Education project class-12
আমাদের অঞ্চলের সর্বশিক্ষা অভিযানের কাজ
প্রথম পরিচ্ছেদ
সূচনাঃ আমাদের সংবিধানের ৪৫ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে যে, ১৯৫০ সালের ২৬ শে জানুয়ারি সংবিধান চালু হওয়ার ১০ বছরের মধ্যে অর্থাৎ ১৯৬০ সালের মধ্যে ৬ থেকে ১৪ বছর বয়সি শিশুদের বাধ্যতামূলক ও অবৈতনিক প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা করতে হবে। সংবিধানের এই নির্দেশ বাস্তবায়িত না হাওয়ায় ১৯৮৬ সালে জাতীয় শিক্ষা নীতিতে পুনরায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় যে, ৬ থেকে ১৪ বছর বয়সি সমস্ত শিশুদের অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষাকে সুনিশ্চিত করতে হবে। ১৪ বছর বয়স পর্যন্ত সব ছেলে-মেয়েদের শিক্ষার অধিকারকে সুনিশ্চিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়। এই অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় সরকার ২০০০ সালে সারা দেশ জুড়ে একটা কর্মসূচি চালু করার ব্যবস্থা নেয়, সেটি হল সর্বশিক্ষা অভিযান।
প্রকল্পের নামঃ পশ্চিমবঙ্গ উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষা বিভাগের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য হাতে নাতে কিছু কাজ করার অঙ্গ হিসাবে যেমন প্রকল্প নির্ধারণ করেছে তাদের মধ্যে একটি হলো ssm- 2000 অর্থাৎ সর্বশিক্ষা অভিযান। আমাদের পাঠ্যসূচিতে এর শিরোনাম হলো "তোমাদের অঞ্চলের সর্বশিক্ষা অভিযানের কাজ।"
প্রকল্পটির গুরুত্বঃ দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষা বিজ্ঞানের ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে এই প্রকল্পটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ শিক্ষার্থীরা এই প্রকল্পটি নিয়ে নিজেদের অঞ্চলের কাজ করলে তারা বুঝতে পারবে দেশের প্রারম্ভিক শিক্ষার অগ্রগতির জন্য সর্বশিক্ষা অভিযান ২০০০ কর্মসূচি কতখানি তাৎপর্যপূর্ণ। তারা নিজের অঞ্চলে সর্বশিক্ষা অভিযানের কাজ পর্যবেক্ষণ করলে আরও বুঝতে পারবে যে, এই অঞ্চলে সর্বশিক্ষা কর্মসূচিটির কাজ কোন পর্যায়ে রয়েছে বা তাকে সার্থকভাবে রূপায়িত করতে গেলে আর কি কি কাজ করা দরকার।
প্রকল্পের উদ্দেশ্যঃ প্রকল্পটির গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য গুলি হল-
ক) ৬ থেকে ১৪ বছর বয়সের সকল শিশুর অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা সুনিশ্চিত করা হয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা।
খ) নিজের অঞ্চলে সমস্ত শিশু বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে কিনা সে বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া।
গ) নিজের অঞ্চলের সমস্ত শিশুর ৫ বছরের প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ সুনিশ্চিত হয়েছে কিনা তা লক্ষ্য করা।
ঘ) বিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া শিশু নির্দিষ্ট শ্রেণী অতিক্রম না করে বিদ্যালয়ে ছেড়ে চলে যাচ্ছে কিনা সে বিষয়ে খোঁজ নেওয়া।
কর্মপরিকল্পনাঃ প্রকল্পটির বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে শ্রেণীতে একটি কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। ওই পরিকল্পনায় ঠিক হয় এই প্রকল্পে অংশগ্রহণকারী ছাত্র-ছাত্রীরা নিজেদের অঞ্চলে ঘুরে ঘুরে সরল শিক্ষা অভিযানের কাজের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করবে।
খ) কাজ শুরু করার পর থেকে এক মাসের মধ্যে তথ্য সংগ্রহের কাজটি শেষ করতে হবে এবং সংগৃহীত তথ্যগুলি শ্রেণীতে শিক্ষক মহাশয় /শিক্ষিকা মহাশয়ার উপস্থিতিতে আলোচনা করে প্রতিবেদন লেখা হবে।
গ) প্রথমে খসড়া প্রতিবেদনটি শিক্ষক মহাশয় /শিক্ষিকা মহাশয়ার কাছে সংশোধনের জন্য জমা দেওয়া হবে। পরে সংশোধিত খসড়া থেকে একটি যথাযথ প্রতিবেদন রচনা করে শিক্ষক /শিক্ষিকার স্বাক্ষর করিয়ে সঠিক সময়ে অন্তিম মূল্যায়নের জন্য জমা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ
তথ্য সংগ্রহঃ পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী আমরা আমাদের অঞ্চলের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এবং মাধ্যমিক বিদ্যালয় গুলিতে সমীক্ষার কাজ শুরু করি। সংগৃহীত তথ্যগুলির একটি নমুনা নিচে ছাড়ুন এর মাধ্যমে দেখানো হলো।
