ্চলিক বিভাগ আছে। যথা- অস্ট্রেলেশিয়া, মেলানেশিয়া, মাইক্রোনেশিয়া ও পলিনেশিয়া। এই আঞ্চলিক বিভাগগুলি যে সকল দেশ নিয়ে গঠিত সেগুলি হল-
ক) অস্ট্রেলেশিয়াঃ অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড
খ) মেলানেশিয়াঃ নিউগিনি, শলোমন, ফিজি প্রভৃতি ।
গ) মাইক্রোনেশিয়াঃ মার্শাল,গুয়াম, নাউরু প্রভৃতি ।
ঘ) পলিনেশিয়াঃ টোঙ্গা,কুক,হাওয়াই, সামোয়া ইত্যাদি।
২) আর্টেজীয় কূপ কাকে বলে ?
উঃ যে কূপ খনন করলে মাটির নিচের জল পাম্পের সাহায্য ছাড়াই বাইরে বেরিয়ে আসে সেই কূপকে আর্টেজীয় কূপ বলে।
ওশিয়ানিয়া মহাদেশের কার্পেন্টারিয়া নিম্নভূমি অঞ্চলে আর্টেজীয় কূপ লক্ষ্য করা যায়।
৩) টীকা লেখঃ- গ্রেট বেরিয়ার রিফ
উঃ গ্রেট বেরিয়ার রিফ হলো পৃথিবীর দীর্ঘতম প্রবল প্রাচীর। ইহা পূর্ব উপকূলের একটি আকর্ষণীয় বৈশিষ্ট্য। অস্ট্রেলিয়ার উত্তর-পূর্ব উপকূল থেকে ৮০ - ২০৫ কিলোমিটার দূরত্বে প্রবাল কীট জমে সমুদ্রের মধ্যে এক আশ্চর্য প্রাচীর সৃষ্টি করে। এই প্রবাল প্রাচীর উপকূলের সমান্তরালে ২০০০ কিলোমিটার প্রসারিত হয়েছে। জাহাজ চলাচলে বাধা সৃষ্টি করে বলে এই প্রাচীরের নাম গ্রেট বেরিয়ার রিফ।
৪) মারে ডার্লিং নদী অববাহিকা কৃষি ও পশুপালনে উন্নতি হওয়ার কারণগুলি লেখ।
উঃ মারে ডার্লিং অববাহিকা অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে কৃষি সমৃদ্ধ অঞ্চল। এই নদীর অববাহিকা কৃষি ও পশুপালনে উন্নতি হওয়ার কারণগুলি হল-
ক) উর্বর প্লাবনভূমিঃ
এই অঞ্চলে বিস্তীর্ণ উর্বর প্লাবনভূমি ও ডাউন্স তৃণভূমি এই অঞ্চলে কৃষি ও পশুপালন গড়ে উঠতে সাহায্য করেছে।
খ) জলবায়ুঃ
নাতিশীতোষ্ণ জলবায়ুর অন্তর্গত হওয়ায় এবং এখানে পরিমিত বৃষ্টিপাত হওয়ার ফলে কৃষি ও পশুপালন গড়ে উঠতে যথাযথ সাহায্য করেছে।
গ) জলের যোগানঃ
মারে ডার্লিং নদীর পর্যাপ্ত জলের যোগান থাকায় কৃষি ও পশুপালনে উপযোগী।
ঘ) জনসংখ্যাঃ
মারে ডার্লিং নদীর অববাহিকা জনসংখ্যা খুবই কম এই জনসংখ্যার অল্প চাপ থাকার কারণে এখানে খুব সহজেই কৃষি আর পশুপালন উন্নতিতে সাহায্য করেছে।
ঙ) জলসেচঃ
উন্নত জলসেচ আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতির প্রয়োগের ফলে এই অঞ্চল কৃষি ও পশুপালনে উন্নতি করেছে।
৫) ওশিয়ানিয়া মহাদেশের স্বাভাবিক উদ্ভিদের বর্ণনা দাও।
উঃ জলবায়ুর তারতম্যের কারণে ওসিয়া নেয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন বনভূমি পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়।
ক) ক্রান্তীয় চিরহরিৎ অরণ্যঃ
মেলানেশিয়া, মাইক্রোনেশিয়া আর পলিনেশিয়ার বিভিন্ন দ্বীপে উষ্ণতা ও আর্দ্রতা বেশি হওয়ার জন্য ঘন চিরহরিৎ বনভূমি সৃষ্টি হয়েছে। এখানে মেহগনি, পাম, এবনি প্রভৃতি চিরহরিৎ গাছ জন্মায়।