বিদ্যালয়ের নাম আদর্শ শিক্ষা নিকেতন
বিদ্যালয়ের প্রকৃতি প্রাথমিক
ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ২১৮ জন
শিক্ষক-শিক্ষিকার সংখ্যা ৩ জন
পরিকাঠামো খুব ভালো নয়
শিক্ষা কমিটি আছে /নেই আছে
গৃহীত অনুদানের পরিমাণ ৪০ হাজার
নতুন গৃহ নির্মাণ হয়েছে/ হয়নি হয়নি
নতুন শিক্ষক/ শিক্ষিকা নিয়োগ হয়নি
ভর্তি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে
পার্শ্ব শিক্ষক ১ জন
মিড ডে মিল চালু আছে /নেই চালু আছে
শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে ধরে রাখা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
তথ্য পর্যালোচনাঃ আমাদের অঞ্চলের সর্বশিক্ষা অভিযানের কাজ প্রকল্পটি প্রণয়নের জন্য আমাদের অঞ্চলের চারটি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে তথ্য সংগ্রহ করে সেগুলোকে পর্যালোচনা করে যে বিষয়গুলি জানতে পারি, তা নীচে উল্লেখ করা হলো -
ক) প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক উভয় ধরনের বিদ্যালয়ে উপযুক্ত সংখ্যক ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে।
খ) সর্বশিক্ষা অভিযানের কাজ বা কর্মসূচি গৃহীত হয়েছে।
গ) প্রতিটি বিদ্যালয় পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ পেয়েছে।
ঘ) অধিকাংশ বিদ্যালয় ৪০,০০০ টাকা থেকে শুরু করে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা অনুদান হিসাবে পেয়েছে।
ঙ) সরকারি উদ্যোগে প্রতিটি বিদ্যালয়েই মিড ডে মিল প্রকল্পের মাধ্যমে খাবার পরিবেশন ব্যবস্থা আছে।
সিদ্ধান্তঃ গৃহীত তথ্য পর্যালোচনার মাধ্যমে নিম্নলিখিত সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যায়-
ক) আমাদের অঞ্চলের প্রতিটি বিদ্যালয়েই সর্বশিক্ষা অভিযান কর্মসূচি যথাযথভাবে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
খ) বিদ্যালয়গুলিতে আগের তুলনায় বর্তমানে ছাত্র-ছাত্রীদের সংখ্যা অনেকখানি বৃদ্ধি পেয়েছে।
গ) বিদ্যালয়গুলিতে শৌচাগার ও পানীয় জলের জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
ঘ) ছাত্রদের সংখ্যা অনুযায়ী শিক্ষক শিক্ষিকার নিয়োগের ব্যবস্থা হয়েছে।
ঙ) নিয়মিত মধ্যাহ্নকালীন আহার দানের ব্যবস্থা থাকায় দরিদ্র পরিবারের ছেলে মেয়েরা বেশ উপকৃত হচ্ছে।
চ) অঞ্চলের প্রতিটি পরিবারেই তাদের শিশুদের পঠন পাঠানোর জন্য ৬ থেকে ১৪ বছর বয়সী ছেলে মেয়েদের নিয়মিত বিদ্যালয় পাঠাচ্ছেন ।
ছ) বিদ্যালয় ছুট হতে পারে এমন ছাত্র-ছাত্রীদের প্রতি বিশেষ নজর রাখার ব্যবস্থা হয়েছে। এইভাবে চললে আশা করা যায় শিক্ষার গুণগতমান অচিরেই বৃদ্ধি পাবে।
তৃতীয় পরিচ্ছদ
কাজের সীমাবদ্ধতাঃ প্রকল্পটি রূপায়ণের ক্ষেত্রে কোন অসুবিধা সম্মুখীন হতে হয়নি। প্রতিটি বিদ্যালয় শিক্ষক/ শিক্ষিকা উপযুক্ত তথ্য দিয়ে আমাদের সাহায্য করেছেন ।
তথ্যসূত্রঃ প্রকল্পটি প্রণয়নের ক্ষেত্রে যে সকল বই সাহায্য গ্রহণ করা হয়েছে তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল - ক) শিক্ষার প্রযুক্তিবিদ্যা ও মূল্যায়ন (ডঃ দেবাশীষ পাল) খ) উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বিজ্ঞান দ্বাদশ শ্রেণী (ডঃ কৌশিক চট্টোপাধ্যায়)গ) ছায়া শিক্ষা বিজ্ঞান (পাল ও সাহু ছায়া প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত)।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ প্রকল্পের কাজটি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সাহায্যের হাত বাড়িয়েছেন আমাদের বিদ্যালয়ের শিক্ষা বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক মাননীয় --------------। আমি তার কাছে বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ। বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষক/ শিক্ষিকার কাছে থেকেও সাহায্য পেয়েছি। তাদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
___________________ _________________
ছাত্র/ছাত্রী স্বাক্ষর শিক্ষক /শিক্ষিকা স্বাক্ষর
Comments
Post a Comment
Haven't doubt please let me know.