খ) ক্রান্তীয় পর্ণমোচী অরণ্যঃ অস্ট্রেলিয়ার উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে মৌসুমী জলবায়ুর প্রভাবে এখানে পর্ণমোচী বনভূমি সৃষ্টি হয়েছে। পাম,সিগার,বাঁশ প্রভৃতি।
গ) নাতিশীতোষ্ণ অরণ্যঃ
অস্ট্রেলিয়ার তাসমানিয়া আর নিউজিল্যান্ডে বৃহৎ পাতাযুক্ত নাতিশীতোষ্ণ বর্ণমোচী অরণ্য দেখা যায়। ওক, ম্যাপল, পপলার, এলোম এখানকার প্রধান প্রধান উদ্ভিদ।
ঘ) নাতিশীতোষ্ণ তৃণভূমিঃ
গ্রেট ডিভাইডিং রেঞ্জের পশ্চিম দিকে মারে ডার্লিং অববাহিকায় ছোট ছোট ঘাসের বিশাল তৃণভূমি দেখা যায়। এই তৃণভূমি ডাউনস নামে পরিচিত।
ঙ) ক্রান্তীয় তৃণভূমিঃ
অস্ট্রেলিয়ার উত্তরে কম বৃষ্টিপাত যুক্ত অঞ্চলে বড় বড় ঘাস জন্মায়। অস্ট্রেলিয়ার এই অঞ্চল পার্কল্যান্ড সাভানা নামে পরিচিত। এই তৃণভূমিতে ইউক্যালিপটাস, জুরা প্রভৃতি কাজ দেখা যায়।
৬) ওশিয়ানিয়া মহাদেশের জলবায়ু সম্পর্কে যা জানো লেখো।
উঃ ওশেনিয়ানিয়া মহাদেশের বিভিন্ন স্থানের জলবায়ু বিভিন্ন প্রকৃতির হয়ে থাকে। ছোট ছোট দ্বীপগুলির জলবায়ুতে সমুদ্রের প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। আবার অস্ট্রেলিয়ার মতো বড় স্থলভাগের ভেতরে জলবায়ু চরমভাবাপন্ন হয়। এই পার্থক্যের জন্য মহাদেশটিকে কয়েকটি জলবায়ু অঞ্চলে ভাগ করা যায়।
ক) নিরক্ষীয় জলবায়ুঃ
মেলানেশিয়া, পলিনেশিয়া, মাইক্রোনেশিয়ার দ্বীপপুঞ্জগুলোতে নিরক্ষীয় জরায়ু দেখা যায়। এখানে সারা বছর উচ্চ তাপমাত্রা প্রায় ২৮° সেন্টিগ্রেট এবং বৃষ্টিপাত ২০০ সেন্টিমিটারও বেশি হয়ে থাকে।
খ) ক্রান্তীয় মৌসুমী অঞ্চলঃ
অস্ট্রেলিয়ার উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে এই জলবায়ু দেখা যায়। এখানে শীতকাল শীতল ও শুষ্ক আর গ্রীষ্মকালে মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে বৃষ্টিপাত হয়। বাৎসরিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ 150 সেন্টিমিটার।
গ) নাতিশীতোষ্ণ জলবায়ুঃ
অস্ট্রেলিয়ার মারে ডার্লিং অববাহিকা ও পূর্ব উপকূলে ব্রিসবেনে এই জলবায়ু লক্ষ্য করা যায়।
ঘ) ভূমধ্যসাগরীয় জলবায়ুঃ
অস্ট্রেলিয়ার উপকূল বরাবর পারথ আর অ্যাডিলেড অঞ্চলে এই জলবায়ুর প্রভাব রয়েছে। এখানে পশ্চিমা বায়ুর প্রভাবে শীতকালে বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে। বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৭৫ সেন্টিমিটার। গ্রীষ্মকাল উষ্ণ প্রকৃতির হয়।
ঙ) ব্রিটিশ জলবায়ুঃ
দক্ষিণ-পূর্ব অস্ট্রেলিয়া, তাসমানিয়া, নিউজিল্যান্ডে এই জলবায়ু লক্ষ্য করা যায়। গ্রীষ্মকালে হালকা উষ্ণ থাকে 15 ডিগ্রী সেলসিয়াস আর শীতকালে বেশ শীত থাকে। তখন উষ্ণতা থাকে প্রায় পাঁচ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড। পশ্চিমা বায়ুর প্রভাবে এখানে সারা বছর প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ২০০ সেন্টিমিটার।
Comments
Post a Comment
Haven't doubt please let me know.